Page: 018

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৮

হারে রে বৈরাগী তোর এত অকল্যাণ ।
শূদ্র হ’য়ে হবি নাকি ব্রাহ্মণ সমান ।।
ব্রাহ্মণ কহিল গিয়া ব্রাহ্মণ সকলে ।
শুনিয়া ব্রাহ্মণ সব ক্রোধে উঠে জ্বলে ।।
দশ জন বিপ্র গেল বৈরাগীর বাড়ী ।
ক্রোধভরে বাসুদেবে ল’য়ে এল কাড়ি ।।
বৈরাগী নির্মল চিত্তে দিলেন ছাড়িয়া ।
বলিল রে প্রানবাসু সুখে থাক গিয়া ।।
কাঙ্গালের কাছে তুমি ছিলে অনাদরে ।
আদরে খাইও এবে ষোড়শোপচারে ।।
ভাল হ’ল ব্রাহ্মণেরা লইল তোমারে ।
সুখেতে থাকিবা এবে খট্টার উপরে ।।
দঃখিত দরিদ্র আমি কপর্দ্দক নাই ।
বহু কষ্টে থোড় মোচা তোমারে খাওয়াই ।।
দধি দুগ্ধ ঘৃত মধু পায়স পিষ্টক ।
লুচি পুরি মন্ডা খেও যাহা লয় সখ ।।
চির দিন রাখিয়াছি ব্রাহ্মণের মান ।
যাও যাও বিপ্র ঘরে নাহি অপমান ।।
আমি অজ্ঞ নাহি জানি তোমারে পূজিতে ।
এখন পূজিবে তোমা মন্ত্রের সহিতে ।।
যেখানে সেখানে থাক তাতে ক্ষতি নাই ।
তুমি যেন সুখে থাক আমি তাই চাই ।।
ব্রাহ্মণেরা বাসুদেবে ল’য়ে হরষেতে ।
বাসুদেবে অভিষেক করে তন্ত্রমতে ।।
কেহ বলে রাখ দেবে প্রতিষ্ঠা করিয়ে ।
জাতি নেশে নমঃশূদ্রের পক্ক অন্ন খেয়ে ।।
প্রতিষ্ঠা করিয়ে পঞ্চ গব্য দ্বারে স্নান ।
অভিষিক্ত করিয়া মণ্ডপে দিল স্থান।।
খাট্টার উপরে রজতের পদ্মাসন ।
তাহার উপরে দেবে করিলা স্থাপন ।।
শ্বেতপদ্ম রক্তপদ্ম শতদল পদ্ম ।
নীলপদ্ম স্থলপদ্ম কোকনদ পদ্ম ।।
গোলাপ টগর আর পুষ্প জাতি জুতি ।
গন্ধার অপরাজিতা মল্লিকা মালতী ।।
গন্ধরাজ সেফালিকা ধবল করবী ।
কৃষ্ণকেলী কৃষ্ণচূড়া কামিনী মাধবী ।।
দূর্ব্বা তুলসীর পত্র অগুরু চন্দন ।
শ্রীঅঙ্গে লেপন আর শ্রীপদ সেবন ।।
মন্ত্রপুত করি পরে তন্ত্র অনুসারে ।
ভোগাদি নৈবেদ্য দেন নানা উপহারে ।।
আতপ তন্ডুল ভোগ দেয় যে কখন ।
যেখানে যে মিষ্ট ফল পায় যে ব্রাহ্মণ ।।
আনিয়া লাগায় ভোগ বাসুদেব ঠাই ।
রন্ধনশালান্য ভোগ সুপক্ক মিঠাই ।।
সব দ্বিজ বাসুদেবের ভক্ত হইল ।
পূজারি ব্রাহ্মণ এক নিযুক্ত করিল ।।
সন্ধ্যাকালে ঘৃত দ্বীপ পঞ্চ বাতি জ্বালি ।
আরতি করেন সব ব্রাহ্মণমণ্ডলী ।।
শঙ্খ ঘন্টা কংশ করতাল ঝাঁজ খোল ।
রাম শিঙ্গে ভেরী তুরী মধুর মাদল ।।
এই রূপে বাসুদেব ব্রাহ্মণের পূজ্য ।
আর এক লীলাগুণ বড়ই আশ্চর্য্য ।।
এই বাসুদেব জন্ম সফলা নগরী ।
তারক রসনা ভরি বল হরি হরি ।।


রাম কান্তের বাসুদেব দর্শন।

দীর্ঘ ত্রিপদী।

ভিক্ষা করে রামকান্ত , মনেতে চিন্তা একান্ত ,
মম বাসুদেব আছে সুখে ।
পূজা করে দ্বিজগণে, অনেক দিন দেখিনে ,
আমার বাসুরে আসি দেখে ।।
ইহা ভাবি মনে মনে, দ্বিজগণ অদর্শনে ,
মণ্ডপের পিছে গিয়া রয় ।
আমি নাহি দিব দেখা ,গোপনে রহিব একা ,
দেখি বাসু কিভাবে কি খায় ।।
দক্ষিণাভিমুখ হ’য়ে, বাসুদেব দণ্ডাইয়ে ,
সর্ব্বদাই মন্ডপেতে রয় ।
পূজক ব্রাহ্মণ গিয়া , মন্ডপ-দ্বার খুলিয়া ,
উত্তরাভিমুখ দেখতে পায় ।।
পূজক ব্রাহ্মণ কয় , কে এসে ঠাকুরালয় ,
ঠাকুর ফিরায়ে রেখে গেল ।
কপাট নাহি খুলিল , মন্ডপেতে কে আসিল ,
বাসুদেব কেন হেন হ’ল ।।
কেহ বলে দ্বার রুদ্ধ, কার হেন আছে সাধ্য ,
ঘরে এসে ফিরায় দেবলা ।
তবে যে ফিরিল কেনে , দেবমায়া কেবা জানে ,
কি জানি কি ঠাকুরের লীলা ।।
ঠাকুরের ভোগ দিতে , ভোগ রাগ সমাধিতে ,
দিবা দুই প্রহর সময় ।