Page: 167
শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৬৭
বাটী হ’তে আসিলেন ঘাটে দৌড়াইয়া।
খোয়া নায় প্রাতেঃ এসে উঠিল লাফিয়া।।
লাফিয়া লাফিয়া যান সকল গুরায়।
বলে আমি পারে যাই কে কে যাবি আয়।।
পার হ’য়ে ক্ষণেক চলিল দ্রুতগতি।
ক্ষণেক হাঁটিয়া বলে নাহি গতিশক্তি।।
চলিতে লাগিল শেষে অতি ধীরে ধীরে।
বসিয়া পড়িল শেষে হোগলা ভিতরে।।
ঘুমাইয়া পড়িলেন বনের ভিতরে।
তারকের উরু পাতি দিলেন শিয়রে।।
ক্ষণ থাকি নিদ্রা অন্তে উঠিয়া দাঁড়ায়।
ইতিনা গ্রামের মধ্যে দৌড়াইয়া যায়।।
এক বৃক্ষতলে বসি কহিছে গোঁসাই।
উঠে যাইবার শক্তি আর মোর নাই।।
বেদনা উঠিল পেটে নাহি সরে বাক্।
ফুলিয়া উঠিল পেট মধ্যে এক চাক।।
তারক কহিছে তবে এস মোর কোলে।
জনম স্বার্থক করি দেশে যা’ব চলে।।
পাগলে করিয়া কোলে তারক চলিল।
গোঁসাই কহিছে মোর শ্বাস বন্ধ হল।।
তারপর তারক গোলোকে নিল স্কন্ধে।
বলে মোর মাথা ধরি থাকহ আনন্দে।।
স্কন্ধে করি কিছু পথ চলিল হাঁটিয়া।
গোঁসাই কহিছে যেন যাই শূন্য হৈয়া।।
তাহা শুনি পাগলেরে ভূমে নামাইল।
সঙ্গে যত বস্ত্র ছিল পেটে জড়াইল।।
কটির উপরে রাখিলেন উচ্চ করি।
গোস্বামীকে বসাইল তাহার উপরি।।
অতি সাবধানে তারপরে বসাইয়ে।
হেলিয়া গোঁসাইজীকে পৃষ্ঠেতে তুলিয়ে।।
হাঁটিয়া চলিল পৃষ্ঠপরে রাখি ছাতি।
চলিছেন হরি বলি অতি দ্রুতগতি।।
ইতিনা ছাড়িয়া যান করফার মাঠে।
সম্মুখে মল্লিকপুর গ্রামের নিকটে।।
হেনকালে পৃষ্ঠ হ’তে লম্ফ দিয়া পড়ি।
পুনঃলম্ফ দিল হরি বলে ডাক ছাড়ি।।
হরি হরি বলিয়া মারিল পুনঃলম্ফ।
পদভরে সেই স্থানে হৈল ভূমিকম্প।।
দৌড়াইয়া যায় যেন ঘূর্ণ বায়ু পাক।
দেখিয়া পথিক লোকে হইল অবাক।।
তারক দৌড়িয়া যায় উর্দ্ধমুখ হ’য়ে।
কোথায় গোস্বামী গেল না পায় খুঁজিয়ে।।
বড়ই বিমর্ষ হ’য়ে লাগিল হাঁটিতে।
অন্য এক ভদ্রলোক এসে নিকটেতে।।
সে বলিল এক ব্যক্তি অতি দৌড়াদৌড়ি।
বলিল যাইব আমি তারকের বাড়ী।।
আসিতেছে তারক কহিও তার স্থান।
লইয়া তিনটি আম্র যেন বাড়ী যান।।
অমনি বাজারে গিয়া তিন আম্র ল’য়ে।
বাড়ী গিয়ে দেখে আছে গোস্বামী বসিয়ে।।
অমনি দিলেন আম গোস্বামীর ঠাই।
পাইয়া অমৃত ফল খাইল গোঁসাই।।
পাড়া হ’তে নারীগণে ডাকিয়া আনিল।
আত্মবন্ধু বর্গ যত মেয়েলোক ছিল।।
তারক বসন গলে বিনয় করিয়া।
সবার নিকটে কহে কাঁদিয়া কাঁদিয়া।।
যখন তোমরা পাও কাজে অবকাশ।
আসিয়া সকলে থেকো গোস্বামীর পাস।।
পায় ধরি সবে এসে এখানেতে তিষ্ঠ।
আমার গোঁসাই যেন নাহি পায় কষ্ট।।
তারকের ভার্যা নাম চিন্তামণি সতী।
বিধবা পিস্তত ভ্রাতৃবধূ সরস্বতী।।
সাধনা নামিনী নব মণ্ডলের কন্যা।
হরিচাঁদ ভক্তি পাত্রী সেবিকা সুধন্যা।।
ধর্মনারায়ণের স্ত্রী ঈশানের মাতা।
সীতানাথ মাতা প্রাণ কৃষ্ণের বণিতা।।
দিনমণি তার নাম পাটনীর মেয়ে।
এইসব দিল পরিচারিকা করিয়ে।।
এই কথা বলিয়ে দিলেন জনে জনে।
অন্য অন্য যত মেয়ে আসে সেই স্থানে।।
গোঁসাই যখন যাহা চাহিতে আশায়।
মন জেনে যোগাইবা তোমারা সবায়।।
যদি বল মন মোরা জানিব কেমনে।
নিপুণ করিয়া মন রাখিও চরণে।।
যদি মন নাহি জান যখন যা চায়।
জ বলিতে জল এনে দিও সে সময়।।
হুঁকা চাহিবারে যদি করেন আশায়।
হুঁ বলিতে হুঁকা এনে দিও সে সময়।।
তৈল চাহিবার যদি করেন মনন।
ত বলিতে তৈল এনে করিও মর্দন।।