Page: 034

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ৩৪
একদিন আমার পিতার গুরু এল।
গোঁসাই বসিয়া কত শাস্ত্র শুনাইল।।
শুনিলাম কাত্যায়নী পূজে ব্রজঙ্গনা।
মাধব মাধব পয়ে পুরা’ল বাসনা।।
দয়মন্তী সতী শক্তি আরাধনা ফলে।
হংসমুখে বার্তা শুনি পতি পেল নলে।।
ভদ্রাবতী সতী বাহু রাজার নন্দিনী।
পাইল শ্রীবৎস পতি দৈববাণী শুনি।।
সাবিত্রীর ব্রত করে সতী সে সাবিত্রী।
মৃত্যুপতি জিনে, বাঁচাইল মৃত পতি।।
সাধনা বিহনে ভাল পতি মিলে কার।
আয় মোরা পূজা করি সর্বমঙ্গলার।।
বালিকাগণের সহ হইয়া একত্র।
আনিতেন দূর্বাদল তুলসীর পত্র।।
গৃহ হ’তে চেয়ে নিত আতপ তণ্ডুল।
তুলে নিত গ্রামে পেত যত যত ফুল।।
কুষ্মাণ্ড কাচড়া লাউ কলম্বী ধুতুরা।
মরিচ বেগুন বন্যা ফুল কেওয়া তারা।।
ফাল্গুনী সংক্রান্তি দিনে দ্বিজমন্ত্র বিনে।
পূজিতেন কাত্যায়নী ল’য়ে বালাগণে।।
তুলসী চন্দন মাখি’ যতন করিয়া।
কালী লও ব’লে দিত অঞ্জলী পুরিয়া।।
খেলিতেন ল’য়ে যত গ্রাম বালিকায়।
ইহার অগ্রেতে বাল্য খেলার সময়।।
বালিকা আচারে আলো তণ্ডুল বিহনে।
বালি দিয়া নৈবিদ্য সাজা’ত বালাগণে।।
বলিতেন এই মত তোরা সবে সাজা।
আয় লো ভগিনী মোরা খেলি পূজা পূজা।।
এরূপে পৌগণ্ডকাল হ’য়ে এল গত।
এমন সময় খেলে সাবিত্রীর ব্রত।।
কখন কখন ল’য়ে বালিকার গণ।
ভক্তিভাবে পূজিতেন দেব নারায়ণ।।
অম্বরীষ কন্যা শ্রীমতীরে তুমি নাও।
সেই মত দয়াময় মোরে ল’য়ে যাও।।
লোচন শুনিল দৈবে বাল্যখেলার ছলে।
যশোমন্ত পুত্র হরি বিশাকে বাঁচা’লে।।
চিত্ত চমকিত হ’ল মানিল বিস্ময়।
এ ছেলে ঈশ্বর অংশ সামান্য ত নয়।।
হরির সঙ্গেতে দিলে শান্তির বিবাহ।
ইহকাল পরকাল হইবে নির্বাহ।।
লোচন সফলাডাঙ্গা আসিয়া আসিয়া।
যশোমন্তে কথা কয় হাসিয়া হাসিয়া।।
তোমার মধ্যম পুত্র আমি তাঁরে চাই।
কন্যা দিয়া আমি তাঁরে করিব জামাই।।
শুনি যশোমন্ত বড় হ’ল আনন্দিত।
বলে এই কর্ম কর যে হয় উচিত।।
আসা যাওয়া দেখা শুনা হয় রীতিমতে।
কন্যাদান করিলেন শুভ সু-লগ্নেতে।।
যশোমন্ত বিয়া দিল পাঁচটি নন্দন।
অচিরাৎ লোকলীলা কৈল সম্বরণ।।
একদিন গাত্র শীত হৃদিকম্প হয়।
মুহূর্তেক বসিলেন তুলসী তলায়।।
জপিলেন ষোল নাম বত্রিশ অক্ষর।
সজ্ঞানেতে দেহত্যাগী হ’ল লোকান্তর।।
পুষ্পরথে চড়ি সুখে গোলোকে গমন।
যশোমন্ত প্রীতে হরি বল সর্বজন।।
হরি পিতা লোকান্তর সমাধি শুনিলে।
পুলকে গোলোকে যাবে হরি হরি বলে।।
অন্তকালে হবে তাঁর হরি কর্ণধার।
বিরচিল রসরাজ কবি সরকার।।
চতুর্থ তরঙ্গ।
বন্দনা
জয় জয় হরিচাঁদ জয় কৃষ্ণদাস।
জয় শ্রীবৈষ্ণব দাস জয় গৌরী-দাস।।
জয় শ্রীস্বরূপদাস পঞ্চ সহোদর।
পতিতপাবন হেতু হৈলা অবতার।।
জয় জয় গুরুচাঁদ জয় হীরামন।
জয় শ্রীগোলকচন্দ্র জয় শ্রীলোচন।।
জয় জয় দশরথ জয় মৃত্যুঞ্জয়।
জয় জয় মহানন্দ প্রেমানন্দ ময়।।
জয় নাটু জয় ব্রজ জয় বিশ্বনাথ।
নিজ দাস করি মোরে কর আত্মসাৎ।।
গ্রন্থকারের প্রতি গ্রন্থ লিখিবার আদেশ।
পয়ার।
মৃত্যুঞ্জয় দশরথ এই দুইজনা ।
বলিলেন লীলামৃত করিতে রচনা ।।