Page: 084

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ৮৪


স্তব শুনে ততক্ষণে রামরূপ হ’ল।
ধনু ধরি’ জটাধারী অমনি দাঁড়াল।।
সৌম তনু রম্যজানু করি দরশন।
স্থির নেত্র বায়ু পুত্র হইল তখন।।
নবঘন রূপঘন নিরীক্ষণ করে।
চাতকিনী কুতুকিনী যথা ঘন হেরে।।
রাম হ’য়ে দেখা দিয়ে পুনঃ লুকাইলে।
বতাহত বৃক্ষবৎ মূর্ছিত হইল।।
দয়া করি করে ধরি হীরামনে তোলে।
বলে হীরে কেন ফিরে ভাস অশ্রুজলে।।
আমি তোর তুই মোর কিছু নাহি আন।
তবে কেন হ’লি হেন তুই মোর প্রাণ।।
সঙ্গোপনে হীরামনে প্রভু কন বাণী।
বাছাধন যা এখন থাকিতে যামিনী।।
এ তারক অপারক পীতে এই সুধা।
ভক্তলোকে পিয় সুখে যাবে ভব ক্ষুধা।।


হীরামনের নিজালয়ে গমন।

দীর্ঘ ত্রিপদী।

ঠাকুরের বাণী শুনি, নৈষ্ঠিকের শিরোমণি
বীররাগে করি বীরদাপ।
রাম রাম রাম বলে, ভেসেছে নয়ন জলে
অগাধ সলিলে দিল ঝাঁপ।।
যবে পদ দিল জলে, মৃত্তিকা ঠেকিল তলে
পদতরী হ’ল ভাসমান।
বিমানে উড়িতে পারে, ডুবেনা অগাধ নীরে
পূর্বরূপ হইল শক্তিমান।।
পূর্বে বেদভিটা যেটা, নামজাদে আম ভিটা
তারাচাঁদ মালু দুটি ভাই।
প্রভুদের নিজ জ্ঞাতি, সেখানে করে বসতি
ভাই ভাই সম্পর্ক সবাই।।
জলে হ’ল ভাসমান, মনে করে অনুমান
জাহিরীতে নাহি প্রয়োজন।
জপ জপ শব্দ করে, চলেছে অগাধ নীরে
লোক এলে করে সন্তরণ।।
কভু পদতল জল, কভু হয় কটি জল
কখন বা হয় জানু জল।
জলে চলে মহাভাগ, বুকে ছিল জলদাগ
জন্মদেশে বিখ্যাত সকল।।
হরে রাম হরে রাম, জয় রাম সীতা রাম
অবিরাম গায় নাম গীত।
আমভিটা সেই বাটী, প্রভু জ্ঞাতি ভাই দুটি
সে বাটীতে হ’ল উপনীত।।
ব্রাহ্ম মুহূর্ত সময়, তারাচাঁদ বের হয়
দাদা বলি মালুকে ডাকিল।
জপ জপ করি নীরে, হরিনাম জপ করে
বাড়ীপরে কে যেন উঠিল।।
হীরামনে গিয়া ধরে, দু’ভাই সুধায় তারে
বলে কেরে তুই মহাবল।
বল দেখি মন খুলে, আজ এই রাত্রিকালে
কি কারণে আলি তাহা বল।।
হীরামনে কহে কথা, কি কব মম বারতা
শুন খুল্লতাত তারাচাঁদ।
অঞ্জনা আমার মাতা, বানর কিশোরী পিতা
প্রাণদাতা বাবা হরিচাঁদ।।
রামদাস বায়ু পুত্র, মহারাজ বালা ক্ষেত্র
অনুচর সুগ্রীব রাজার।
হিয়া নাহি হয় ধৈর্য, জ্ঞান নাহি অন্তর্বাহ্য
ত্যাজ্য আর্য্য চৈতন্য বালার।।
কি বলিতে কিবা বলি, বুঝিতে নারি সকলি
না জানি জলে কি স্থলে যাই।
হরিচাঁদ রূপরসে, দেহ তরী ডুবে ভাসে
ভাটী খেলি আবার উজাই।।
হরিচাঁদ ইচ্ছাময়, সকলি তাঁর ইচ্ছায়
না জানি কি ইচ্ছা তাঁর মনে।
সেই ভ্রমাইলে ভ্রমি, দেখিতে জনম ভূমি
স্ব-নৌকায় চলেছি দক্ষিণে।।
ঘাসকাটা নায় চড়ি, যাব বালাদের বাড়ী
দিন কত আসা যাওয়া সার।
ইচ্ছিল শ্রীহরিচাঁদ, করিতে পতিত আবাদ
বালাবাড়ী বাড়ীও খামার।।
তারাচাঁদ মালুরাম, বলে বাছা চিনিলাম
তোরে ল’য়ে হ’ল হুড়াহুড়ি।
তুই ছিলি মরা শব, জুটিয়া বালারা সব
তোরে ফেলে যায় অই বাড়ী।।
শব ছিলি এই রাত্রে, প্রাণপ্রাপ্ত এইমাত্রে
এ মাহাত্ম্য সে মেজ দাদার।
প্রতিষ্ঠা বাড়িবে বলে, তোরে ভাসায়েছে জলে
মনে তোর রাম অবতার।।