Page: 103

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১০৩
তৃতীয় তরঙ্গ।
বন্দনা।
জয় জয় হরিচাঁদ জয় কৃষ্ণদাস।
জয় শ্রীবৈষ্ণব দাস জয় গৌরী-দাস।।
জয় শ্রীস্বরূপদাস পঞ্চ সহোদর।
পতিতপাবন হেতু হৈলা অবতার।।
জয় জয় গুরুচাঁদ জয় হীরামন।
জয় শ্রীগোলকচন্দ্র জয় শ্রীলোচন।।
জয় জয় দশরথ জয় মৃত্যুঞ্জয়।
জয় জয় মহানন্দ প্রেমানন্দ ময়।।
জয় নাটু জয় ব্রজ জয় বিশ্বনাথ।
নিজ দাস করি মোরে কর আত্মসাৎ।।
গোস্বামী দশরথোপাখ্যান।
পয়ার।
দশরথ নামে সাধু পদ্মবিলাবাসী।
তত্ত্বজ্ঞানী হরিনামে মত্ত অহর্নিশি।।
সত্যবাদী জিতেন্দ্রীয় পুরুষ রতন।
করে একাদশী ব্রত তুলসী সেবন।।
তিন সন্ধ্যা মালা জপ তুলসী ধারণ।
হরিনাম ছাপা অঙ্গে অতি সুশোভন।।
নিত্য নিত্য প্রাতঃকৃত স্নানাদি তর্পণ।
গুরু পূজা কৃষ্ণ পূজা নৈবিদ্য অর্পণ।।
পক্ষে পক্ষে একাদশী শ্রীহরি বাসর।
স্তব পাঠ নাম পাঠ নাহি অবসর।।
চৈতন্য চরিতামৃত পঠে ভাগবত।
সাধুসেবা মহোৎসব করে অবিরত।।
দিবাহারী এক সন্ধ্যা নাহি দ্বিভোজন।
আতপ তণ্ডুল অন্ন লাবড়া ব্যঞ্জন।।
তৈল মৎসত্যাগী ভক্ষে দিনে একবার।
রাত্রে কিছু ফলাহার কভু অনাহার।।
হেন মতে সদা করে বিশুদ্ধ ভজন।
হরিনাম সংকীর্তন সতত মগন।।
দৈবে ব্যধিযুক্ত হ’ল কার্ত্তিক মাসেতে।
জ্বর হ’য়ে ভুগিলেন কতদিন হ’তে।।
পালাজ্বর হ’ল তার দুইমাস পর।
একদিন হয় জ্বর এক দিনান্তর।।
মাঘমাস এই ভাবে গেল গোস্বামীর।
জ্বরের জ্বালায় আর নাহি পান স্থির।।
ফাল্গুন মাসেতে জ্বর বাড়িল অধিক।
চৈত্র মাস শেষে জ্বর হইল ত্রাহিক।।
আরক পাঁচন বটি কত খাইতেছে।
ক্রমশঃ জ্বরের বৃদ্ধি দুর্বল হ’তেছে।।
ভাল বৈদ্য চিকিৎসক কতই আসিল।
বাছিয়া বাছিয়া কত ঔষধ খাইল।।
তবু রোগ শান্তি নাই হইল কাতর।
শক্তি নাই যষ্ঠিমাত্র চলিতে দোষর।।
প্রচলিত হইয়াছে হরিবলা মত।
কতলোকে ওঢ়াকাঁদি করে যাতায়াত।।
ইহা শুনি দশরথ তবু নাহি যায়।
কি জানি কি ওঢ়াকাঁদি না হয় প্রত্যয়।।
যারা যায় তারা কয় হরি আবির্ভূত।
শ্রীকান্ত হয়েছে এবে যশোমন্ত সুত।।
গেলে মাত্র রোগ সারে করিলে প্রণতি।
কিংবা প্রভু আজ্ঞা দিলে হয় রোগ মুক্তি।।
মুখের কথায় মাত্র রোগের আরোগ্য।
বৈরাগ্য কেহবা পায় যদি থাকে ভাগ্য।।
শুনে দশরথ কয় বিশ্বাস না হয়।
কোন হরি ওঢ়াকাঁদি হইল উদয়।।
না দেখিলে চক্ষু কর্ণ বিবাদ না ঘুচে।
অবশ্য যাইব দেখিবার ইচ্ছা আছে।।
কি ভাব সে ওঢ়াকাঁদি ভক্ত কিংবা হরি।
হেরিব মহাপুরুষে যদি যেতে পারি।।
কল্য প্রাতেঃ দরশন করিব ঠাকুর।
অদ্য গিয়া নিশিতে থাকিব লক্ষ্মীপুর।।
বুদ্ধিমন্ত বুদ্ধিমন্ত ইহা আমি জানি।
হরিভক্ত জ্ঞানী চূড়ামণি চূড়ামণি।।
শুনিয়াছি তারা যায় ঠাকুরের বাড়ী।
তারা যদি বলে তবে মানিবারে পারি।।
আদি অন্ত বৃত্তান্ত শুনিব সেই স্থানে।
কেমন ঠাকুর তিনি তারা ইহা জানে।।