Page: 231

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ২৩১

ঋমণি নামিনী রামকুমারের ভগ্নী।
যম বুড়ি নাম গঙ্গাচর্ণা নিবাসিনী।।
ইত্যাদি অনেক ভক্ত কাঁদিতে লাগিল।
প্রভু বলে আমিত তোদের চিরকাল।।
“আমি নাহি ছেড়ে যাব জানিও বিশেষ।
গুরুচাঁদ দেহে এই করিনু প্রবেশ।।
গুরুচাঁদে ভকতি করিস মোর মত।
যাহা চা’বি তাহা পাবি মনোনীত যত।।”
এই সেই মহাপ্রভু পিতৃধর্ম রাখে।
মধুর মাধুর্য রস ঐশ্বর্যতে ঢেকে।।
জীবেরে ভুলায় প্রভু দেখায়ে ঐশ্বর্য।
প্রেমিক ভক্তের স্থানে গড়াল মাধুর্য।।
প্রধান গার্হস্থ ধর্ম গৃহস্থের কাজ।
পয়ার প্রবন্ধে কহে কবি রসরাজ।।


শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ মাহাত্ম্য।

পয়ার।

ঠেকিয়া রোগের দায়, যায় প্রভু স্থানে।
অমনি আরোগ্য হয় মুখের বচনে।।
ডুমরিয়া বাসী মহা ভারতের নারী।
প্রভু স্থানে গেল এক পুত্র কোলে করি।।
সেই বালকের প্লীহা যকৃত লীভার।
ছেলের বয়স প্রায় সপ্তম বৎসর।।
হাত পা গিয়াছে খেয়ে জাগিয়াছে হাড়।
ঘন ঘন শ্বাস বহে প্রাণ ধড়পড়।।
অদ্য কি কল্য মরিবে চলিতে অচল।
হাতপায় শোথ বয় করে টলমল।।
প্রভুর নিকটে গিয়া দিল ফেলাইয়া।
মৃত্তিকা উপরে তারে রাখে শোয়াইয়া।।
প্রভু বলে এ বালক আনিয়াছে কেটা।
মরিবেনা এ বালক উঠা উঠা উঠা।।
তিল চাউলের ছাতু পাকা রম্ভা দিয়া।
খাওয়াও পিতলের পাত্রেতে মাখিয়া।।
সরিষার তৈল তার সর্ব অঙ্গে মেখে।
নিশি ভোরে সপ্তা খাওয়াও এ বালকে।।
বালকের মাতা কহে ধরিয়া চরণ।
এই সপ্তদিন এর রবে কি জীবন।।
প্রভুর চরণ ধরি ফুলে ফুলে কাঁদে।
মরুক বাঁচুক প্রভু রেখ এরে পদে।।
প্রভু কহে এই রোগে যদি মারা যায়।
আমি তোর ছেলে হ’ব কপালে যা হয়।।
এই ছেলে সপ্তদিন মধ্যেতে সারিব।
এই পুত্র মরে যদি আমি ছেলে হ’ব।।
এত বলি দিল তার মাতা ল’য়ে গেল।
সপ্তাহ মধ্যেতে ছেলে আরোগ্য হইল।।
অমনি আরাম ছেলে রূপবান হল।
কোন দিনে কোন ব্যাধি নাহি যেন ছিল।।
যে রোগের বৃদ্ধি যাতে তাই বলে খেতে।
অমনি আরোগ্য ব্যাধি মুখের বাক্যেতে।।
একদিন গোঁসাই আমাকে সঙ্গে করি।
ভক্তের ভবনে যান বলে হরি হরি।।
যাত্রা করিলেন গ্রাম নারিকেল বাড়ী।
যাইতেছি মহানন্দ পাগলের বাড়ী।।
গোঁসাই নিকটে বসি চিন্তিত অন্তর।
অন্তরে ভাবনা যে বাঁধিব এক ঘর।।
কিরূপে বাঁধিব ঘর উঠা’ব কিরূপে।
ইহাই ভেবেছি বসে ঠাকুর সমীপে।।
প্রভু বড় দর্প করি কহে সে সময়।
কোথা বা বসিয়া আছ, গিয়াছ কোথায়।।
এই পদ্মবনে দেব কমলার স্থিতি।
পদ্মবনে সদা হরি করেন বসতি।।
শুনিয়াছ ভারতের প্রথম প্রস্তাব।
এই পদ্মবনে বাস করেন মাধব।।

শ্লোক।

তুলসীকাননং যত্র যত্র পদ্মবনানি চ।
পুরাণপঠনং যত্র তত্র সন্নিহিতো হরিঃ।।

পয়ার।

শাস্ত্র গ্রন্থ তাহা তুমি জান ভালমতে।
পদ্মবনে কিবা শোভা দেখ চক্ষেতে।।
পদ্মবনে আসিয়া কি জন্য ভক্তি ছাড়।
কোথায় বসিয়া কোন আগুনেতে পোড়।।
এই পদ্মবনে কেন না হও ভ্রমর।
গোবরের পোকা হয়ে তল্লাস গোবর।।
তাহা শুনি তারকের মন ফিরে গেল।
গুরুচাঁদ পাদপদ্ম হেরিতে লাগিল।।
মনের মালিন্য ঘুচে হইল নির্মল।
প্রেমে গদ গদ চিত্ত আঁখি ছল ছল।।
তারকের মনে তথা হ’ল এই ভাব।
এহেন মানুষ আর কোথা গিয়া পাব।।