Page: 199

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৯৯

দেখিল গোক্ষুর সাপ গেল দৌড়াইয়ে।
বিষের জ্বালায় চক্ষু গেল লাল হ’য়ে।।
তাহার অগ্রজ ভ্রাতা সে উমাচরণ।
ব্যস্ত হ’য়ে বলে ওঝা আন একজন।।
নোয়া ভাই তাহার যে রামচাঁদ ছিল।
ইতিপূর্বে সর্পাঘাতে সে জন মরিল।।
ইনিও মরিল বুঝি সাপের দংশনে।
শীঘ্র আন ওঝা নহে বাঁচা নাহি প্রাণে।।
গোলোক ওঝা আনিতে ধাইয়া চলিল।
দেখে সূর্যনারায়ণ নিষেধ করিল।।
যে তামাক দিয়াছিল পাগল গোঁসাই।
খাইলে সারিবে বিষ আন তাই খাই।।
ঝাঁপি হ’তে তামাক বাহির করে দিল।
তামাক গালেতে দিয়া জল খাওয়াল।।
নেশা হ’য়ে সেইভাবে দণ্ড চারি ছিল।
অমনি সাপের বিষ নির্বিষ হইল।।
স্নান করি আহার করিল ততক্ষণ।
বেদগ্রামে কবিগানে করিল গমন।।
তামাক দিলেন মুখে নির্বিষ বলিয়ে।
গোক্ষুরের খর বিষ গেল নিশ হ’য়ে।।
শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত ভক্তের আখ্যান।
রচিল তারক ভক্ত চরিত্র সুগান।।


প্রেম প্লাবন ও বিনা রতিতে কর্ণের জন্ম

পয়ার

বহিল প্রেমের বন্যা ওঢ়াকাঁদি হ’তে।
দ্বিজ মুচি শৌচাশুচি ডুবে গেল তাতে।।
আইল প্রেমের বন্যা বীজ হ’ল নাশ।
তাহা দেখি পঞ্চ জনের বাড়িল উল্লাস।।
ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বৈশ্য শূদ্র চারি জাতি।
রেচক পূরক কুম্ভকাদি নেতি ধৌতি।।
শাক্ত শৈব গাণপত্য বৈষ্ণব তাপন।
সবে করে সম পুত প্রণয় প্লাবন।।
কল্‌ কল্‌ শব্দ ওঢ়াকাঁদি গোলাঘাটে।
হতাশ নিঃশ্বাসে সদা সে তুফান উঠে।।
ক্ষত্র-বংশ জাত রাম ভরত ত্যজি দেশ।
পাদপদ্ম ভৃঙ্গ বিশ্বনাথ দরবেশ।।
দেশে কি বিদেশ বেগে চলিল তুফান।
যবন পাবনকারী হরিপ্রেম বাণ।।
রাউৎখামার আর গ্রাম মল্লকাঁদি।
হরি দরশনে সবে যায় ওঢ়াকাঁদি।।
নারিকেলবাড়ী মাতে সহ সাহাপুর।
সুরগ্রাম বারখাদিয়া গান্দিয়াসুর।।
হরমোহন বাড়ই গোপাল বিশ্বাস।
ঠাকুরে ঈশ্বর বলি করিল প্রকাশ।।
গোপাল নেপাল তারা দু’টি সহোদর।
গোলোক গোঁসাই জয় গায় নিরন্তর।।
ঘোষালকাঁদি নিবাসী মহিমাচরণ।
সকলে মাতিয়া করে নাম সংকীর্তন।।
ঠাকুর দেখিয়া তারা প্রেমেতে মাতিয়া।
নয়ন মুদিয়া রাখে হৃদয় ধরিয়া।।
মল্লকাঁদি গ্রামবাসী মাতিল সকল।
সকালে বিকালে বলে জয় হরিবোল।।
সেই সব মহাভাব অগ্রে লেখা আছে।
হীরামন যেইরূপ মাতিয়া উঠিছে।।
সেই সময়েতে যত মহাভাব হয়।
মৃত্যুঞ্জয় ভবনেতে আগে লেখা যায়।।
শ্রীনিতাই চৈতন্য অদ্বৈত তিন ভাই।
তাহাদের প্রেমভক্তি তুলনাই নাই।।
নিত্যানন্দ পুত্র যিনি মৃত্যুঞ্জয় নাম।
চৈতন্যের দুটি পুত্র অতি গুণধাম।।
রামকৃষ্ণ জ্যেষ্ঠ ছোট রামনারায়ণ।
হরিচাঁদ গতপ্রাণ তারা দুই জন।।
এক মন এক ভাব নাহি ব্যতিক্রম।
ঠাকুরের ভক্ত বৃন্দাবনের নিয়ম।।
রামদেব মহাদেব অদ্বৈতের পুত্র।
ঠাকুরের ভক্ত হয় পরম পবিত্র।।
এই বাড়ী সবে মিলে হ’ল হরিভক্ত।
মৃত্যুঞ্জয় সঙ্গে মত্ত সকলে থাকিত।।
রামকৃষ্ণ নির্জনেতে যখন থাকিত।
আরোপে ঠাকুররূপ নিরীক্ষে দেখিত।।
ওঢ়াকাঁদি যে ভাবেতে ঠাকুর থাকিত।
বাটীতে থাকিয়া রামকৃষ্ণ তা জানিত।।
রামনারায়ণ করে ঠাকুরের ধ্যান।
একদিনে ঠাকুর বলেন তার স্থান।।
শোন বাছা তোরে নিতে পারিবে না যম।
সপ্তবর্ষ অনিদ্রিত কর এ নিয়ম।।
তাহা শুনি নিদ্রা ত্যজে মনে হ’য়ে হর্ষ।
মহাযোগী নিদ্রা নাহি যান সপ্তবর্ষ।।