Page: 117

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১১৭

চতুর্থ তরঙ্গ।

বন্দনা।

জয় জয় হরিচাঁদ জয় কৃষ্ণদাস।
জয় শ্রীবৈষ্ণব দাস জয় গৌরী-দাস।।
জয় শ্রীস্বরূপদাস পঞ্চ সহোদর।
পতিতপাবন হেতু হৈলা অবতার।।
জয় জয় গুরুচাঁদ জয় হীরামন।
জয় শ্রীগোলকচন্দ্র জয় শ্রীলোচন।।
জয় জয় দশরথ জয় মৃত্যুঞ্জয়।
জয় জয় মহানন্দ প্রেমানন্দ ময়।।
জয় নাটু জয় ব্রজ জয় বিশ্বনাথ।
নিজ দাস করি মোরে কর আত্মসাৎ।।

শ্রীমৎগোলোক কীর্ত্তনীয়ার উপাখ্যান।

পয়ার।

মল্লকাঁদি বাসী কীর্তনিয়া রঘুনাথ।
তস্য জ্যেষ্ঠ পুত্র নাম শ্রীগোলোকনাথ।।
রামভক্ত করিতেন রামায়ণ গান।
গন্ধর্বের মধ্যে যেন গালব প্রধান।।
নারদ করিল শিক্ষা গালব নিকটে।
রাগ রাগিণীতে তেম্নি শ্রীগোলোক বটে।।
একদিন ডুমুরিয়া গ্রামেতে আসিল।
সিকদার বাটীতে অতিথি হ’য়েছিল।।
সূর্যনারায়ণ সিকদার ডুমুরিয়া।
গোলোকে রাখিল অতি যতন করিয়া।।
নিশি ভোর শুকতারা প্রভাতী গগনে।
ব্রহ্মমুহূর্তের কালে জেগে দুইজনে।।
করিছেন হরিনাম দুই মহাশয়।
গোলোক কহিছে বড় ভাল এ সময়।।
বৈশাখী দ্বাদশী দিন ভায়রো বসন্ত।
শুনাও বসন্ত গান বাসনা একান্ত।।
সূর্য গায় বসন্ত অন্তরা গায় যবে।
গোলোক রাগিণী ধরে মধুর সু-রবে।।
কোথা হ’তে আসিল কোকিল এক ঝাক।
ঘরের চালের পরে পড়িল বেবাক।।
কীর্তনিয়া মহাশয় তান ধরে যবে।
সঙ্গে সঙ্গে তান দেয় পিককুল সবে।।
স্বরের সঙ্গেতে সেই বিহঙ্গম সব।
জ্ঞান হয় করে যেন হরেকৃষ্ণ রব।।
কিছুক্ষণ পরে সেই কোকিলের গণ।
কতক ঘরের মাঝে পশিল তখন।।
কতক পিঁড়ির পরে কতক ধরায়।
স্বরে স্বর মিশাইয়া অশ্রুধারা বয়।।
গান ক্ষান্ত ভানুদিত কিরণ ছড়াল।
কুহু রবে পিক সব উড়িয়া চলিল।।
এমন গায়ক ছিল ভক্ত শিরোমণি।
মাতাইল রামায়ণ সঙ্গীতে ধরণী।।
রামায়ণ গান যদি হ’ত কোনখানে।
বাল বৃদ্ধা যুবামত্ত হইত সে গানে।।
রাম রাম বলি যবে ধরিতেন তান।
স্মৃতি শূন্য হ’ত কারু না থাকিত জ্ঞান।।
এইভাবে গান করে জগত মাতাল।
এবে শুন যে ভাবেতে হরিবোলা হল।।
বাত ব্যাধি হ’য়ে ক্রমে অঙ্গ পড়ে গেল।
ধরাশয্যা গত ক্রমে অচল হইল।।
সবে বলে হরিঠাকুরের কাছে চল।
তাহার কৃপাতে কত রোগ মুক্ত হৈল।।
এদেশে আসেন তিনি রাউৎখামার।
এ গ্রামেও এসে থাকে মৃত্যুঞ্জয় ঘর।।
সেই ঠাকুরকে ভক্তি কর মহাশয়।
মরা জিয়াইতে পারে যদি দয়া হয়।।
গোলোক বলেছে আমি ঠাকুর না মানি।
ওর মত ঠাকুর কত মোট বৈতে আনি।।
সবে বলে নিকটেতে আছেন ঠাকুর।
রাউৎখামার গ্রাম নহে বেশই দূর।।
চল তোমা ধরে ল’য়ে যাই সেই বাড়ী।
গোলোক বলেরে দিলি ভবনদী পাড়ি।।
একেবারে এসেছেন গৌরাঙ্গ নিতাই।
আজ বুঝি উদ্ধারিবে জগাই মাধাই।।