Page: 162

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৬২
অদ্য কিবা ঘটে, কি আছে ললাটে
যাইব না ফিরে চল।
প্রভু পুনরায়, রঙ্গ বাড়ী যায়
নাহি যেন বুদ্ধি বল।।
কুবের আসিল, পাগলে বলিল
ঠাকুর এলনা হেথা।
আমি অভাজন, করি কি এখন
উপায় কি যা’ব কোথা।।
কহিছে গোলোক, কেন হেন শোক
পিতা কি ছাড়িবে সুতে।
এল এল এল, না এল না এল
দয়া কি পারে ছাড়িতে।।
দ্রব্য আদি যত, করেছে প্রস্তুত
রাখিয়াছে ভারে ভারে।
মাথায় লইয়া, রঙ্গ বাড়ী নিয়া
খাওয়ে এস বাবারে।।
ভরি দুই হাঁড়ি, রঙ্গদের বাড়ী
কুবের যখনে যায়।
গললগ্নী বাসে, ভকতি উল্লাসে
গোলোক পুলকে ধায়।।
রঙ্গের ঘাটেতে, যায় যখনেতে
ঠাকুর আসিল ঘাটে।
গোলোক পাগলে, কুবের কহিলে
হরিচাঁদের নিকটে।।
শুনিয়া শ্রীহরি, কহিল শ্রীহরি
যুধিষ্ঠির রঙ্গে কয়।
কুবের সঙ্গেতে, আমি এখনেতে
চলিলাম নিজালয়।।
সেইত তরণী, পাইয়া অমনি
শ্রীহরি উঠিল নায়।
কুবের সঙ্গেতে, ব্যতিব্যস্ত চিতে
আসিলেন নিজালয়।।
এল যুধিষ্ঠির, চক্ষে বহে নীর
গোলোক আসিল তথা।
ভকত লইয়া, ঠাকুর বসিয়া
কহিছেন মিষ্ট কথা।।
হস্তে ধরি ধরি, নিয়া অন্তঃপুরী
কুবের তখনে দিল।
কে দিয়াছে এত, দ্রব্য অপ্রমিত
মাতা লক্ষ্মী জিজ্ঞাসিল।।
যত কহে বাণী, লক্ষ্মী ঠাকুরাণী
কুবেরকে লক্ষ্য করি।
কুবের কহিছে, জননীর কাছে
চক্ষে ঝরে অশ্রুবারী।।
দেবী লক্ষ্মীমাতা, শুনিয়া সে কথা
কহিছে রঙ্গের ঠাই।
তুমি কি করেছ, মনে কি ভেবেছ
গোলোক তোমার ভাই।।
ঠাকুর যখনে, গোলোক বদনে
করাঘাত করিলেন।
গোলোক কি দোষী, প্রভু কন রুষী
গোলোকেরে মারিলেন।।
করিয়া শ্রবণ, ঠাকুর তখন
যুধিষ্ঠির প্রতি কয়।
মোর এই ছল, এই কথা বল
কি হইবে ব্যবস্থায়।।
গোলোক তাহাতে, কুবের বাড়ীতে
রহে ঈশ্বর ভাবিয়া।
গোলোক সাহায্য, কি করেছে কার্য
আবার নিকট গিয়া।।
কুবের বাড়ীতে, গোলোক যাইতে
আমাকে করেছে মানা।
তোমার বাটীতে, আমাকে রাখিতে
গোলোকের সে বাসনা।।
অপূর্ব অপূর্ব, কুবেরের দ্রব্য
তোমার বাটীতে যায়।
আমি খা’ব তাই, শুনিবারে পাই
গোলোক পাঠায়ে দেয়।।
গোলোক তোমার, করে উপকার
তার কি করেছ তুমি।
ঠাকুর নিয়াছ, মনে কি ভেবেছ
ঠাকুর হ’য়েছি আমি।।
মেরেছি গোলোকে, তব বাড়ী থেকে
তুমি কেন কাঁদিলে না।
গোলোক কারণে, আমার সদনে
মাথা কেন কুটিলে না।।
ঈশ্বরের কাজ, জগতের মাঝ
জীবের শুধু পরীক্ষা।
লোকেরে দেখায়ে, কন্যাকে মারিয়ে
বউমাকে দেন শিক্ষা।।