Page: 184

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৮৪
ধন্য ধন্য বাল্যকের মাতা সাধ্বী নারী।
জনম বৃথায় যায় বল হরি হরি।।
ধন্য ওঢ়াকাঁদি ধন্য অবতীর্ণ হরি।
না চিনিয়া মোরা কেন পাপে ডুবে মরি।।
হীরামনে দেখিতে লোকের ভিড় হ’ল।
অন্তর্যামী হীরামন অদৃশ্য হইল।।
কাঁদিয়া পাষণ্ডী সব ভূমে গড়াগড়ি।
হীরামনে অন্বেষণে করি দৌড়াদৌড়ি।।
সে হ’তে পাতলা গ্রাম নামে মেতে গেল।
দশরথ গোস্বামী করেন যাতায়াত।
ইষ্টসম ভক্তি সবে করে অবিরত।।
হরি হরি বলি সব মতুয়া হইল।
হীরামন প্রীতে সবে হরি হরি বল।।
প্রভু হীরামন কীর্তি অলৌকিক কাজ।
রচিল তারকচন্দ্র কবি রসরাজ।।
হীরামন গোস্বামীর বাহ্যলীলা
দীর্ঘ ত্রিপদী
মৃত্যুঞ্জয়ের রমণী, ওঢ়াকাঁদি যান তিনি
লইয়া চলিল মৃত্যুঞ্জয়।
সঙ্গেতে তারকচন্দ্র, আর শ্রীগোলোকচন্দ্র
সূর্যনারায়ণ সঙ্গে যায়।।
যোগানিয়া গ্রামে বাস, নাম গোলোক বিশ্বাস
তিনি চলিলেন এই সাথে।
বেলা অপরাহ্ণ প্রায়, কাশীমার পিত্রালয়
উপস্থিত নিশ্চিন্ত পুরেতে।।
কাশীরাম ধর্মপুত্র, মল্লিক শ্রীচন্দ্রকান্ত
তিনি চলিলেন সে দিনেতে।
তারক শ্রীচন্দ্রকান্ত, দোহার মন একান্ত
হীরামন পাগলে দেখিতে।।
ভজন মজুমদার, আসিয়া তাহার ঘর
হীরামন দিল দরশন।
শীতকালে পৌষমাস, গায় নাহি শীতবাস
মাত্র একটি লেংটি ধারণ।।
চন্দ্রকান্ত দক্ষিণেতে, তারক বসি বামেতে
তার মধ্যে বসি হীরামন।
দণ্ডেক মাত্র বসিয়া, ভূমেতে পড়ে লুটিয়া
বলে তোরা কররে শয়ন।।
কাশীমাতার ভগ্নী, একখানি কাঁথা আনি
হীরামন গাত্রোপরে দিল।
তিনি কন গোস্বামীরে, যাও প্রভু শয্যাপরে
তারকে কোলে করি শুইল।।
তারকের হ’ল ভয়, হীরামন গায় গায়
লাগিবে আমার অঙ্গ তাপ।
আমার পাপের দেহ, কামানলে সদা দাহ
ভাবে কোথা হরিচাঁদ বাপ।।
এতভাবি যোড়ি কর, হস্ত রাখি শিরোপর
হরিপদ করিছে স্মরণ।
গোস্বামী কহিছে বাণী, আমি সব পাপ জানি
উরুপরে দিলেন চরণ।।
পাপী তাপী উদ্ধারিতে, হরি এলেন জগতে
যার আশা মোর হরিচাঁদে।
যেই যাবে ওঢ়াকাঁদি, সেত নহে অপরাধী
তার পাপ মুছি বামপদে।।
যে মোর হরেকে ডাকে, সে জন থাকুক সুখে
আমার মনের অভিলাষ।
তার পাপ ঘুচাইব, শুভাশুভ আমি নিব
যেই যশোমন্তসুত দাস।।
শয্যা হ’তে উঠিলেন, দক্ষিণ পদ দিলেন
তারকের বক্ষের উপর।
তারকে করিয়া স্থির, গোঁসাই হ’ল বাহির
বলে তোর নাহি কোন ডর।।
গাত্র কান্থা শিরে ল’য়ে, ঘরের বাহিরে গিয়ে
বসিলেন পূর্বমুখ হ’য়ে।
হরি পদ ধোয়াইয়া, ক্ষণে উঠে ঝোঁক দিয়া
জলে যায় কান্থা তেয়াগিয়ে।।
প্রাতঃকালে নামি জলে, পূর্বমুখ হ’য়ে চলে
ডেকে বলে যারে মৃত্যুঞ্জয়।
যাও হরি দরশনে, বিলম্ব করহ কেনে
মোর হ’রে সুখে যেন রয়।।
মৃত্যুঞ্জয় চলে গেল, ওঢ়াকাঁদি উতরিল
হরিচাঁদ দরশন করি।
প্রণমিয়া শ্রীপদেতে, মহাপ্রভু আজ্ঞা মতে
দেশে যাত্রা করিলেন ফিরি।।
ঈশ্বর মজুমদার, আসিয়া তাহার ঘর
সে দিবস রহিল তথায়।
পরদিন প্রাতঃকালে, এসে মল্লকাঁদি বিলে
হীরামনে দেখিবারে পায়।।