Page: 173

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৭৩
ভিক্ষাপাত্র হাঁড়ি, লয়ে বাড়ী বাড়ী
করিতেন সদা ভিক্ষা।
ক্ষুধার্ত হইলে, খাইতে চাহিলে
কেহ না করে উপেক্ষা।।
হিন্দু কি যবনে, ঘৃণা নাহি মনে
ভোজনে ছিল রীতি।
যে করে আদর, খায় তার ঘর
বিচার নাহিক জাতি।।
লোহাগড়াবাসী, পীতাম্বর ঋষি
খুশী হ’য়ে দিত খেতে।
অভিমান শূন্য, খেত তার অন্ন
সে ধন্য হ’ল ভক্তিতে।।
ছিল এক ভক্তা, নাম তার মুক্তা
জাতি বেবা’জের মেয়ে।
ভকতি করিত, চরণ ধরিত
খাইত সে বাড়ী গিয়ে।।
ঋষি পীতাম্বর, ভোজনে তৎপর
ঘুচে গেল দৈন্য দশা।
শ্রীকৃষ্ণ বলিয়ে, বেড়াত কাঁদিয়ে
ত্যজিয়ে জাতির পেশা।।
তর্জনী মধ্যয়ে, হাত বাঁধাইয়ে
অর্ধ দ্বি অঙ্গুলী ধরে।
অন্নেতে ব্যঞ্জন, করিয়া মিশ্রণ
তুলিয়া দিত অধরে।।
মুকুতা বেদেনী, দৈন্য ছিল ধনী
দোকানী সে মনোহারী।
অদৈন্য সংসার, হইল তাহার
গোস্বামীর সেবা করি।।
জয়পুর গ্রামে, ওয়াছেল নামে
জাতিতে মুসলমান।
গিয়া তার ঘরে, ভোজনাদি করে
বাড়িল তাহার নাম।।
সে হ’ল ফকির, লোকে বলে পীর
জিগীর মারিয়া ফেরে।
লোচন বলিয়া, ডাক ছেড়ে দিয়া
নাম দিয়া রোগ সারে।।
ত্যজে বেদাচার, জাতি কুলাচার
বৈষ্ণব আচার ত্যাগী।
তারকের আশা, মানস পিপাসা
স্বামীর চরণ লাগি।।
স্বামীর অপরূপ রূপ ধারণ
লঘু-ত্রিপদী
কুবের বৈরাগী, মহা অনুরাগী
তার বাড়ী একদিনে।
ভিক্ষার লাগিয়া, তার বাড়ী গিয়া
ভিক্ষা মাগিল যখনে।।
গোস্বামীর টের, পাইয়া কুবের
ধরে গোস্বামীর পদ।
অদ্য এ বাড়ীতে, হবে সেবা নিতে
দিতে হইবে শ্রীপদ।।
দয়া উপজিল, গোস্বামী বলিল
বলে শীঘ্র দেও খেতে।
কুবের রমণী, গৃহে নাই তিনি
গিয়াছেন বস্ত্র ধুতে।।
ত্বরান্বিত হ’য়ে, কুবের আসিয়ে
বলে তাহার নারীকে।
এস শীঘ্রগতি, এসেছে অতিথি
সেবা করাব তাহাকে।।
কুবের রমণী, কহিছেন বাণী
অতিথি এসেছেন কে।
কুবের কহেন, লোচন এলেন
সেবা করা’ব তাহাকে।।
কুবের রমণী, রুষিয়া অমনি
কহিছে রাগের সাথ।
তুণ্ড মহারুগে, দূর করে দিগে
কে রাঁধিবে তার ভাত।।
কুবের রুষিয়া, বাটীতে আসিয়া
নিজে যায় পাকঘরে।
করে আয়োজন, লোচন তখন
তাহা জানিল অন্তরে।।
গোস্বামী লোচন, মধুর বচন
ডেকে কহে কুবেরেরে।।
যার যেই কাজ, তার সেই সাজ
অন্যে কি সাজিতে পারে।।
বল গিয়ে মায়, আমি তুণ্ড নয়
পাক করুণ আসিয়ে।
ভাল হ’য়ে এলে, ভাল পাক হ’লে
আমি খাব ভাল হ’য়ে।।
কুবের নারীকে, কহিছেন সুখে
পাক কর শীঘ্র গিয়ে।