Page: 233

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ২৩৩

এই আমি তোর দেহে করিনু প্রবেশ।
তুই রাজা হরিচাঁদ ভক্ত রাজ্য দেশ।।
চিরদিন তরে মম এই মনোসাধ।
কুটি নাটি কাটি দেশ করিবি আবাদ।।
পাগলে পাইয়া অগ্নি নির্বাপিত হ’ল।
পুনরায় নারিকেলবাড়ী চলে গেল।।
ভ্রমিত পাগল চাঁদ যেই যেই বাড়ী।
মহানন্দ ভ্রমে তথা লাহিড়ী লাহিড়ী।।
শালনগরের মধ্যে পালপাড়া গ্রাম।
তথায় বসতি তারাচাঁদ পাল নাম।।
ওঢ়াকাঁদি মতো সম্প্রদায় যত ছিল।
সবাকার নিমন্ত্রণ তথায় হইল।।
তারাচাঁদ ছোট পাগলের কাছে গিয়ে।
দিন ধার্য ক’রে এল আনন্দিত হ’য়ে।।
মতুয়ার ভীড় হ’ল পাগলের সঙ্গেতে।
তিন শত মতুয়া মিলিল একসাথে।।
সবে হরি হরি বলি বাহির হইল।
তরাইল বাজারে সকলে উপজিল।।
পাঁচবার খেয়াপার মতুয়া সকল।
নদীমধ্যে এপার ওপার হরিবোল।।
সে দিন বাজার পড়ে মেলা মিলেছিল।
গান সাঙ্গ হ’য়ে মেলা ভাঙ্গিয়া চলিল।।
একেত মেলার মাঠে ছিল গণ্ডগোল।
তাঁর সঙ্গে মিশে গেল সুধা হরিবোল।।
দোকানী পশারী যত দোকানে দোকানে।
সবে বলে হরি হরি ওই নাম শুনে।।
বাজারে বসতি বড় বড় মহাজন।
ঘরে ঘরে সবে করে নাম সংকীর্তন।।
মেলায় এসেছে লোক ফিরে বাড়ী যায়।
ঘাটে পথে তারা সবে হরিনাম লয়।।
পার হয় যত ম’তো খেয়াঘাটে রই।
অন্য নাম নাহি মুখে হরিনাম বই।।
মেলার অধ্যক্ষ যত তারা বলে একি।
ভেঙ্গেছিল মেলা কি পুনশ্চ হল নাকি।।
কেহ কেহ ঘুরিতেছে নাগর দোলায়।
ঘূর্ণমান হ’য়ে ভব নদীর গোলায়।।
তাহারা চাহিয়া দেখে ঘাটের দিকেতে।
মতুয়ারা হরি বলে প্রেমানন্দ চিতে।।
তারা সবে হরি বলে নাগরদোলায়।
অধে হরি উর্দ্ধে হরি তরঙ্গ গোলায়।।
ঝাঁকি লেগে দোলা ভাঙ্গে এই ভয় করে।
দোলা আলা লোক সব নামাইল পরে।।
ভূমিতে নামিয়া লোক হাতে দিয়ে তালি।
নদীর কিনারে যায় হরি হরি বলি।।
বেশ্যারা ছিলেন জলে স্নান করিবারে।
কেহ বা বাজারে কেহ কিনারে বা ঘরে।।
ওপারে এপারে হরিধ্বনি করে সব।
খেয়ানায় নদীমধ্যে উঠিয়াছে রব।।
তাহা শুনি বেশ্যাগণ বলে ধন্য ধন্য।
হরি হরি বলে তারা হ’য়ে জ্ঞানশূন্য।।
অশ্রুপূর্ণ শিবনেত্র হরিনাম লয়।
মধ্যে হুলুধ্বনি করে জয় জয় জয়।।
এই মতে পার হ’ল মতুয়ারগণ।
নাচিয়া গাহিয়া সবে করিল গমন।।
মেলার বাজারে হ’ল কিমাশ্চর্য লীলা।
রচিল তারকচন্দ্র পাগলের খেলা।।


স্বামীর শালনগর গমন।

পয়ার।

হাসে গায় নাচে কাঁদে মতুয়ার দল।
কুন্দসী গ্রামেতে এসে উঠিল সকলে।।
শ্রীঅদ্বৈত দীননাথ কালাচাঁদ পাল।
তিন বাড়ী পরিপূর্ণ মতুয়ার দল।।
কতকাংশ চলে গেল জয়পুর গ্রাম।
তারকের বাড়ী ঘিরে করে হরিনাম।।
কুন্দসীর তিন বাড়ী জুড়িয়া বসিল।
মাধ্যাহ্নিক স্নানাদি ভোজন সমাধিল।।
ভোজনের পরে দিয়া হরি হরি ভীড়।
আচমন করি সবে হইল বাহির।।
নাচিতে গাইতে সবে প্রেমেতে বিভোর।
উপনীত হ’ল পালপাড়া শালনগর।।
নামেতে মাতিয়া সবে বাহ্যজ্ঞান হারা।
বৈবর্ণ পূলক স্বেদ চক্ষে অশ্রুধারা।।
দিঘলিয়াবাসী মধুসূদন ঠাকুর।
চক্রবর্তী উপাধি ভজনে সুচতুর।।
তার এক পুত্র মাত্র অক্ষয় নামেতে।
ব্রহ্মত্ব ত্যজিয়া মিশিলেন অই মতে।।