Page: 048

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ৪৮

বৈষ্ণবের শিরোমণি ছিল ভজরাম।
প্রভুদের সঙ্গে সদা করে হরিনাম।।
হরিকথা কৃষ্ণকথা হ’য়ে একতর।
কোন কোন নিশি হ’ত অই ভাবে ভোর।।
চৌধুরীর বাটী ছিল পঞ্চ সহোদর।
একা প্রভু আমভিটা বাঁধিলেন ঘর।।
তথা আসি পারিষদগণের মিলন।
রাত্রি দিবা করিতেন হরি-সংকীর্তন।।
তার পূর্ব অংশে ছিল পোদ্দারের বাটী।
চারি ভাই সেইখানে বাঁধিলেন ভিটি।।
অই বাটী পূর্বকালে বিশ্বনাথ ছিল।
সে জন বৈরাগী হ’য়ে বৃন্দাবনে গেল।।
এভাবে করিল সবে ওঢ়াকাঁদি বাস।
কবি বলে শুনিলে পাপের হয় নাশ।।


প্রভুদের প্রতি জমিদারের বিনয়।

পয়ার।

স্থানত্যাগী ওঢ়াকাঁদি আছে পঞ্চ ভাই।
জমিদারে লুঠে নিল বিত্ত কিছু নাই।।
পার্বতীচরণ বাবু ওঢ়াকাঁদি গিয়া।
প্রভুদের বলিলেন বিনয় করিয়া।।
বহু স্তুতি মিনতি করিল বারেবার।
সফলানগরে যেতে করি পরিহার।।
কৃষ্ণদাস বলে শুন শুন মহাশয়।
আর না হইব প্রজা তোমার ভিটায়।।
তুমি রাজা নাহি তব উচিৎ বিচার।
তোমার সমান অধার্মিক নাহি আর।।
একবার যার সঙ্গে হ’য়েছে শত্রুতা।
পুনঃ তার সঙ্গে কেহ না করে মিত্রতা।।
নারীকে রাজাকে নাহি বিশ্বাস করিবে।
চাণক্য পণ্ডিতবাক্য মিথ্যা নাহি হ’বে।।
বিশেষ বিভীষণের প্রতিজ্ঞা র’য়েছে।
সে বাক্য মোদের পক্ষে সকল ফ’লেছে।।
জমিদার কহে তোমাদের টাকা দিব।
সাতশত টাকা সুদসহ শোধ হ’ব।।
ধান্য গোলা ঘর গরু যত লুঠিয়াছি।
যেহেতু আমরা বড় দুষ্কর্ম করেছি।।
ইহকালে আমাদের হইল দুর্নাম।
আখেরে হইবে মন্দ বুঝে দেখিলাম।।
জমাজমি তোমাদের ছিল যে সমস্ত।
অন্যের সহিতে করি নাই বন্দোবস্ত।।
যত লুঠ করিয়াছি অস্থাবর মাল।
বুঝে দিব খাট পাট ঘটি বাটি থাল।।
যা হ’বার হ’য়েছে আমি ত’ জমিদার।
তোমাদের নিকটেতে করি পরিহার।।
পঞ্চ ভাই জমিদারের নিকট আসিয়া।
কহিলেন ভূ-স্বামীকে বিনয় করিয়া।।
আমাদের ক্রোধ আর নাহি তোমা প্রতি।
এখানে আসিয়া মোরা হইয়াছি স্থিতি।।
রাজা রামরত্ন রায় মহিমা অপার।
হইয়াছি তার প্রজা করি অঙ্গীকার।।
এখনে তাহাকে ত্যাগ করা বড় লাজ।
বিনাদোষে ভিটা ছাড়া অধর্মের কাজ।।
বিনা অপরাধে বল কেবা ছাড়ে বাপ।
এখন তোমার ভিটাতে যাওয়া পাপ।।
এত শুনি বাবু তবে ছাড়ি দীর্ঘশ্বাস।
নিজ ঘরে গেল ফিরে হইয়া নৈরাশ।।
স্বচ্ছন্দে আনন্দ চিতে সুখে করে বাস।
বড়কর্তা কৃষ্ণদাস করিল প্রকাশ।।
হরি হরি বল ভাই নাম কর সার।
তারক কহিছে হরি হবে কর্ণধার।।


পঞ্চ ভাই পৃথকান্ন ও মুদ্রা বণ্টন।

লঘু ত্রিপদী

পঞ্চ ভাই, এক ঠাই, বসিয়া হরিষে।
হৃষ্ট মনে, ভ্রাতাগণে, কৃষ্ণদাস ভাষে।।
কল্য দিনে, মম মনে, ভাবিয়াছি যাহা।
হৃদি খুলে, সবেস্থলে, বলি ভাই তাহা।।
দেখ ভাই, এক ভাই, করে ঠাকুরালী।
পারে যদি, করে বিধি, মন্দ নাহি বলি।।
যে সময়, ত্যাগ হয়, সফলানগরী।
এর আগে, হ’তে লাগে, প্রকাশ ঠাকুরী।।
তাহা যত, অবগত, লিখিব সে লীলে।
শুন বার্তা, বড়কর্তা, এবে যা কহিলে।।
হ’লে বংশ, বহু অংশ, হইব পৃথক।
সরাজিতে, এ কালেতে, হইব বণ্টক।।
কর্মছাড়া, ঘরছাড়া, হ’য়েছি নাতক।
যে অবস্থা, এ ব্যবস্থা, হওরে পৃথক।।