Page: 160

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৬০
পাগল কহিছে, নাও দেও সেচে
যদি মোরে ভালোবাস।
বাহিয়া যাইতে, একজন সাথে
দেহ নৈলে নিজে এস।।
নৌকা সেচে দিল, বৈঠা খানা নিল
পাগল উঠিল নায়।
ঠাকুর দেখিতে, নৌকা বেয়ে যেতে
রায়চাঁদ সাথে যায়।।
তরণী বাহিছে, বেগে চালায়েছে
বিক্রমশালী বিশাল।
যাও যাও বলে, যাও যাও বলে
পাগল সেচিছে জল।।
জোরে খোঁচ দেও, জোরে বাও নাও
যদি দেহ জোর ছেড়ে।
জোর দিলে কম, আমি তোর যম
মুণ্ড ফেলাইব ছিঁড়ে।।
মরি কিংবা বাঁচি, আছি কিনা আছি
না জানিয়া মানি এত।
যা হও তা হও, নৌকা বেয়ে যাও
এ নাও চালাও দ্রুত।।
যত বাহে নাও, তত বলে বাও
বিলম্ব নাহিক সহে।
রায়চাঁদ বায়, যত শক্তি গায়
কালঘর্ম দেহে বহে।।
নিঃশ্বাস প্রশ্বাস, ঘন ঘন শ্বাস
মরণ প্রশ্বাস প্রায়।
ডান হাতে জল, ফেলেছে পাগল
বাম হাতে নাও বায়।।
ডালির উপরে, বক্ষঃ রাখি জোরে
বামহাত জলে দিয়া।
জল টানি টানি, চলিল অমনি
যায় তরণী বাহিয়া।।
অর্ধ পথে গিয়া, পড়িল শুইয়া
বলে একা বেয়ে চল।
নৌকা চালাইবি, এ মতে বাহিবি
নৌকায় না উঠে জল।।
রায়চাঁদ জোরে, বাহে বেগভরে
নৌকায় না উঠে বারি।
উতরিল শিঙ্গা, পাগলের ডিঙ্গা
অকূলে তরিল তরী।।
ঠাকুরকে দেখি, নৌকা ঘাটে রাখি
দৌড় দিয়া চলে যায়।
প্রভু হরিচাঁদে, হেরি মনোসাধে
অমনি পদে লোটায়।।
রহে দণ্ড চারি, ঠাকুরে নেহারী
ঠাকুর জিজ্ঞাসা করে।
আমারে দেখিলে, এলে কিনা এলে
যুধিষ্ঠির রঙ্গ ঘরে।।
কহিছে গোলোক, হইয়া পুলক
ত্রিলোক পালক হরি।
যথা তথা রহ, নাহিক সন্দেহ
উৎসাহে শ্রীপদ হেরি।।
আপনি সবার, জীবন আধার
যান সবাকার ঠাই।
আসি পুলকেতে, আপনা দেখিতে
এ বাড়ীতে আসি নাই।।
কহিল যখন, ঠাকুর তখন
ক্রোধ রক্তজবা চক্ষু।
এত বড় হলি, এ বাড়ী না এলি
কি কহিলি ওরে মূর্খ।।
ছিলেন বসিয়া, ঠাকুর রুষিয়া
দুরন্ত রাগের সাথ।
ঠাকুর তখনে, গোলোক বদনে
মারিল চপেটাঘাত।।
তখন গোলোক, অন্তরে পুলক
বাহিরে পাবক ন্যায়।
এক লম্ফ দিয়া, ঠাকুরে লঙ্ঘিয়া
ঘরের বাহিরে যায়।।
গোলোকে দৌড়িয়া, ঘাটেতে আসিয়া
অবিলম্বে নাও ছাড়ি।
রায়চাঁদে ফেলে, আসিয়া উঠিলে
কুবের বিশ্বাস বাড়ী।।
এ দিকে ঠাকুর, ক্রোধিত প্রচুর
রায়চাঁদ ডেকে কয়।
কোথায় ঠাকুর, পেলি এতদূর
হারে দুষ্ট দুরাশয়।।
শুনিবারে পাই, আমি যথা যাই
ও বলে আসে না তথা।
বুঝে দেখ মনে, আমারে কি মানে
কেন কহে হেন কথা।।