Page: 042

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ৪২

সেই কালে নিত্যবস্তু হৈল আবির্ভূত।
নৈলে কেনে দণ্ড ভাঙ্গে নিতাই অবধূত।।
এইভাবে আবির্ভূত মিশামিশি হয়।
অবতারে নিত্যযোগ নাহিক সংশয়।।
নাটু আর বিশ্বনাথ এ লীলা দেখিয়া।
হরি বলি বাহু তুলি উঠিল নাচিয়া।।
ঠাকুর বলেন শুন ওরে ব্রজনাথ।
যাবি না থাকিবি তুই আমাদের সাথ।।
ব্রজনাথ বলে আমি আর কোথা যাব।
প্রাণ থুয়ে কোথা গিয়ে এ দেহ জুড়াব।।
রসনা বাসনা করে ব্রজনাথ সঙ্গ।
ব্রজনাথ শান্তিনাথ দোঁহে এক অঙ্গ।।


সফলা নগরী শ্রীহরির আবির্ভাব ও শ্রীহরির অঙ্গে জ্যোতির্ম্মিলন।

পয়ার।

সফলানগরী শ্রীহরির আবির্ভাব।
ধন্য ধন্য বলিয়া হইল জনরব।।
শনিবার আর যে মঙ্গল বার হ’লে।
ঠাকুর বসিত ঝোঁকে ঝোঁকে হেলে দুলে।।
প্রাতঃসূর্য মত হ’ত ঠাকুরের মুখ।
কত লোকে গিয়া তথা দেখিত কৌতুক।।
প্রাতঃ হ’তে প্রহরেক থাকিত তেমন।
সকলে করিত হরিনাম সংকীর্তন।।
ব্যধিযুক্ত লোক যত সেই খানে যেত।
মুখের বাক্যতে সব আরোগ্য করিত।।
একদিন হরি ঠাকুরের বার মানি।
সফলানগরে হয় জয় জয় ধ্বনি।।
মহাপ্রভু বলে ব্রজ চল মোরা যাই।
কেমন হরির বার দেখে আসি তাই।।
তাহা শুনি ব্রজনাথ সঙ্গেতে চলিল।
দুই প্রভু একত্র হইয়া চলে গেল।।
শ্রীহরি ঠাকুর মধ্যে লোক চতুঃপার্শ্বে।
দুই প্রভু উপনীত হেনকালে এসে।।
যখনে শ্রীহরিচাঁদ উপনীত হ’ল।
প্রাতঃসূর্য বর্ণ মুখ বিবর্ণ হিইল।।
দিবসে উঠিলে চন্দ্র হীনপ্রভা যেন।
শ্রীহরিদর্শনে তেম্নি সে হরি বিবর্ণ।।
ছিল যে ঠাকুরের মুখ প্রাতঃসূর্য বর্ণ।
মুখ হ’তে বাহিরিল সে জ্যোতি সম্পূর্ণ।।
চতুঃপার্শ্বে লোক সব করিল দর্শন।
হরিচাঁদ অঙ্গে জ্যোতি হৈল সম্মিলন।।
চুম্বকে চুম্বক দিয়া লৌহ টেনে লয়।
মেঘে সৌদামিনী যথা হ’ল তার প্রায়।।
সে ঠাকুর জ্যোতি হরিচাঁদেতে মিশিল।
ব্রজনাথে ল’য়ে হরি নিজালয় গেল।।
তখন সে ডেকে বলে সব ভক্ত ঠাই।
যে আমাতে ছিল বাপু সে আমাতে নাই।।
এতদিন যার ধনে ছিনু অধিকারী।
যার ধন সেই নিল কি করিতে পারি।।
তবে যদি ভক্তি করি পার গো ডাকিতে।
মুক্তি পাবে যার যার ভক্তির গুণেতে।।
যে মানুষ মম দেহে আবির্ভূত ছিল।
ঐ যে সে মানুষ মানুষে মিশিয়া গেল।।
মানুষে মানুষ সঙ্গে মিশে গেল আজ।
গেল রবি কহে ভাবি কবি রসরাজ।।


ব্রজনাথের দ্বারা মৃত গরুর জীবন দান।

পয়ার।

ব্রজা পাগলা ব্রজা পাগলা বলে হ’ল খ্যাতি।
হরিচাঁদ হয়েছে সে ব্রজা পাগলার সাথী।।
সংসারী সংসার কাজ কিছুই করে না।
কোথাও বসিলে আর উঠিতে চাহে না।।
ব্রজনাথ বিশ্বনাথ আর নাটু হরিচাঁদ।
কয়জনে পাতিয়াছে পীরিতির ফাঁদ।।
কভু বৃক্ষশাখামূলে কভু বৃক্ষমূলে।
কভু গোচারণ মাঠে কভু ভূমিতলে।।
বসিয়া থাকেন কয় প্রভু একত্তর।
কোন কোন দিন গিয়া খায় কারু ঘর।।
কেহ কেহ ডেকে লয় সেবার জন্যেতে।
বিশার জননী দেন প্রায় সময় খেতে।।
বেশী থাকে বিশাইর মাতার কাছেতে।
মনে হ’লে কোন কাজ করে তৎক্ষণাতে।।
তিনজনে কভু যদি কোন কাজ ধরে।
দশ কিষাণের কাজ করে দিতে পারে।।
কোনদিন কার্য নাহি করে দিনভরি।
বড় কাজ করে যদি দণ্ড দুই চারি।।