Page: 118

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১১৮
রঘু কীর্তুনের বেটা গোলোক কীর্তুনে।
ওর মত ঠাকুর ত’ আমরা মানিনে।।
কোথাকার বেটা এসে ঠাকুর কোলায়।
ওর মত ঠাকুরে আমার জুতা বয়।।
ওর মত লোক মোর নার দাঁড় বায়।
ওর মত লোক মোর পা ধুয়ে বেড়ায়।।
যত সব মূর্খ ভেড়ে ঠাকুর পেয়েছে।
ঠাকুরালি খাটে না এ গোলোকের কাছে।।
ও ঠাকুর যে মানুষ আমি সে মানুষ।
আমি বুঝি নারী অই ঠাকুর পুরুষ।।
যা থাকে কপালে হ’বে হয় হো’ক ক্লেশ।
কোথা হ’তে স্বয়ং এল কলি অবশেষ।।
আত্ম পরিজন আর প্রতিবাসী লোকে।
সবে মিলে ব’লে ক’য়ে বুঝায়ে গোলোকে।।
এ সময় গৌরব তোমার ভাল নয়।
অহংকার ছাড় এই অন্তিম সময়।।
অসুরত্ব বীরত্ব এখানে পরিহরি।
আত্মশুদ্ধ করিয়া বলহ হরি হরি।।
ঠাকুরের নাম হরি দেয় হরিনাম।
ইহকালে পরকালে পুরে মনোস্কাম।।
নহে দেব দেবী নহে কোন রূপ বার।
দেখিলে প্রত্যয় হ’বে স্বয়ং অবতার।।
হীরামন ম’রেছিল বাঁচাইল প্রাণে।
গোলোক বদন বাঁচিয়াছে প্রভু-গুণে।।
শ্রীহরিচাঁদের গুণে বলিহারি যাই।
ছিল ক্ষুদ্র নমঃশূদ্র হ’য়েছে গোঁসাই।।
যাইতে হইবে শুদ্ধ ভকতি করিয়া।
মন যদি নাহি লয় আসিও ফিরিয়া।।
গোলোক কহিছে যদি ভকতি করিব।
অভক্তি অন্যায় কথা কেনবা কহিব।।
ভক্তিমন্ত হ’লে মুক্তি থাকে তার সাথ।
গোলোকে তরা’লে বলি গোলোকের নাথ।।
দুর্বাক্য আমি যে কত বলেছি তাহারে।
অন্তর্যামী হ’লে তাহা জেনেছে অন্তরে।।
সে কেন করিবে দয়া এ হেন পাপীরে।
মার খেয়ে দয়া করে তাহা হ’লে পারে।।
গোলোক কহিছে তবে ল’য়ে চল মোরে।
দেখি তোর সে ঠাকুর কি করিতে পারে।।
কর্মক্ষেত্রে ভবজীব ভোগে কর্ম ফের।
সারিতে না পারে যদি শেষে পা’বে টের।।
যদি বলিবারে পারে হৃদয়ের কথা।
তবে তার শ্রীচরণে নমিব এ মাথা।।
চারি পাঁচ জন ধরে নিল নৌকা পরে।
শয়ন অবস্থা ধরে নিল খালা পারে।।
হাতে হাতে ধরাধরি শূন্যে শূন্যে রাখে।
ঠাকুরের কাছে গিয়া ফেলিল গোলোকে।।
ঠাকুর আছেন বসে উত্তরের ঘরে।
গোলোকে রাখিল নিয়া পিঁড়ির উপরে।।
প্রভু বলে ও কারে করিলি আনয়ন।
এ নাকি শ্মশান ভূমি করিবি দাহন।।
মরা এনে কেন ফেলাইলি মোর কাছে।
মরা মাদারের গাছ গাজীর নামে বাঁচে।।
নিয়া যা তোদের মরা দূরে নিয়ে রাখ।
গাজী নামে সির্নি মেনে এক মনে থাক।।
সঙ্গে যারা এসেছিল করে পরিহার।
তারা কহে হাজী গাজী তুমি সর্বসার।।
তুমি ওঝা তুমি বৈদ্য তুমি ধন্বন্তরী।
তুমি কৃষ্ণ তুমি বিষ্ণু তুমি হর হরি।।
ঠাকুর বলেন আমি কিসের মানুষ।
বিদ্যাবুদ্ধিহীন আমি অতি কাপুরুষ।।
রঘু কীর্তুনের বেটা গোলোক কীর্তুনে।
আমি কি মানুষ বাপু উহার ওজনে।।
মোর মত লোক ওর পা’র জুতা বয়।
মোর মত লোক ওর পা ধুয়ে বেড়ায়।।
মোর মত লোক ওর নার দাঁড় বায়।
মোর মত লোক ওর মোট বয়ে খায়।।
কলি কালে নাহি কোন স্বয়ং অবতার।
নলীয়া বারের পর বার নাহি আর।।
কোথা হ’তে আসিয়াছি ঠাকুর কিসের।
ব্যাধি যদি নাহি সারে শেষে পা’ব টের।।
শুনিয়া বিস্মিত হৈল গোলোকের মন।
উঠিতে না পারে বলে দেহ শ্রীচরণ।।
অপরাধ করিয়াছি বলে জানা’ব কি।
আমি দৈত্য মদে মত্ত পাষণ্ডী দেমাকী।।
ব্রহ্মাণ্ডেতে নাহি আর মো সম পাতকী।
সুখে মত্ত হইয়া হয়েছি চির দুঃখী।।
যারা মোরে আনিয়াছে তোমার নিকট।
তাহাদের সঙ্গে আমি করিয়াছি হট।।
সবে বলে তুমি নাকি স্বয়ং অবতার।
ত্যক্ত হ’য়ে তাদের করেছি কটুত্তর।।