Page: 143

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৪৩
রাগাত্মিকা রাগ ধর্ম ওঢ়াকাঁদি গণ।
এর পরে নাহি কোন সাধন ভজন।।
মর্ম না জানিয়া কেহ কারে না নিন্দিবে।
হইলে আত্ম-বিদ্রোহ ছাড়ে খারে যাবে।।
বাহ্য অঙ্গ ডোরক কপিন মালা আর।
সব হ’তে সবাকে করেছি অবসর।।
সত্যবাদী জিতেন্দ্রিয় হইবেক যেই।
না থাকুক ক্রিয়া কর্ম হরি তুল্য সেই।।
কীর্তনেতে লম্ফ করে অসম্ভব কাজ।
ভীমকায় বিশেষ দেখিলে যার ল্যাজ।।
প্রসাদ বাটীতে কেন তারে ভাব মন্দ।
সাবধান কেহ কর নাহি আত্মদ্বন্দ্ব।।
অধিকারী পাক করে লাবড়া ব্যঞ্জণ।
ভোজনে গোলোক মোরে করে নিবেদন।।
আমি খাইলাম তাই গোলোক দেখিল।
সে হেতু কীর্তন মাঝে প্রসাদ বাঁটিল।।
না জানে পাষণ্ডীগণ এই কার্য কার।
ঈশ্বরীয় কর্ম এই ঘটনা তাহার।।
তোরা ইহা না জানিস আমি জানিয়াছি।
গোলোক করিল যাহা আমি করিয়াছি।।
শুনিয়া মতুয়াগণ কাঁদিয়া আকুল।
বলে প্রভু আমাদের বুঝিবার ভুল।।
প্রভু বলে হয়, হয় না জান আপনা।
নিজ চক্ষে নিজ মুখ নাহি দেখা চেনা।।
একবার যারে যে বিশ্বাস করে মনে।
তারে অবিশ্বাস আর করে বা কেমনে।।
তিল গাছ ভাঙ্গিয়াছে যাহার যাহার।
জান তথা হ’তে কিবা আসে সমাচার।।
আট দশ দিন পরে পুকুরের পাড়ে।
বসিলেন মহাপ্রভু ভূমি শয্যা ক’রে।।
এক এক জন করি আইল অনেকে।
নালিশ করিছে তারা এল একে একে।।
ঈশ্বরাধিকারী আর গোলোক কীর্তুনে।
তস্য পুত্র গিরিশ মথুর দুইজনে।।
তালুকের মহেশ আর নিবারণ বালা।
ক্রমে ক্রমে হৈলা হরিভকতের মেলা।।
মৃত্যুঞ্জয় দশরথ আর শম্ভুনাথ।
মদন বদন বনমালী রঘুনাথ।।
ক্রমাগত হইল বহুত লোকজন।
নালিশ করিছে তারা আসিল তখন।।
ঠাকুর বসিয়া কহিছেন সব কথা।
হেনকালে পাগল গোলোক এল তথা।।
ঠাকুর কহিল যারা নালিশ করিলি।
তিল হ’ল কিনা হ’ল তার কি জানিলি।।
হেনকালে প্রণমিয়া বলে সেই দাই।
কোথায় আছেন মোর পাগল গোঁসাই।।
আমার জমিতে তিনি নাচিয়া গাইয়া।
তিল নষ্ট করেছিল রাখাল লইয়া।।
ভাঙ্গা ডাল মাটি মধ্যে পড়িয়া যা ছিল।
হ’য়ে বৃষ্টি ডাল পুষ্টি তিলে বেড়ে গেল।।
নন্দরায় গোস্বামীকে তাড়াইয়া দিল।
তবু তার জমিতে যথেষ্ট তিল হৈল।।
অন্য অন্য কৃষকের যত তিল জমি।
কারু মোটে হয় নাই কারু বহু কমি।।
তিল ভাঙ্গে আমি খুশী রায় করে দোষী।
তবু অন্য হ’তে তিল চতুর্গুণ বেশী।।
রায়ের দু’বিঘায় ফলেছে পাঁচ সলি।
আমার দু’বিঘা জমি রায়দের আলি।।
আমার সে ক্ষেত্রে তিল হ’ল নয় সলি।
আসিয়াছি গোস্বামীর কথা যাব বলি।।
আমি চির দাস প্রভু দয়া কর মোরে।
যবন বলিয়া ঘৃণা না কর আমারে।।
প্রভু হরিচাঁদ বলে ওহে ভক্তগণ।
কি কহে যবন সবে করহে শ্রবণ।।
গোলোক কি করে কেহ না পাইলে দিশে।
এখন গৃহেতে গিয়া ভাব ব’সে ব’সে।।
শুনি মতুয়ারগণ ভাসে অশ্রুজলে।
পাগল হুঙ্কার করি জয় হরি বলে।।
ভাষা ছন্দে কহে কবি তারক সরকার।
হরি হরি বল ভাই দিন নাহি আর।।
আদেশিল প্রভু দশরথ মৃত্যুঞ্জয়।
চতুর্বিংশ বর্ষ পরে পাগল উদয়।।
মহানন্দ প্রেমানন্দ বলে বার বার।
দিন গেল গেল না মনের অন্ধকার।।
হরিলীলামৃত অব্জ অর্ক মহানন্দ।
বিরচিল তারকের হৃদে মহানন্দ।।