Page: 247

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ২৪৭

এইসব আশ্চর্য কার্যে বিস্ময় মানিল।
তারপর শ্রীশ্রীধাম ওঢ়াকাঁদি গেল।।
উত্তরিল ওঢ়াকাঁদি মনের আহলদে।
সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করে গুরুচাঁদ পদে।।
মনের বাসনা যাতে ধন বৃদ্ধি হয়।
মনে মনে ভাবিলেন যাত্রার সময়।।
দেখা মাত্র গুরুচাঁদ বলিল বচন।
হরিবল হরি তব বাড়িবেক ধন।।
মনো কথা যত তার মনে মনে ছিল।
গুরুচাঁদ শ্রীচরণে সব নিবেদিল।।
ক্রমেতে সম্পত্তি তার বাড়িতে লাগিল।
হরিচাঁদ নামে বহু লোক মাতাইল।।
কতক খাতক হ’ল বহু শিষ্য হল।
অন্য জাতি স্বজাতীয় লোক মাতাইল।।
অর্জুন মাতিল আর নাগর বণিক।
হরিচাঁদ প্রেমে লোক মাতিল অধিক।।
হরিচাঁদ প্রেমে গুরুচাঁদের ভাবেতে।
মাতাইল পাল বংশ অনেক গ্রামেতে।।
পালপাড়া শুক্তাগ্রাম আর কুলুখালি।
ঘসিবেড়ে দিঘলীয়া মাতে হরি বলি।।
হরিপালের চরিত্র বিচিত্র অদ্ভুত।
শ্রবণে কলুষনাশ হারে রবিসুত।।
যেবা শুনে গায় হয় দুস্তারে নিস্তার।
হেন মধু পিও সাধু জন্ম নাহি আর।।
হরি প্রেম সাগরে সাঁতারে সাধুলোক।
শ্রীহরি চরিত্র সুধা ক্ষুধার্ত তারক।।


ভক্তগণ প্রমত্ত।

পয়ার।

মল্লকাঁদি নিবাস ছাড়িয়া মৃত্যুঞ্জয়।
কালীনগরেতে বাস প্রভুর আজ্ঞায়।।
যে কালেতে মৃত্যুঞ্জয় এল এই দেশে।
সূর্যনারায়ণ মত্ত প্রথমত এসে।।
তারপরে মাতিল তারক সরকার।
কাশীমাকে মা বলিয়া পদ কৈল সার।।
তারকের জন্মদাতা পিতা কাশীনাথ।
মাতা অন্নপূর্ণা দেবী তস্য গর্ভজাত।।
গুরু মৃত্যুঞ্জয় গুরুমাতা কাশীশ্বরী।
নামে নামে মেশামেশি এক জ্ঞান করি।।
আরো হরিচাঁদ নামে গুণ প্রকাশিয়া।
প্রথমতঃ হরিপদ দিল দেখাইয়া।।
উপদেষ্টা গুরু বলি মানিল তারক।
তাহা দেখি এদেশে মাতিল বহুলোক।।
ব্রাহ্মণ কায়স্থ পাল কুণ্ডু নমঃশূদ্র।
জাতি নানাবিধ যত ছিল ভদ্রাভদ্র।।
মাতিল চন্দ্র মল্লিক অতি নিষ্ঠারতি।
হ’ল যেন কাশীমার গর্ভজ সন্ততি।।
মত্ত রাধানাথ চন্দ্র মল্লিকের শিশু।
খাসিয়ালী নিবাসী নবীন চন্দ্র বসু।।
পিরিতিরামের পুত্র দক্ষিণ বাড়ীতে।
কুলিনের বংশে জন্ম কায়স্থ কুলেতে।।
কাশীমাকে মা বলিয়া পূর্ণ মাতৃভাব।
হরিপাল সঙ্গেতে হইল সখ্যভাব।।
তারকেরে গুরু মানি প্রিয় শিষ্য হ’ল।
সাধনা দেবীকে গুরু মা বলে ডাকিল।।
শ্রীঅক্ষয় চক্রবর্তী পবিত্র ছিণ্ডিয়ে।
হরিপ্রেমে মেতে গেল উদাসীন হ’য়ে।।
মহানন্দ আজ্ঞাক্রমে তারকে ধরিল।
আত্ম সমর্পণে গুরু বরণ করিল।।
সাধনাকে গুরুমাতা করিল বরণ।
“কামবীজ” ”কাম গায়ত্রী” ক’ল গ্রহণ।।
গাছবাড়ী গ্রামে মাতে চন্দ্র রামধন।
বহুজন মাতাইল তারা দুইজন।।
মাহিষ্য মাধব দাস গাছবেড়ে গ্রামে।
সিকদারোপাধী মত্ত হরিচাঁদ প্রেমে।।
হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বলে সারে রোগী।
গুরুচাঁদ প্রিয় ভক্ত গাঢ় অনুরাগী।।
মনপ্রাণ সপিয়াছে গুরুচাঁদ পায়।
স্নান সন্ধ্যা বিবর্জিত প্রেমোন্মত্ত কায়।।
মাতিল মাহিষ্য দাস দাসের ময়াল।
তার মধ্যে মাধব করেন ঠাকুরাল।।
কপালী ময়াল মধ্যে করে ঠাকুরালি।
যোগানিয়া গ্রামে ভক্ত নিমাই কপালী।।
তার প্রতি মাধবের দয়া উপজিল।
তার বাড়ী ঠাকুরের আসন পাতিল।।
শ্রীগুরুচাঁদের নামে করিল ঔদাস্য।
তাহারা সকলে হ’ল তারকের শিষ্য।।
মাতিল কালিয়া গ্রামে বিপ্র পঞ্চানন।
বড় অধিকারী তিনি ভকত সুজন।।