Page: 142

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৪২
পাগলের নামে বিদ্বেষ।
পয়ার।
সবে মিলে কানাকানি করে পরস্পরে।
এইসব কার্য কি পাগল ভাল করে।।
ঠাকুরের সম্ভ্রম না রাখে এই বেটা।
বারজাতি মধ্যে কেন এঁটে ভাত বাঁটা।।
কেন ঠাকুরের এক সাথে খেতে বসে।
দধি দুগ্ধ না খাইতে কেড়ে নিল শেষে।।
পাগল হইল কেন এত অত্যাচারী।
মহাপ্রভু পিতৃগুরু ঈশ্বরাধিকারী।।
সাথে খায় কেড়ে লয় সেবা না হইতে।
গৃহস্থের তিল ভাঙ্গে রাখালের সাথে।।
তিল আলা গৃহস্থেরা কত মন্দ কয়।
উচিৎ বলিতে গেলে সাধু নিন্দা হয়।।
এইমত পাগলামী কেন উনি করে।
এ কথা জানাও সবে ঠাকুর গোচরে।।
মহোৎসব করি পরে সবে বাড়ী যায়।
প্রভুর নিকটে গিয়ে একে একে কয়।।
শুনিয়া ঠাকুর কয় তারে পাই যদি।
দেখিস কি করি যদি আসে ওঢ়াকাঁদি।।
থাক সবে গোলোক আসিবে যেই দিনে।
সেদিন সকলে তোরা আসিস এখানে।।
কি জন্য করিল বেটা এত পাগলামী।
গোলোকের পাগলামী ভেঙ্গে দিব আমি।।
একদিন গোলোক আসিল ওঢ়াকাঁদি।
সেই দিন সবে গিয়ে হইলেন বাদী।।
জয় হরি বল মন গৌর হরি বল।
গম্ভীর হুঙ্কার করি উঠিল পাগল।।
মতুয়ারা বসিয়াছে ঠাকুর নিকটে।
পাগলে দেখিয়া হরিচাঁদ ক্ষেপে উঠে।।
বলরে গোলোক মহোৎসবে কি করিলি।
গুরুঠাকুরের কেন অপমান কৈলি।।
রাখাল লইয়া কেন তিল ভেঙ্গে দিলি।
গৃহস্থেরা আসিয়া কেন দেয় গালাগালি।।
গোলোক কহিছে প্রভু কি কহিব আমি।
যাহা কর তাহা করি হয় পাগলামী।।
নাহি মোর জ্ঞান কাণ্ড তাতে হই দোষী।
ভাল মন্দ নাহি বুঝি প্রেম ল’য়ে খুশী।।
কে যেন কি ক’রে যায় কিবা হিতাহিত।
জানিয়া করুণ দণ্ড যে হয় উচিৎ।।
তিল ভাঙ্গি রাখালের সঙ্গে সঙ্গে থেকে।
হিন্দু দিল গালাগালি দাই নিল ডেকে।।
যার জমি সেই দাই বলিল নাচিতে।
তিল ভাঙ্গি দাই বেটা আনন্দিত তা’তে।।
এ যেন কাহার কার্য আমি নাহি বুঝি।
ভাগবত সিদ্ধ ক্রিয়া জগবন্ধু রাজী।।
পাগল বলিছে তোরা জয় হরি বোল।
কেবা কি করিতে পারে ক্ষেপিল পাগল।।
মহাপ্রভু বলে তোরা করিলি নালিশ।
যাহা কহে কর দেখি ইহার সালিশ।।
প্রসাদ বিলাইবার পারে কি না পারে।
যে প্রসাদ বিক্রি হয় আনন্দ বাজারে।।
কুকুরের মুখ হ’তে দ্বিজ কেড়ে খায়।
তাহা বিলাইয়া কি গোলোক দোষী হয়।।
আনন্দ বাজার নহে এ নহে উৎকল।
ইহা যেই মনে ভাবে সেই মূঢ় খল।।
এ হেন আনন্দ চিত্ত হ’য়েছে যাহার।
তার কাছে এই সেই আনন্দ বাজার।।
প্রসাদেতে অবিশ্বাস মনেতে ভাবিলি।
তবে তোরা হাত পেতে কেন তাহা নিলি।।
প্রসাদ লইয়া কই মন হৈল খাটি।
ছাই মাটি ল’য়ে কি করিলি চাটাচাটি।।
হিন্দু দেয় গালাগালি দাই ডেকে নিল।
জেনে আয় কার ক্ষেতে হ’ল কত তিল।।
তোরা যে নালিশ কৈলি না জেনে সন্ধান।
যা দেখি সে ঠাকুরের ভাঙ্গা হুক্কা আন।।
ঠাকুরের হুক্কা ভাঙ্গে কীর্তন খোলায়।
পাকঘরে গোলোক কেমনে টের পায়।।
সূতা দিয়ে গ্রন্থি দিল গিরে আটে নাই।
মাটি দয়া গোলোক যোড়া’য়ে দিল তাই।।
বলিতে বলিতে প্রভু আরক্ত নয়ন।
বলিলেন বাহ্য রুষ্ট কর্কশ বচন।।
ভাঙ্গা হুঁকা মাটি দিয়া যে দিয়াছে যোড়া।
তারপরে দ্বেষ করা মোরে নিন্দা করা।।