Page: 198

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৯৮

সেই গ্রামে ভোজ দিতে কৈল আয়োজন।
ভোজ দিতে তণ্ডুল লাগিবেক দুই মণ।।
আর এক মণ লাগে সিধা পত্র দিতে।
চারি মণ দধি লাগে ভোজ ভোজনেতে।।
নিয়াছিল তারক তণ্ডুল চারি মণ।
এক মণ দধি তার আছে অর্ধ মণ।।
তিন মণ চাউল পাকের জন্য দিল।
দুই মণ পাক হ’ল এক মণ র’ল।।
অন্ন দেখি গ্রামবাসী সব লোকে কয়।
এই অন্নে হইবেক হেন মনে হয়।।
দুগ্ধ ক্রয় ক’রেছে পায়স রাঁধিবারে।
পায়স হইল পাক পাকশালা ঘরে।।
গ্রামবাসী এসে লোক বসাইয়া দিল।
দুই প্রাঙ্গণেতে লোক ভোজনে বসিল।।
ডাইল লাবড়া ভাজা ব্যঞ্জন অম্বল।
আহারান্তে সবে বলে উত্তম সকল।।
হয় নাই কভু কোথা এমন ভোজন।
পায়সান্ন দিতে জন্যে করে আয়োজন।।
হেনকালে একজন গোয়ালা আসিল।
দুই মণ দধি কাঁধে ল’য়ে দাঁড়াইল।।
সে বলে আমার এই দধি টুকু লও।
দয়া করি এই দধি খরচে লাগাও।।
এ দধির বায়না ব্রাহ্মণ বাড়ী ছিল।
উদ্বৃত্ত হয়েছে দধি ফেরত করিল।।
অমনি তারক বলে দেও দেও দেও।
সত্বর স্বজাতিগণে এ দধি খাওয়াও।।
সঙ্গে দধি বাটী হ’তে আনা অর্ধ মণ।
সে গ্রামে খরচ গেল দধি দুই মণ।।
দধি ভোজ শেষ হ’লে পায়স ভোজন।
সবে বলে হেন ভাল না খাই কখন।।
বিবাহের পরে জয়পুর আসা হ’ল।
সঙ্গেতে ফেরত দধি অর্ধ মণ ছিল।।
চাউল দু’মণ ফিরে আর জলপান।
তার অর্ধ দধি বাল্য ভোজনে লাগান।।
পাক পরশয়ের জন্য দধি নাহি হ’বে।
দুগ্ধ কিনিলেন ভোজে পরমান্ন দিবে।।
আর আর দ্রব্য সহ হ’য়েছে রন্ধন।
সব লোক বসিলেন করিতে ভোজন।।
খাইলে ভাজা ব্যঞ্জনাদি মৎস্য ঝোল।
ভোজনের শেষে সবে খাইল অম্বল।।
হেনকালে এক জন গোয়ালা আসিল।
এক মণ দধি ল’য়ে উপনীত হ’ল।।
গোপ বলে কুণ্ডু বাড়ী ছিল দধি বায়না।
সব দধি নিল তারা এক মণ নেয় না।।
এই দধি খেতে দিব আমার গরজ।
যাহা ইচ্ছা মূল্য দিও হউক খরচ।।
তারক বলিল এই ঠাকুরের কাম।
আন দধি দিব আমি দুই টাকা দাম।।
পূর্বে এক মণ আর এই এক মণ।
চারি টাকা মূল্য এনে দিলেন তখন।।
ছাতরায় বাসা ছিল রায়চাঁদ ঘোষ।
চারি টাকা মূল্য পেয়ে হইল সন্তোষ।।
ভাঙ্গুড়ার গোয়ালের দুই মণ দই।
চারি টাকা পাইয়া সন্তুষ্ট হ’ল সেই।।
শ্রীহরি-চরিত্র সুধা ভকত আখ্যান।
রচিল তারকচন্দ্র হরি-রস-গান।।


সূর্যনারায়ণের সর্পাঘাত

পয়ার

এবে শুন স্বামী হীরামন গুণ কথা।
লেখা আছে ডুমুরিয়া পূর্বের বারতা।।
স্বামী হীরামন যবে ডুমুরিয়া গেল।
সূর্য নারায়ণ যে তামাক সেজে দিল।।
কলিকা ঢালিয়া পরে মৃত্তিকা উপরে।
বলে এই তামাক রাখ যতন করে।।
তামাক যতন করে গৃহেতে রাখিস।
সাপে কামড়ালে, খেলে সেরে যাবে বিষ।।
সেই যে তামাকটুকু যতন করিয়া।
ঝাঁপিয়া ভিতরে রাখে পুটলী বাঁধিয়া।।
সাতাশে তারিখ চৈত্র মাস বুধবার।
বেদগ্রামে যাইবেন গান গাইবার।।
বাটী গিয়া বলে মোরে শীঘ্র দেও খেতে।
গান গাইবারে হ’বে বেদগ্রামে যেতে।।
ইহা বলি ব্যস্ত হ’য়ে হইল উতলা।
জাগ দেওয়া তিল ছিল ভেঙ্গে দিল পালা।।
পালা ভাঙ্গি উঠানেতে দিল ছড়াইয়া।
তার মধ্যে সর্প ছিল দংশিল আসিয়া।।