Page: 023

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ২৩
তৃতীয় তরঙ্গ।
বন্দনা।
জয় জয় হরিচাঁদ জয় কৃষ্ণদাস।
জয় শ্রীবৈষ্ণব দাস জয় গৌরী-দাস।।
জয় শ্রীস্বরূপদাস পঞ্চ সহোদর।
পতিতপাবন হেতু হৈলা অবতার।।
জয় জয় গুরুচাঁদ জয় হীরামন।
জয় শ্রীগোলকচন্দ্র জয় শ্রীলোচন।।
জয় জয় দশরথ জয় মৃত্যুঞ্জয়।
জয় জয় মহানন্দ প্রেমানন্দ ময়।।
জয় নাটু জয় ব্রজ জয় বিশ্বনাথ।
নিজ দাস করি মোরে কর আত্মসাৎ।।
যশোমন্ত ঠাকুরের বৈষ্ণব সেবা ও বৈষ্ণব দাসের পুনর্জ্জীবন।
পয়ার।
তস্য পরে জনমিল শ্রীবৈষ্ণব দাস ।
বৈষ্ণব দাসের পরে জন্মে গৌরীদাস ।।
সবার কনিষ্ঠ হ’ল শ্রীস্বরূপ দাস ।
জগৎ পবিত্র কৈল হইয়া প্রকাশ ।।
ত্রেতাযুগে প্রকাশ হইল চারি অংশে ।
এবে এসে প্রকাশ হইল পঞ্চ অংশে ।।
যশোমন্ত সদা দেন বৈষ্ণব ভোজন ।
একদিন শুন এক আশ্চর্য্য ঘটন ।।
একাদশী দিনে সব বৈষ্ণব আসিল ।
কৃষ্ণ প্রেমানন্দে হরি বাসর করিল ।।
নাম সংকীর্ত্তনে মত্ত বৈষ্ণবের দল ।
সঙ্গে সঙ্গে যশোমন্ত বলে হরিবোল ।।
বয়স বৈষ্ণব দাস চতুর্থ বৎসর ।
একাদশী দিনে গায় আছে কিছু জ্বর ।।
পারণা দিবসে হরি বাসর প্রভাতে ।
পুকুরের ঘাটে গেল হাটিতে হাটিতে ।।
পুকুরের জলে পড়ি মরিল বালক ।
এদিকে বৈষ্ণবগণ প্রেমেতে পুলক ।।
দেবী অন্নপূর্ণা দেখি কাঁদিয়া উঠিল ।
যশোমন্ত এসে মুখ চাপিয়া ধরিল ।।
কান্না শুনি বৈষ্ণবের সুখ ভঙ্গ হবে ।
না হ’বে বৈষ্ণব সেবা সব বৃথা যা’বে ।।
মরেছে বালক যদি এখানে থাকুক ।
অগ্রে সব বৈষ্ণবের পারণা হউক ।।
মরা পুত্র যশোমন্ত গৃহে রাখে সেরে ।
বৈষ্ণবের সঙ্গে গিয়া হরিনাম করে ।।
নাম সংকীর্ত্তনে মত্ত বৈষ্ণবের দল ।
সঙ্গে সঙ্গে যশোমন্ত বলে হরিবোল ।।
নাম সংকীর্ত্তন হ’ল পারনা হইল ।
সবে ভোগ দরশন করিতে আসিল ।।
মৃত পুত্র শিরে করি নাচিছে সুধীর ।
অন্নপূর্ণা দেবী তবে কাঁদিয়া অস্থির ।।
যশোমন্ত বলে তুমি কাঁদ কেন মিছে ।
বৈষ্ণব সেবার কালে বালক ম’রেছে ।।
ধন্য রত্নগর্ভা তুমি তোমার উদরে ।
এহেন বালক জন্মে আমাদের ঘরে ।।
আমার ঔরস ধন্য তাতে জানা গেল ।
বৈষ্ণব সেবার কালে বালক মরিল ।।
হেন ভাগ্য কার হয় জনম লইয়া ।
বৈষ্ণব সেবায় মোরে কীর্ত্তন শুনিয়া ।।
বৈষ্ণব হইয়া বরং বাঁচে পঞ্চদিন ।
বৃথা সহস্রেক কল্প হরিভক্তিহীন ।।
সকল বৈষ্ণব সেবা হইল স্বচ্ছন্দ ।
মৃত পুত্র তথা আনি বাড়িল আনন্দ ।।
মৃত পুত্র শিরে নাচে পুলক শরীর ।
বৈষ্ণবেরা বলে কি হইল বৈরাগীর ।।
এক সাধু বলে শুন যত সাধুগন ।
কি কহিব বৈরাগীর মরিল নন্দন ।।
সবে বলে এ বালক মরিল কখন ।
তিনি কন তোমাদের কীর্ত্তন যখন ।।
জলেতে পড়িয়া পুত্র মরেছে তখন ।
এই সে মড়া পুত্র মস্তকে ধারন ।।
ডাক দিয়া যশোমন্তে বৈরাগীরা কয় ।
মৃত ছেলে কি কারনে রাখিলে মাথায় ।।
বৈষ্ণবের কথা শুনি যশোমন্ত বলে ।
মরেছে বালক মম সাধু সেবা কালে ।।
সাধু সেবা হরি নাম শুনে শিশু মরে ।
পুত্র নয় সাধু বলে রাখিয়াছি শিরে ।।
মরেছে বালক তাতে নাহিক বিষাদ ।
মম ভয় বৈষ্ণবের সেবা হয় বাদ ।।