Page: 203

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ২০৩

রসিক বলেন আমি বিচার করিব।
গৌরাঙ্গকে স্বয়ং বলিয়া মানাইব।।
সভা হ’ল নবদ্বীপ পণ্ডিতের দলে।
শাক্ত শৈব বৈষ্ণবেরা এল দলে দলে।।
শান্তিপুর উলাকাশী নদীয়া দ্রাবিড়।
যেখানে যেখানে ছিল পণ্ডিত সুধীর।।
সপ্তাহ পর্যন্ত সভা হয় প্রতি মাস।
এইরূপে বিচার হইল ছয় মাস।।
বনবাসী পরমহংস এসেছিল যারা।
সুবিচারে পরাজয় হইলেন তারা।।
ছয় মাস পরে সভা শেষ সুবিচার।
স্বয়ং বলিয়া তারা করিল স্বীকার।।
পরমহংসরা বলে কাল্‌কে আসিব।
গৌরাঙ্গে স্বয়ং বলে স্বীকার করিব।।
আর যত প্রতিপক্ষ স্বীকার করিল।
স্বীকার করিয়া তারা ভকত হইল।।
পরমহংসরা আর না আসিল ফিরে।
এ দিকেতে জয়ডঙ্কা বাজে জয়পুরে।।
বৈষ্ণবেরা সবে জয় জয় ধ্বনি করে।
জয় গৌর স্বয়ং গৌর বলে উচ্চৈঃস্বরে।।
সবে মিলে বলেন গৌরাঙ্গ জয় জয়।
জয় শ্রীগৌরাঙ্গ জয় রসিকের জয়।।
জয়পুরে রাজা করে জয় জয় ধ্বনি।
রামাগণে বামাস্বরে করে হুলুধ্বনি।।
জয়পুর জয় পূর্ণ জয় জয় জয়।
পুষ্প ফেলে মারে কেহ রসিকের গায়।।
বৈষ্ণবেরা রসিকের করিছে কল্যাণ।
রসিকের কণ্ঠে করে পুষ্পমাল্য দান।।
কোন কোন বৃদ্ধা নারী মনের পুলকে।
ধান্য দূর্বা দিতেছেন রসিক মস্তকে।।
রসিক বলেন মম সাধ্য কিছু নয়।
যার কার্য সেই করে তাঁর জয় জয়।।
সেই শ্রীগৌরাঙ্গ মোর এল ওঢ়াকাঁদি।
নমঃশূদ্র কুলে অবতার গুণনিধি।।
যশোমন্ত রূপে জীবে ভক্তি শিখাইল।
জয় হরিচাঁদ জয় সবে মিলে বল।।
গৌরাঙ্গ স্বয়ং বলি মীমাংসা হইল।
রসিকের সভাজয় তারক রচিল।।


নিঃস্বার্থ অর্থ দান

পয়ার

চাকুরী করিয়া ত্যাগ রসিক আসিল।
হরিচাঁদ চিন্তা করি গৃহেতে রহিল।।
তিলছড়া গ্রামে তাঁর সম্পত্তি যা ছিল।
মালেকের রাজকর বাকী পড়ে গেল।।
বিষয় বিক্রয় হয়, না রহে সম্পত্তি।
জমিদার সঙ্গে নাহি হইল নিষ্পত্তি।।
মালেকের টাকা বাকী সাড়ে সাত শত।
তার মধ্যে অভাব হইল দুই শত।।
সপ্তাহ মধ্যেতে অই টাকা হবে দিতে।
দুই শত টাকা না পারিল মিলাইতে।।
রসিক বিপদাপন্ন তুচ্ছ অর্থ দায়।
প্রভু হরিচাঁদ তাহা জানিল হৃদয়।।
গোলোকে বলেন প্রভু হ’য়ে অবসন্ন।
রসিক বিপদাপন্ন তুচ্ছ অর্থ জন্য।।
গুরুচরণকে বল একথা আমার।
টাকা দিয়া দায়মুক্ত করহ তাহার।।
পাগল বলিল বড় কর্তার নিকটে।
রসিকেরে টাকা দিয়া বাঁচাও সংকটে।।
গুরুচাঁদ চলিল দু’শত টাকা ল’য়ে।
গোলোক পাগল টাকা সঙ্গে নিল ব’য়ে।।
টাকা দিয়া এল সেই রসিকের ঠাই।
দেখিয়া আশ্চর্য কার্য বিস্মিত সবাই।।
রসিক বলেন মহাপ্রভু অন্তর্যামী।
তাঁর কৃপাবলে এ বিপদমুক্ত আমি।।
ক্ষণমাত্র করিলেন প্রেম আলাপন।
টাকা দিয়ে গৃহেতে আসিল দুইজন।।
এই টাকা নেয়া দেয়া অর্থ বোঝা ভার।
দিলেও না নিলেও না চাহিল না আর।।
গোলোক নাথের মন বুঝিল গোলোক।
শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত রচিল তারক।।


ভক্ত রামকুমার আখ্যান

পয়ার

সাধুহাটি যুধিষ্ঠির বিশ্বাস হ’ল মত্ত।
পরিবার-সহ হ’ল হরিচাঁদ ভক্ত।।
তাহার ভগিনী হয় আনন্দা নামিনী।
প্রভু বলে ভক্তা মধ্যে তারে আমি গণি।।