Page: 150
শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৫০
পাগল বলেন করি পদে জলকেলি।
অপরাধ ক্ষম মাতা নিজ পুত্র বলি।।
গঙ্গা বলে তুমি হরিচাঁদ প্রিয় পাত্র।
আমি তব অঙ্গ স্পর্শে হইনু পবিত্র।।
পূর্বদিকে ঘাটে সব লোকে করে দৃষ্টি।
তারা বলে ওই ঘাটে হ’য়ে গেল বৃষ্টি।।
পাগল সাঁতার দিয়ে উঠিলেন কূলে।
অচেতন চারিজনে ধ’রে ধ’রে তুলে।।
ঘাটের উত্তরে গ্রাম দক্ষিণেতে গোগ।
পাগল করিল তথা গঙ্গাস্নান যোগ।।
তথা স্নানে পূর্ণ হয় সব মনস্কাম।
গঙ্গাতুল্য শুদ্ধ ঘাট ‘বেলে ঘাট নাম’।।
পাগলের যোগে গোগে গঙ্গা বারমাস।
অদ্যাপি সে কাণ্ড লোক মুখেতে প্রকাশ।।
পাগলের জলকেলি দেখা গেল লেজ।
রচিল তারকচন্দ্র কবি রসরাজ।।
ভক্ত গোলোক কীর্ত্তনীয়ার ঠাকুরালী।
পয়ার।
ওঢ়াকাঁদি গোলোক কীর্তুনে আসে যায়।
ঐকান্তিক ভক্তি হরি ঠাকুরের পায়।।
একদা শ্রীহরি বসি পুষ্করিণী তীরে।
গোলোক বসিল গিয়া ঠাকুর গোচরে।।
ঠাকুর গোলোকে কহে কি কাজ করিলি।
গান করি চিরদিন লোকেরে শুনালি।।
এমন মধুর রাম নাম শুনাইয়ে।
বিলালী অমূল্য ধন অর্থ লোভী হ’য়ে।।
যে ধনের মূল্য নাই তাহাই বেচিলি।
অমূল্য ধনের মূল্য কিছুই না পাইলি।।
কাঁদিয়ে কীর্তুনে কহে ঠাকুরের ঠাই।
আজ্ঞা কর কি কার্য করিব শুনি তাই।।
ঠাকুর কহেন বাছা ধর্ম কর্ম সার।
সর্ব ধর্ম হ’তে শ্রেষ্ঠ পর উপকার।।
কীর্তনিয়া বলে হে তারকব্রহ্ম হরি।
আমি কি পরের ভাল করিবারে পারি।।
মহাপ্রভু বলে বাছা বলি যে তোমায়।
কেহ যদি ঠেকে কোন আদি ব্যাধি দায়।।
ওঢ়াকাঁদি আসিতে যে করয় মনন।
এ পর্যন্ত আসিতে দিও না বাছাধন।।
আমাকে ভাবিয়া যাহা তোর মনে আসে।
তাহাই বলিয়া দিস মনের হরিষে।।
তাহাতে লোকের হ’বে ব্যাধি প্রতিকার।
ইহাতে হইবে তোর পর উপকার।।
যে রোগের বৃদ্ধি যাতে তাই খেতে দিস।
হরিনামে মানসিক করিতে বলিস।।
রোগমুক্ত হ’লে সেই মানসার কড়ি।
আমাকে আনিয়ে দিস ওঢ়াকাঁদি বাড়ী।।
রোগাভক্তি কলিতে হ’য়েছে বড় ব্যক্ত।
রোগমুক্ত হ’বে সবে হ’বে হরিভক্ত।।
কহিয়া সারিও ব্যাধি ভাবিয়া আমারে।
অর্থ দণ্ডে পাপদণ্ড নামে পাপ হরে।।
নিজে না হইও লোভী অর্থের উপর।
তাহা হ’লে করা হ’বে পর উপকার।।
শুনিয়া গোলোক বড় হরষিত হ’য়ে।
সারাতে লাগিল ব্যাধি হরিনাম দিয়ে।।
অনেক লোকের ব্যাধি হইয়া মোচন।
হরিভক্ত হ’য়ে করে হরি সংকীর্তন।।
রাউৎখামার আর মল্লকাঁদি গ্রাম।
চারিদিকে সবলোকে করে হরিনাম।।
এইরূপ ভক্ত সব হইতে হইতে।
প্রকাশ হইল ধর্ম দক্ষিণ দেশেতে।।
বর্ণী বাশুড়িয়া দলোগুণী আটজুড়ি।
পাতগাতী কলাতলা গ্রাম বড়বাড়ী।।
গঙ্গাচর্ণা গ্রামমাঝে শম্ভুনাথ বাড়ী।
প্রহরাষ্ট থাকে তথা যেন বাসা বাড়ী।।
তাহাতে অনেক লোক হইল বিমনা।
অই বাড়ী ছেড়ে কেন গোঁসাই লড়ে না।।
চারিযুগে সৎকার্য আছে বিড়ম্বন।
অনেক ভাবেতে ফিরে অনেকের মন।।
ঠাকুর নিকটে সবে নানাভাবে কয়।
শম্ভুনাথ ওঢ়াকাঁদি হইল উদয়।।
ঠাকুর জিজ্ঞাসা করে গোলোক কি করে।
বিশ্বাস কি অবিশ্বাস তাহার উপরে।।
শম্ভু কহে বিশ্বাস করেছি আমি যারে।
আর নাহি অবিশ্বাস করিব তাহারে।।
ঠাকুর কহেন আর নাহি অবিশ্বাস।
কেটে গেছে বাছা তোর কর্মবন্ধ ফাঁস।।