Page: 025

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ২৫

এই ভিক্ষা চাই পিতা আমি যদি মরি ।
একবর্ষ প্রজা লয়ে বলি হরি হরি ।।
খেতে দিবা প্রজাগন না লইবা কর ।
এই ভিক্ষা চাই পিতা একটি বৎসর ।।
স্বীকার করিল রাজা সন্তোষ অন্তরে ।
প্রজাবর্গ লয়ে শিশু হরিনাম করে ।।
মরনের কাল তার হইল যখন ।
তাহাকে লইতে এল রবির নন্দন ।।
হরিভক্ত শিশু নিতে যম উপস্থিত ।
ভক্ত বৎসল হরি অন্তরে দুঃখিত ।।
হরি এসে বালকেরে করিলেন কোলে ।
মুখ দেখে কমলাখি ভাসে আঁখি জলে ।।
শমন বলেন হরি কা’রে কর কোলে ।
আয়ূ শেষ ফেলে দাও ল’য়ে যাই চলে ।।
হরি কন শেষে এ বালকে লয়ে যাও ।
অগ্রেতে তলব খাতা আমাকে দেখাও ।।
শমন তলব খাতা হরিকে দেখায় ।
দশবর্ষ আয়ূ দেখে কাঁদে দয়াময় ।।
কৃষ্ণের নয়ন জলে কজ্জল যে ছিল ।
নয়নের জলে তাহা গলিত হইল ।।
সেই ত্রিভঙ্গের ভঙ্গি কেবা তাহা জানে ।
কজ্জলাক্ত অশ্রু পড়ে আয়ূর দক্ষিনে ।।
হরি কন শতবর্ষ পরমায়ূ দেখি ।
যম বলে তবে চিত্রগুপ্ত বলিল কি ।।
চিত্রগুপ্ত হাঁতে নিয়া দেখে সেই খাতা ।
ক্রোধেতে কম্পিত গুপ্ত ঝাকি দিল মাথা ।।
চিত্রগুপ্ত কর্ণেতে লেখার তুলী ছিল ।
আয়ূর দক্ষিনে মসি দুইবিন্দু প’ল ।।
দুইশূন্য শতাঙ্কের দক্ষিনে পতন ।
অযুত বৎসর আয়ু পাইল নন্দন ।।
হরিলীলামৃত কথা অমৃত সমান ।
তারক কহিছে সাধু সুখে কর পান ।।


জয়পুর রাজ কুমারের পুনর্জ্জীবন।

পয়ার।

এইরূপ জয়পুর মান সিংহরায় ।
তাহার হইল সুত সুতিকালয় ।।
এরূপে দাসীকে ধাতা দিল দরশন ।
বালকের জানিলেন আয়ু বিবরন ।।
পরমায়ূ ছিল তার উনিশ বৎসর ।
মাঝে মাঝে কাঁদে দাসী হইয়া কাতর ।
অষ্ঠাদশবর্ষ আয়ু হইল যখন ।
পাঠশালা হতে গৃহে আসিল নন্দন ।।
বালকে করিয়া কোলে দাসী যবে কাঁদে ।
রাজপুত্র সুধায়েছে ধরি তার পদে ।।
দাসী বলে মম মনে অনেক সন্তাপ ।
তোমার কল্যান হেতু কাঁদি ওরে বাপ ।।
বলিতে না পারে দাসী মুখে না জুয়ায় ।
রাজপুত্র কাতরে দাসীরে ধরে পায় ।।
আমার শপথ লাগে করি প্রণিপাত ।
সত্য করি কহ মম শিরে দিয়া হাত ।।
ধাত্রী বলে কি বলিব শুন বাছাধন ।
উনিশ বৎসরে হবে তোমার মরন ।।
আঠার বৎসর গত একটি বৎসর।
বাকি মাত্র আছে বাছা পরমায়ূ তোর ।।
শুনিয়া বালক বলে শুন ধাত্রী মাই ।
বিশ্বেশ্বর দরশনে তবে আমি যাই ।।
মার্কণ্ডের পরমায়ূ বার বৎসর ছিল ।
শঙ্কর কৃপাতে আয়ু সপ্তকল্প হ’ল ।।
তার পিতা তাহারে দিলেন বনবাস ।
হরি হরি বলিয়া কাটিল কর্ম ফাঁস ।।
প্রস্তাব রয়েছে তার মার্কণ্ডপূরানে ।
হরি বলে মার্কণ্ড কাঁদিল বনে বনে ।।
মার্কণ্ড নারদ সঙ্গে গেলেন কৈলাসে ।
হেন কালে শমন তাহারে নিতে আসে ।।
চর্ম্ম রসি কসে তার গলে বেঁধে দিল ।
শিবলিঙ্গ বাম হাঁতে জড়ায়ে ধরিল ।।
শিব এসে মহা রোষে ভক্ত নিল কোলে ।
যম বক্ষ পরে তীক্ষ্ণ শূল নিক্ষেপিল ।।
দুর্গতি নাশিনী দুর্গা শিশু নিল কোলে ।
মাতৃ কোলে মার্কণ্ড শ্রী হরি হরি বলে ।।
সদয় হইয়া বর দিল দিগম্বর ।
বলে এর পরমায়ু সপ্ত মন্বন্তর ।।
শিব যদি বর দিল যম গেল ফিরে ।
সপ্তকল্প পরমায়ু সপ্ত মন্বন্তর ।।
তব সম দয়ানিধি ভবে কেবা আছে ।
শঙ্কর দয়ালু আর দয়ালু শ্রীহরি ।।
শ্রীহরি বলিয়া মাগো করিব শ্রীহরি ।।