Page: 192

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৯২
ঠাকুর কহেন তবে মন জেনে তারে।
উপরের চারি কই দিয়া যা আমারে।।
বড় চারি কই ছিল উপরেতে গাঁথা।
তাহা দিয়া লালচাঁদ নোয়াইল মাথা।।
অন্তঃপুর মধ্যে গিয়া প্রণাম করিয়া।
লালচাঁদ চলিলেন ঠাকুরে দেখিয়া।।
প্রভু বলে নিমন্ত্রণ করিলা আমাকে।
আদরের বস্তু এই চেননা তারকে।।
লালচাঁদ কইমাছ গলায় ধরিয়া।
করযোড় করি চেয়ে রহে দাঁড়াইয়া।।
প্রভু বলে তারক করহ দরশন।
লালচাঁদ তোমাকে করেন নিমন্ত্রণ।।
লালচাঁদ নিম্নত্রিল কথা নাহি কয়।
মৎস্য হালসী হাটে গলে ল’য়া দাঁড়ায়।।
করিতেছে লালচাঁদ বড়ই বিনয়।
করযোড় তারক করিল সে সময়।।
তারপর লালচাঁদ বিদায় হইল।
বাহির বাটীতে আসি ঠাকুর বসিল।।
তারকে লইয়া প্রভু বসিলেন তথা।
বলিতে লাগিল সব মোহন্তের কথা।।
বেলা অপরাহ্ণ হ’ল সন্ধ্যার অগ্রেতে।
তারক চলিল প্রাঙ্গণেতে ঝাড়ু দিতে।।
রাত্রি হ’ল ঠাকুর বসিল বাটী মধ্যে।
ভক্তগণ বসিলেন ঠাকুর সান্নিধ্যে।।
ভোজন হইলে পরে স্বীয় স্বীয় স্থানে।
বঞ্চিলেন নিশি সবে হরষিত মনে।।
প্রভাতে উঠিয়া প্রভু তারকেরে কয়।
চল চল লালচাঁদ বাটী যেতে হয়।।
গিয়াছে ভোলা কুকুর সংবাদ দিয়াছে।
আমরা যাইব সে সংবাদ জানায়েছে।।
বলিতে বলিতে এল কাঙ্গালী বেপারী।
মৃত্যুঞ্জয় আসিলেন বলে হরি হরি।।
ঠাকুর বলেন সবে চল রাজপাট।
পথ বড় কম নয় সবে চল ঝাট।।
যাই যাই যাই বলে হইতেছে কথা।
হেনকালে লালচাঁদ পুত্র এল তথা।।
প্রভু বলে নিতে এল লালচাঁদ ছেলে।
শুভযাত্রা করে সবে হরি হরি বলে।।
যাইতে ভক্তের বাসে উল্লাসিত কত।
তিন দিন পর্যন্ত চাহেন প্রভু পথ।।
প্রভু হরিচাঁদ শ্রীরামচন্দ্র চৌধুরী।
মৃত্যুঞ্জয় গোস্বামী ও কাঙ্গালী বেপারী।।
এইরূপে যাত্রা করিলেন ছয়জন।
রচিল তারকচন্দ্র প্রভুর গমন।।
ভোলা কুকুরের বিবরণ
পয়ার
ভোলা নামে কুকুর প্রভুর বাড়ী রয়।
দৈবে কোথা হ’তে এসে রয়েছে তথায়।।
ঠাকুরের মন জানি সে ভোলা কুকুর।
সাথে সাথে যায় যথা গমন প্রভুর।।
ভক্তগণ যায় যদি প্রভুর বাটীতে।
প্রিয় ভক্ত গেলে আসে তার নিকটেতে।।
স্কন্ধ পরে হাতা দিয়া মুখ দিয়া মুখে।
অনিমিষ নেত্রে মুখ তাকাইয়া দেখে।।
কোন কোন ভক্তের সাথে বসি খায়।
নির্বিকার ভক্ত হ’লে কিছু নাহি কয়।।
একদিন তারক আহারে বসেছিল।
সঙ্গেতে কুকুর ভোলা খাইতে লাগিল।।
তারক বলেনা কিছু দেখিয়া ঠাকুর।
ডেকে বলে তাড়াইয়া দেওরে কুকুর।।
তখনে তারক কুকুরের মাথা ধরে।
তখনে উঠিল ভোলা চলে গেল দূরে।।
তাহাতে তারক বড় পাইলেন স্বাদ।
খাইলেন কুকুর সে ভোলার প্রসাদ।।
একদিন অনেক মতুয়া ভাদ্রমাসে।
প্রভু দরশনে গেল ওঢ়াকাঁদি বাসে।।
ভক্তের নিকটে ভোলা ঘুরিয়া বেড়ায়।
কারু কাছে গিয়া তার নিকটেতে রয়।।
কারু স্কন্ধে হাতা দিয়া ক্ষণকাল রয়।
হাতা নাড়ে মুখ নাড়ে লাঙ্গুল ঘুরায়।।
এক এক বার গিয়া কাহার নিকটে।
গণ্ডুস্থল চাটে কারু পদাঙ্গুল চাটে।।
রামকৃষ্ণ বিশ্বাস বসতি মল্লকাঁদি।
তিনি যান সেদিন শ্রীধাম ওঢ়াকাঁদি।।
বেলছেন দিন গেল রবি ডুবে যায়।
লোক সংখ্যা হ’ল বেশী বাড়ী যেতে হয়।।
ঠাকুর আছেন ঘরে না হন বাহির।
কহিতে নারিনু কিছু জীবন অস্থির।।