Page: 019

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৯

রন্ধন করি শাল্যন্ন , ঘৃত মিশ্রিত ব্যাঞ্জন ,
ডাল্‌না শাক শুক্ত লাবেড়ায় ।।
দক্ষিণ মুখ করিয়ে, ঠাকুরে ফিরায়ে ল,য়ে ,
পুরোহিত বসিল পূজায় ।
তাম্র রজতের পাতে , কতই মিষ্টান্ন তাতে ,
লিখিতে পুস্তক বেড়ে যায় ।।
নয়ন মুদ্রিত ক,রে , ভোগ নিবেদিল পরে ,
ভোগ রহে বাসুদেব পিছে ।
যবে নয়ন মেলিল , পূজক দেখিতে পেল ,
বাসুদেব ফিরিয়া রয়েছে ।।
বক্ষ দেশে হস্ত দিয়া , বাসুদেবকে ধরিয়া ,
দক্ষিণ মুখ করিতে চায় ।
বাসুদেব নাহি ঘুরে, বিপ্র ডাকে উচ্চৈঃস্বরে ,
কে তোরা দেখিবি আয় আয় ।।
বাসুদেব ফিরে গেল , উত্তর মুখ রহিল ,
ফিরাইলে আর নাহি ফিরে ।
হইনু আশ্চর্য্যান্বিত , অকস্মাৎ বিপরীত ,
না জানি কি অমঙ্গল করে ।।
সে বানী শুনি তরাসে , চারি পাঁচ বিপ্র এসে ,
কেহ যায় মন্ডপের পিছে ।
এক বিপ্র তরাসেতে , দেখে গিয়া স্বচক্ষেতে ,
রামকান্ত গোপনেতে আছে ।।
বিপ্র বলে দফা সারা , কার বাসুদেব তোরা ,
জোর করে এনেছিস সবে ।
যার ভক্তি তার হরি , মোরা যে গৌরব করি ,
সে কেবল ব্রাহ্মণ গৌরবে ।।
যার বাসুদেব এই , উদয় হইল সেই ,
সাধু পানে কেন নাহি চাও ।
মূল মর্ম্ম নাহি জান , দেবলা ধরিয়া টান ,
জোর করে দেবতা ঘুরাও ।।
এক বিপ্র ক্রোধ ভরে , রামকান্তে নিল ধরে ,
মন্ডপের সম্মুখেতে রাখি ।
বিপ্র বলে যদি আ’লি , সম্মুখে কেন না ছিলি ,
পিছে থেকে করেছ বুজরুকি ।।
যদি নিজ ভালো চাও , শীঘ্র করে উঠে যাও ,
শুনি রামকান্ত চলে গেল ।
ভোগ রাগ লাগিবে কি , বৈরাগীর ভোজ ভেল্কি ,
বাসুদেব সদ্ভাব হইল ।।
কান্ত লীলা চমৎকার , যেন অমৃতের ধার ,
কর্ণ ভরি পিও সাধুজন ।
ওঢ়াকাঁদি অবতীর্ণ , নমঃশূদ্র কূল ধন্য ,
রসনা , রসনা কি কারণ ।।


শ্রীশ্রীবাসুদেবজীর স্নান যাত্রা।

দীর্ঘ ত্রিপদী।

জগন্নাথ স্নানযাত্রা , ব্রাহ্মণেরা একত্রতা ,
হ’ল সবে স্নানের কারণ ।
গিয়া পুকুরের ঘাটে , বাসুদেবে রেখে তটে ,
করে জলকেলী সংকীর্ত্তন ।।
ঝাঁজ শঙ্খ ঘন্টা ধ্বনী , কুলবতীর হুলুধ্বনী ,
সুগন্ধি কুসুম ফেলাফেলি ।
বাসুদেবে ল’য়ে কোলে , নামি পুষ্করিনী জলে ,
সব মেলি করে জলকেলি ।।
বাসুদেব ছিল কোলে , কোল হ’তে নামি জলে ,
ছল করি লুকাইয়া রয় ।
সে বিপ্র জলে নামিয়া , বাসুদেবে হারাইয়া ,
আর নাহি অন্বেষিয়া পায় ।।
বিপ্র বলে কিবা হ’ল , বাসুদেব কোথা গেল ,
ডুব দিল না পাই খুজিয়া ।
সব দ্বিজ তাহা শুনি , জলে ডুবয়ে অমনি ,
খুজিতেছে ডুবিয়া ডুবিয়া ।।
যত ছিল প্রেমানন্দ , সব হ’ল নিরানন্দ,
জলে হারাইয়া বাসুদেব ।
কেহ বলে হায় হায় , কোথা বাসুদেব রায় ,
কেহ কাঁদে হাহাকার রবে ।।
কূলে তার বক্ষঃদেশ , মধ্যে তার গলদেশ ,
পুকুরের বারি পরিমাণ ।
পুকুরের অল্প জলে , বাসুদেব লুকাইলে ,
কি হ’ল কোথায় অন্তর্ধান ।।
গ্রামের ব্রাহ্মণ মাত্র , সকলে হয়ে একত্র ,
বাসুদেবে অন্বেষণ করে ।
হয়ে এল সন্ধ্যাকাল , ডুবাইয়া চক্ষু লাল ,
হাহাকার করে উচ্চৈঃস্বরে ।।
কেহ বলে অমঙ্গল , কেহ বলে হরিবোল ,
কেহ বলে রামকান্তে কও ।
তার বাসুদেব এনে , জোর করে রাখ কেনে ,
সে কারণ অপরাধী হও ।।
যে দিনে ফিরিয়া ছিল , হইত না অমঙ্গল ,
তার বাসুদেব তারে দিলে ।