Page: 172

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৭২

পাঁচটি নন্দন, সকলে সুজন
শ্রীকৃষ্ণ ভজন করে।
পঞ্চ সহোদর, ভজনে তৎপর
পিতা যান লোকান্তরে।।
পাঁচের প্রবীণ, পরিল কৌপীন
না করিল পরিণয়।
হ’য়ে গৃহত্যাগী, হইল বৈরাগী
ভিক্ষা মাগি সদা খায়।।
কিছুদিন পরে, গ্রাম শিবপুরে
আখড়ায় বাস করে।
যত সব লোকে, তার ক্রিয়া দেখে
ঠাকুর বলেন তারে।।
লোচন গোঁসাই, দেখে শুনে তাই
ভাই গেল গৃহ ত্যাজি।
আমি কি সুখেতে, থাকিব গৃহেতে
সংসার ভোজের বাজী।।
বাল্যকালাবধি, করে নিরবধি
হাই ছাড়ে কৃষ্ণনাম।
কৃষ্ণ বলে সদা, আর বলে দাদা
কেন মোরে হ’লে বাম।।
ডাকি একদিনে, ভাই তিন জনে
কহেন মধুর ভাষে।
আমিও বৈরাগী, হই গৃহত্যাগী
সবে সুখে থাক বাসে।।
লোচন জননী, নামেতে আছানী
কথা শুনি মাতা কয়।
বাছারে লোচন, শুনিয়া বচন
জীবন জ্বলিয়া যায়।।
জনক তোমার, হ’ল লোকান্তর
সহোদর তব জ্যেষ্ঠ।
দুঃখিনী দেখিয়া, গিয়াছে ছাড়িয়া
অন্তরে অনন্ত কষ্ট।।
কিছুদিন পর, মাতা লোকান্তর
সাধু পেল অবসর।
পরিয়া কৌপীন, হৈল উদাসীন
দীনহীন ক্ষুদ্রতর।।
মেগে খায় ভিক্ষা, নাহি দীক্ষা শিক্ষা
নিজেই কৌপীনধারী।
হা গুরু বলিয়া, ডাক ছেড়ে দিয়া
হইল দীন ভিখারী।।
কালোরূপ আলো, বরণ শ্যামল
নীল কমল শরীর।
দ্বিবাহু লম্বিত, অতি সুললিত
নাভিপদ্ম সুগভীর।।
শ্রীরামলোচন, কহে কোন জন
নামে লোচন প্রকাশ।
কখন কখন, কহে কোন জন
শ্রীরামলোচন দাস।।
হা গুরু গোঁসাই, বলে ছাড়ে হাই
কখন কহিত দাদা।
মোর এ সময়, থাকিবা কোথায়
হৃদয় থাকিও সদা।।
সাধুলোকে সব, বলেন বৈষ্ণব
হইল বৈষ্ণবোপাধি।
কাটি কর্মভোগ, ত্যাজি ন্যাসযোগ
মহারোগ নিল ব্যাধি।।
হস্ত পদাঙ্গুল, হ’ল স্থুল স্থুল
ক্ষত হ’য়ে গেল খসি।
ছিল মাত্র রেখা, কাষ্ঠের পাদুকা
পায় বাঁধে দিয়া রসি।।
বৃদ্ধ পদাঙ্গুল, ছিল মাত্র মূল
হস্তের তর্জনী মূর্দ্ধ।
শ্রীকর যুগলে, চতুর আঙ্গুলে
র’ল মাত্র অর্ধ অর্ধ।।
ক্লেদ শুকাইল, ক্ষত সেরে গেল
রহে চিহ্ন অন্যাঙ্গুল।
নাসা চক্ষু লাল, বদন অমল
দন্ত যেন কন্দ ফুল।।
মুখে নাহি ক্ষত, কমল শোভিত
অধরে মধুর হাসি।
অধরোষ্ট প্রান্তে, কুন্দসম দন্তে
হাসিতে খসিত শশী।।
শরীর মাঝেতে, স্থানেতে স্থানেতে
ইচ্ছায় করিত ক্ষত।
এক ঘা সারিত, আর ঘা করিত
রক্ত ক্লেদ বহির্গত।।
কখন নৌকায়, গৃহস্থ আলয়
যান কখন কখন।
ক্ষুধার সময়, হইত যথায়
তথা করিত ভোজন।।