Page: 234

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ২৩৪

ছিণ্ডিয়া গলার পৈতা দেন পরিচয়।
মতুয়া হ’য়েছি ওঢ়াকাঁদি সম্প্রদায়।।
শ্রীগুরু তারক চন্দ্র জননী সাধনা।
ওঢ়াকাঁদি হরিচাঁদে করি আরাধনা।।
প্রেমদাতা মহানন্দ চিদানন্দময়।
জয় ওঢ়াকাঁদি জয় ওঢ়াকাঁদি জয়।।
হরিবোলা সঙ্গে তিনি পালপাড়া গিয়া।
নামে প্রেমে কীর্তনেতে গেলেন মাতিয়া।।
কীর্তনের মাঝে গিয়া মনের আনন্দে।
মহানন্দ পাগলকে করিলেন স্কন্ধে।।
মহানন্দ অক্ষয়ের স্কন্ধেতে বসিয়া।
অস্থি সন্ধি কল যেন দিলেন ছাড়িয়া।।
এ রঙ্গ দেখিয়া প্রেমে উন্মত্ত সকল।
সবাকার মুখে মাত্র সুধা হরিবোল।।
ক্ষণ পরে সবে করে ঠাকুরকে স্কন্ধে।
বাহ্যহারা কে কারে কি করে প্রেমানন্দে।।
ব্রাহ্মণ কায়স্থ কুণ্ডু পাল ঝালো মালো।
নমঃশূদ্র সাহা সাধু একত্র হইল।।
মাতিয়া কীর্তনানন্দে প্রায় নিশি শেষ।
পাগলচাঁদের হ’ল অদ্বৈত আবেশ।।
কহিছেন তোরা আলি সে আমার কই।
যারে নেড়ে এনে আমি নাড়া নাম লই।।
যার জন্য করিলাম সাধ্য এতদূর।
অসাধ্য সাধন করি ব’সে শান্তিপুর।।
যার জন্য ফুল তুলসী ধাইল উজান।
কইরে আমার সেই পরাণের পরাণ।।
অক্ষয় ঠাকুর কহে শোন ওরে নাড়া।
ওঢ়াকাঁদি আসিয়েছে তোর সেই গোরা।।
তার দুই পুত্র গুরুচাঁদ উমাকান্ত।
তার প্রাণপুতলী করিছে লীলা অন্ত।।
দেহ ছেড়ে করেছেন গোলোকে গমন।
জ্যেষ্ঠ পুত্র গুরুচাঁদ জগত জীবন।।
তোর হরিচাঁদ গুরুচাঁদে মিশিয়াছে।
মানুষে মানুষ মেশা বর্তমানে আছে।।
বলিতে বলিতে কয় মুই শ্রীচৈতন্য।
অধরোষ্ঠ চক্ষুদ্বয় হ’ল রক্তবর্ণ।।
রোমকূপে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কুণ্ডু উথলিল।
কণ্টক আকার কেশ লোম উর্দ্ধ হ’ল।।
দু’জনার মোহ প্রাপ্ত জ্ঞান নাহি আর।
মতুয়া সকলে হরি বলে অনিবার।।
দশা ভঙ্গ হ’ল প্রায় নিশি অবসানে।
করিল কীর্তন ক্ষান্ত সবে সুস্থ মনে।।
ভোজন হইল সব ভোরের সময়।
আচমন সময়েতে অরুণ উদয়।।
আরবার মাতিলেন নাম সংকীর্তনে।
গাইতে গাইতে সবে চলিলেন স্নানে।।
মধুমতী ভরট গোগের ঘাটে গিয়া।
জলকেলী করে সবে আনন্দে মাতিয়া।।
হরি হরি হরি বলি করে জলকেলী।
প্রেমাবেশে করে সবে জল ফেলাফেলী।।
জলকেলী করি শেষে ভিজা বসনেতে।
আসিলেন তারাচাঁদ পালের বাটীতে।।
দধি খদি চিঁড়া চিনি জল ফলাহার।
ফুল মহোৎসব সবে করে বার বার।।
শালনগরের মহোৎসবে এই লীলা।
গোলোক পুলক হেতু রায় বিরচিলা।।


সাহাবাজপুর রাখাল সঙ্গে পাগলের খেলা।

পয়ার।

সাহাবাজপুর গ্রামে হ’ল নিমন্ত্রণ।
দল বল সহ করে পাগল গমন।।
তপস্বী পালের বাড়ী হবে মহোৎসব।
পুলকে চলিল মতুয়ার গণ সব।।
মধ্যাহ্ন সময় যাত্রা করিল সকলে।
হরি হরি বলি সবে প্রেমানন্দে চলে।।
সাত ভাগ হ’য়ে চলে মতুয়ারা সব।
জটকের বিল মধ্যে উঠে কলরব।।
বিলের কিনারা দিয়ে মতুয়ারা যায়।
জটকের বিলে খালে ডাঙ্গায় নৌকায়।।
যেখানে যে লোক সবে হরিগুণ গায়।
কেহ বলে বাবা হরিচাঁদ জয় জয়।।
কেহ বলে জয় জয় গুরুচাঁদ জয়।
কেহ বলে গোলোক চাঁদের জয় জয়।।
কেহ বলে জয় জয় মহানন্দ জয়।
কেহ বলে ওঢ়াকাঁদি ভক্তগণ জয়।।
কেহ কেহ বলে জয় জয় হরিপাল।
কেহ বলে জয় জয় পালের ময়াল।।