Page: 124

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১২৪
বলে ওহে মহাপ্রভু হইয়াছে ভাল।
বাড়ী পুড়ে গেছে এবে লক্ষ্মীপুর চল।।
লক্ষ্মীকান্ত চল যাই লক্ষ্মীপুর গ্রাম।
পরম আনন্দে সবে ল’ব হরিনাম।।
পোড়া বাড়ী শীতল করিতে কেহ নাই।
সে জন্য তোমাকে নিতে আসি দু’টি ভাই।।
চল চল মহাপ্রভু ল’য়ে দলবল।
কৃপাবারি সিঞ্চণে করুণ সুশীতল।।
শুনি মহাপ্রভু আর বিলম্ব না কৈল।
লক্ষ্মীপুর গ্রামে হরি উপনীত হৈল।।
ঠাকুরকে ল’য়ে বাড়ী যায় দু’টি ভাই।
বলে হরি বলরে সুখের সীমা নাই।।
প্রভু সেবা শুশ্রূষাদি করে ভালোমতে।
পাঁচসিকা প্রণামী দিলেন শ্রীপদেতে।।
একজোড়া নববস্ত্র আনিয়া তখন।
আদরে চাদর ধুতি করিল অর্পণ।।
প্রেমানন্দে ভাসে নাই সুখের অবধি।
প্রভুকে রাখিয়া এল ক্ষেত্র ওঢ়াকাঁদি।।
বিংশ জন ভক্ত ছিল মহাপ্রভু সঙ্গে।
আসিতে যাইতে নাম করে নানা রঙ্গে।।
শ্রীহরির কৃপাদৃষ্টি যাহার উপর।
সংসারের চিন্তা আর থাকে না তাহার।।
আদেশ করিল প্রভু ভক্তগণ প্রতি।
সকলে করহ দয়া বুধইকে সম্প্রতি।।
বুধইর বাড়ী পূর্বে যত ঘর ছিল।
ঠাকুর কৃপায় তার দ্বিগুণ বাড়িল।।
পোড়া ধান্যে অবশেষে যাহা কিছু ছিল।
তাহাতে সংসার ব্যয় স্বচ্ছন্দে চলিল।।
তারক পারকহেতু দয়িত পাগল।
কবি কহে হরিবল যাবে ভবগোল।।
মহানন্দ চিদানন্দ গ্রন্থ বিরচিত।
ভূলোক আলোক শ্রীগোলোক পুলকিত।।
বুদ্ধিমন্ত বৈরাগীর চরিত্র কথন।
পয়ার।
পাগলের বরেতে সাহসে করি ভর।
আর এক প্রস্তাব লিখিব অতঃপর।।
বুদ্ধিমন্ত বৈরাগীর চরিত্র পবিত্র।
রচনা করিতে মম শক্তি নাই তত্র।।
জয়নগর বন্দরে গিয়াছে বুধই।
হাই ছাড়ে সদা বাবা হরিচাঁদ কই।।
জোনাসুর কুঠির উপর দিয়া পথ।
সে পথে যাইতে দেখে বেগুনের ক্ষেত।।
একেত’ কার্ত্তিক মাস কুঠির উপরে।
নীল, গাজা খড়ি পোড়াইত যথাকারে।।
বহুদিন প’চে প’চে মাটি হ’ল সার।
নূতন বেগুন গাছ তাহার উপর।।
ধ’রেছে বেগুন মাত্র তোলা নাহি আর।
নূতন বেগুন সব দেখিতে সুন্দর।।
বুনোজাতি তারা ক্ষেত করিয়াছে ভালো।
নব নব বেগুনে করেছে ক্ষেত আলো।।
দেখি দুই তিন বন্দে বেগুন উত্তম।
তার মধ্যে এক বন্দে অতি মনোরম।।
বুনোজাতি নাম তার বুধই সর্দার।
তাহার বেগুন ক্ষেত বড়ই সুন্দর।।
বুদ্ধিমন্ত তাহা দেখি না পারে রহিতে।
যেন কত দায়, নারে সুস্থির হইতে।।
হইল তাহার মনে এভাব উদয়।
এ বেগুন লাগাইব প্রভুর সেবায়।।
বাটী গিয়া বড়শী দিয়া কৈ মাছ ধরি।
সেই মাছ আর এই বেগুন তরকারী।।
লক্ষ্মীমাতা করে যদি ব্যঞ্জণ রন্ধন।
জগন্নাথ খেলে মম সফল জীবন।।
কেমনে বেগুন নিব অস্থির ভাবিয়া।
হেনকালে এক নারী উপস্থিত গিয়া।।
বুধই তাহাকে বলে শুন ওগো মাতা।
কাহার বেগুন এই জান সেই কথা।।
নারী বলে জানি আমি বার্তাকুর বার্তা।
বুধই বুনোর ক্ষেত আছে তার মাতা।।
ওই দেখা যায় সেই বুধইর বাড়ী।
বুধই বাড়ীতে নাই বাড়ী আছে বুড়ি।।
বার্তা শুনি বুদ্ধিমন্ত চলে গেল তথা।
যথায় বসিয়া আছে বুধইর মাতা।।
বুড়ির চরণে গিয়া করিল প্রণাম।
বলে মাতা মোর হয় বুদ্ধিমন্ত নাম।।
তব ছেলে বুদ্ধিমন্ত আমিও বুধই।
আমি তব ছেলে মোর মিতা গেছে কই।।
মিতা বুঝি বাড়ী নাই খেতে কিবা আছে।
শীঘ্র মোরে খেতে দাও ক্ষুধা হইয়াছে।।