Page: 238

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ২৩৮

লোটাইয়া প’ল গিয়া পাগলের পায়।
পাগল সে তৃণগাছি দন্তে ধ’রে লয়।।
উঠিয়া পাগল ধরে তারকের গলে।
তারক পড়িল মহানন্দ পদতলে।।
লোহাগড়া বাজার দক্ষিণে এই লীলে।
বন্দরের লোকে দেখে হরি হরি বলে।।
কলরব হরিবল বাজার ভিতরে।
দোকানে বাজারে বন্দরের ঘরে ঘরে।।
তথা হ’তে চলিলেন তারকের ঘাটে।
তারকের নারী এল নবগঙ্গা তটে।।
তারকের ছিল যে পিস্তত ভ্রাতৃবধূ।
দেখে সুখে পান করে লীলাচক্র মধু।।
পাগল আসিয়া দুই বধূকে ধরিল।
পাগলের দুই পার্শ্বে দু’জন রহিল।।
দুইজনে পাগলে ধরিল সাপটিয়া।
পাগল দোঁহার স্কন্ধে দুই বাহু দিয়া।।
উতরিল তিনজনে তারকের বাড়ী।
তিনজনে একত্রে প্রাঙ্গণে রহে পড়ি।।
তাহা দেখি কীর্তনের লোক যত ছিল।
তারকের বাড়ী গিয়া কীর্তনে মাতিল।।
তিনজনে মধ্যে রাখি চৌদিকে ঘেরিয়া।
সংকীর্তন করে সবে ফিরিয়া ঘুরিয়া।।
ক্ষণে ক্ষণে ঘুরে যেন কুম্ভকার চাক।
উৎকলের কীর্তন যেমন বেড়াপাক।।
মধ্যেতে পাগলচাঁদ পড়িল ঢলিয়া।
দুই নারী পাগলের চরণ ধরিয়া।।
মাথার নাহিক বাস প্রেম উপলক্ষে।
ঘন ঘন কম্পে গাত্র বারিধারা চক্ষে।।
পাড়ার যতেক নারী আসিয়া অমনি।
কেহ হরিধ্বনি কেহ দেয় হুলুধ্বনি।।
কোন কোন নাগরী কীর্তন শুনে কাঁদে।
কোন নারী জল ঢালে সংকীর্তন মধ্যে।।
সেই জল কীর্তন মাঝারে হয় কাদা।
যেন সুরধনী ধারা প্রবাহিতা সদা।।
ক্রমে জল শুকাইয়া হয় গুড়া গোলা।
পুনঃ পুনঃ গগন মণ্ডলে উড়ে ধুলা।।
এইরূপ কীর্তন হইল বহুক্ষণ।
তারক ধরিল দুই বধূর চরণ।।
কাঁদিয়া কহেন মোর সার্থক জীবন।
আমি ধন্য হইলাম তোদের কারণ।।
প্রভু মহানন্দ ল’য়ে আনন্দ করিলি।
হরিচাঁদ প্রেম নীরে আমারে ভাসালি।।
অই ঠাই বসে শান্ত হইল সকল।
তথা বসি খাইল চাউল আর জল।।
গলে বস্ত্র করজোড়ে পাগলেরে কয়।
কুন্দসীর মহোৎসব নিরুৎসব ময়।।
তোমাবিনে নাহি হয় কোন মহোৎসব।
তব সঙ্গে এখানে আছে মহোৎসব।।
শুনিয়া পাগল শীঘ্র শীঘ্র যাত্রা কৈল।
পূর্বঘাটে এসে সবে জলেতে নামিল।।
কেহ কেহ ভেসে যায় কুন্দসীর ঘাটে।
দীননাথ পালের বাটীতে গিয়া উঠে।।
কেহ কেহ উঠে লোহাগাড়ার ঘাটেতে।।
সিক্ত বস্ত্রে যায় দীন পালের বাটীতে।।
দীননাথ বাটী হ’ল সাধুসেবা সব।
এইরূপ মহানন্দে আনন্দ উৎসব।।
শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত সুধাধিক সুধা।
তারক যাচিছে হেতু রসনার ক্ষুধা।।


স্বামী মহানন্দের ভক্তাশ্রমে ভ্রমণ।

পয়ার।

বিকালে করিল যাত্রা কুন্দসী হইতে।
দীঘলিয়া আসিলেন সন্ধ্যার পরেতে।।
কেহ কেহ র’ল বেণী পালের আলয়।
যজ্ঞেশ্বর বাটীতে কেহ গিয়া রয়।।
বলাইর ভগ্নী লক্ষ্মী সাধনার শিষ্য।
সেই ঘরে কতক থাকিল হ’য়ে হর্ষ।।
কতক থাকিল ভীম বলাইর বাড়ী।
কতক থাকিল গিয়া গ্রাম আড়াবাড়ী।।
সেই খানে রাত্রিভোর নাম গান গেয়ে।
প্রভাতে করিল যাত্রা শ্রীহরি স্মরিয়ে।।
ঘসিবেড়ে গ্রামে ভাগ্যধর পাল ছিল।
তার বাড়ী কতক আসিয়া উতরিল।।
গোপীনাথ সাহা ছিল মতুয়া প্রেমিক।
ভাগ্যধর গুরু ভাবে বাসে প্রাণাধিক।।
সেই বাড়ী কেহ থাকে কেহ আর বাড়ী।
অষ্টাদশ ঘর পাল সব বাড়ী জুড়ি।।
সব বাড়ী বাড়ী বাল্য সেবা হইতেছে।
সব বাড়ী স্ত্রী পুরুষ নামে মাতিয়াছে।।