Page: 100

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১০০

সেই রত্নগর্ভ জাতা শ্রীকোকিলা দেবী।
সতী অংশে জন্ম সেই পরমা বৈষ্ণবী।।
মায়ে ঝিয়ে তাহারা তোমার ভক্ত হবে।
আত্ম স্বার্থ ত্যজি তোমা ভকতি করিবে।।
তাহা শুনি হৃষ্টচিত্তে কহে মৃত্যুঞ্জয়।
যে আজ্ঞা তোমার প্রভু যাইব তথায়।।
একামাত্র গেল পদুমায় মৃত্যুঞ্জয়।
চণ্ডীচরণের বাটী হইল উদয়।।
বৎসরেক পদুমায় থাকিলেন গিয়া।
নিরবধি হরিগুণ বেড়ান গাহিয়া।।
দিবা মধ্যে প্রহরেক গৃহকার্য করে।
হরি কথা কৃষ্ণ কথা গোষ্ঠে কাল হরে।।
ঠাকুরের যুগধর্ম করিল প্রচার।
ক্রমে সব লোক ভক্ত হইল তাহার।।
সবে বলে আপনাকে যেতে নাহি দিব।
আমরা সেবক হয়ে এদেশে রাখিব।।
পূর্বে প্রভু শ্রীমুখে করিয়াছি ব্যক্ত।
সমাতৃক কোকিলা হইল তার ভক্ত।।
হরিনাম মহামন্ত্র জপে নিরবধি।
অল্পদিনে কোকিলার হইল বাকসিদ্ধি।।
পদুমা আইচপাড়া শ্রীকালীনগর।
প্রভুর ভাবেতে সবে হইল বিভোর।।
কোকিলাকে ভক্তি করে এ দেশে সবায়।
কোকিলার দোঁহাই দিলে ব্যাধি সেরে যায়।।
ওলাওঠা বিসূচিকা জ্বর অতিসার।
রসপিত্ত আর দ্ব্যাহিক ত্রাহ্যিক জ্বর।।
থাকেনা তাহার ব্যাধি অমনি আরাম।
মহাব্যাধি সারে নিলে কোকিলার নাম।।
রোগী শোকী ভোগী যত জ্ঞানী কি অজ্ঞানী।
কোকিলাকে ডাকে সবে মাতা ঠাকুরানী।।
বৎসরেক হরিনাম করিয়া প্রচার।
মৃত্যুঞ্জয় রহিলেন সে কালীনগর।।
সকলে সাহায্য করি তুলে দিল ঘর।
ঠাকুর করহ বাস ইহার ভিতর।।
কাশীশ্বরী ভার্যা তার সুভদ্রা জননী।
দোঁহে আছে মল্লকাঁদি যেন কাঙ্গালিনী।।
মৃত্যুঞ্জয় ওঢ়াকাঁদি যাতায়াত করে।
মাঝে মাঝে দেখা দেয় সুভদ্রা মায়েরে।।
কাশীশ্বরী মৃত্যুঞ্জয় সুভদ্রা সুমতি।
তিনজন প্রভুর সেবায় আছে ব্রতী।।
মহাপ্রভু আজ্ঞা দিল তাহাদের প্রতি।
সকলে কালীনগরে করগে বসতি।।
অদ্য নিশি গতে কল্য প্রভাত সময়।
শুভক্ষণে কর যাত্রা বুধের উদয়।।
প্রভু আজ্ঞা শিরে ধরি অমনি চলিল।
আসিয়া কালীনগর বসতি করিল।।
গোঁসাই কালীনগর বসতি বিরাজ।
রচিল তারকচন্দ্র কবি রসরাজ।।


শ্রীগোলোক গোস্বামীর গোময় ভক্ষণ প্রস্তাব।

দীর্ঘ-ত্রিপদী।

মৃত্যুঞ্জয়ের জননী, দেবী সুভদ্রা নামিনী
সদা করে নাম সংকীর্তন।
গৌর নিত্যানন্দ বলে, ভাসে দু’নয়ন জলে
ডাকে কোথা শচীর নন্দন।।
নিদ্রাতে হ’য়ে বিভোরা, বাপরে নিতাই গোরা
ডাকিতেন নয়ন মুদিয়া।
নিদ্রাযোগে অঙ্গে ঝাঁকি, ছল ছল দুটি আঁখি
কাঁদিতেন চৈতন্য হইয়া।।
হায় হায় কি হইল, দেখা দিয়া লুকাইল
বাপরে আমার নিত্যানন্দ।
ওরূপ করিত যবে, রামাগণ এসে তবে
প্রতিবাসী বলিতেন মন্দ।।
কোন কোন নারী আসি, বলিতেন হাসি হাসি
বাপ বল কোন নিতাইরে।
বলিত সুভদ্রা ধনী, আমার নিতাই মণি
সবাকার বাপ এ সংসারে।।
কেহ বলে জানি আমি, নিতাই তোমার স্বামী
রমণী কি স্বামী নাম লয়।
কহ বাবা নিত্যানন্দ, তাহাতে পরমানন্দ
নিতাই কি তব বাবা হয়।।
কহে সুভদ্রা বৈষ্ণবী, আমি নিতাই বল্লভী
নিত্যানন্দ জীবন বল্লভ।
নিত্যানন্দ দাসী আমি, নিত্যানন্দ মম স্বামী
যাহা হতে জগৎ উদ্ভব।।
নিতাই আমার বাপ, মাতৃবাপ পিতৃবাপ
পুত্রের কন্যার বাপ হয়।