Page: 061

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ৬১

ভাব যেন দীন হীন পথের কাঙ্গাল।
ডাকিতেন কোথা কৃষ্ণ যশোদা দুলাল।।
হা কৃষ্ণ গোকুলচন্দ্র করুণানিধান।
ভক্তভাব প্রকাশিত নিজে ভগবান।।
কভু হরি, বলি হরি হইত বিস্মৃতি।
কখনও বদনে হ’ত সূর্য্যসম জ্যোতি।।
এইভাবে ওঢ়াকাঁদি লীলা প্রকাশয়।
ঐশ্বর্য্যের মধ্যে শুধু মাধুর্য্য লুকায়।।
গার্হস্থ্য প্রশস্ত ধর্ম্ম জীবে শিক্ষা দিতে।
দীননাথ হরি অবতীর্ণ অবনীতে।।
ভক্তগণ অনুক্ষণ নাহি ছাড়ে সঙ্গ।
ক্রমে ক্রমে বাড়িতেছে লীলার প্রসঙ্গ।।
কিছুদিন একবাড়ী সুখে করি বাস।
শ্রীবৈষ্ণবদাস আর শ্রীস্বরূপদাস।।
দুই ভাই পদ্মবিলা করিল বসতি।
তিন ভাই থাকিলেন ওঢ়াকাঁদি স্থিতি।।
ওঢ়াকাঁদি বাস না করিত বহুদিন।
একমাস মধ্যে মাত্র দুই এক দিন।।
আর সদা থাকিতেন ভক্তের আলয়।
যেখানে সেখানে থাকি হরিগুণ গায়।।
মুহুর্ত্তেক প্রভু যদি কোথা বসিতেন।
ব্যাধিযুক্ত রোগযুক্ত লোক আসিতেন।।
যারা হ’ত রোগমুক্ত মানসা করিয়া।
মানসিক মুদ্রা সব দিতেন আনিয়া।।
সেই মুদ্রা ভক্তগণ লইয়া সাদরে।
আনিয়া দিতেন লক্ষ্মীমাতার গোচরে।।
অল্পদিন রহে প্রভু নিজ ভদ্রাসনে।
অধিকাংশ রহে প্রভু ভক্তের ভবনে।।
অল্প সময় থাকে অন্য ভক্ত ঘরে।
সদা ব্যস্ত যাইতে সে রাউৎখামারে।।
হরিচাঁদ চরিত্র পবিত্র সুধাভাণ্ড।
কবি কহে শ্রবণেতে খণ্ডে যম দণ্ড।।


রোগের ব্যবস্থা।

পয়ার।

লোক আসে প্রভুস্থানে হ’য়ে রোগযুক্ত।
সংকীর্ত্তনে গড়ি দিলে রোগ হয় মুক্ত।।
রোগ জানাইয়া সবে বলিত কাতরে।
রোগমুক্ত হ’ত প্রভু দিলে আজ্ঞা করে।।
প্রভু বলিতেন যদি রোগমুক্তি চাও।
যে রোগের বৃদ্ধি যাতে তাই গিয়া খাও।।
তিন সন্ধ্যা ধুলি মাখ তুলসীর তলা।
জ্বর হ’লে পথ্য দেন তেঁতুলের গোলা।।
বেদনা অজীর্ণ বমি কিংবা অম্ল পিত্তে।
তেঁতুল গুলিয়া খায় পিত্তলের পাত্রে।।
মহারোগে অঙ্গে মাখে গোময় গোমূত্র।
কেহবা আরোগ্য হয় প্রভু আজ্ঞামাত্র।।
রোগ জানাইয়া যায় মানসা করিয়ে।
মানসিক টাকা দেয় রোগমুক্ত হ’য়ে।।
মানসা করিত লোকে যার যেই শক্তি।
একান্ত মনেতে যার যেইরূপ ভক্তি।।
মুদ্রাপানে প্রভু নাহি চাহিয়া ফিরিয়া।
উঠে যাইতেন প্রভু সে মুদ্রা ফেলিয়া।।
ভক্তে জিজ্ঞাসিত প্রভু কোথা রাখি ধন।
প্রভু বলে যার ধন তাহার সদন।।
ভক্তগণ এইসব ইঙ্গিত বুঝিয়া।
লক্ষ্মীর নিকট ধন দিতেন আনিয়া।।
পৌষেতে আমন ধান্য কাটিয়া কাটিয়া।
মোচন করিয়া ভক্ত দিত পাঠাইয়া।।
দধি দুগ্ধ ঘৃত নানাবিধ তরকারী।
পায়স পিষ্টক চিনি সন্দেশ মিছরী।।
কমলা কদলী কুল দাড়িম্ব সুন্দর।
আম জাম নারিকেল খাদ্য মনোহর।।
ভক্তগণে দ্রব্য আনে প্রভুর সেবায়।
লক্ষ্মীর নিকটে সব আনন্দে যোগায়।।
কালেতে যখন যে নূতন দ্রব্য পেত।
ভক্তগণে এনে তা ওঢ়াকাঁদি দিত।।
কেহ কেহ ল’য়ে যেত আপন বাসরে।
নিজগৃহে লইয়া প্রভুর সেবা করে।।
নূতন আমন ধান্য হইলে বিপুল।
আগ্ ধান্য রাখে কেহ আতপ তণ্ডুল।।
প্রভুভক্ত সুচরিত্র যেন শুধু মধু।
কবি কহে কর্ণ ভরি পিও সব সাধু।।


রাম কুমারের অঙ্গে কাল সর্পাঘাত।

পয়ার।

এইভাবে হইতেছে কালের হরণ।
একদিন শুন সবে দৈব নির্বন্ধন।।