Page: 157

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৫৭
ওঢ়াকাঁদি বাসী যত হরিভক্তগণ।
জানিলাম তারা সবে পতিত পাবন।।
যুগে যুগে যত পাপী করেছ উদ্ধার।
এমন পাষণ্ডী কোথা পেয়েছ কি আর।।
মহাপ্রভুগণ মহাপ্রভুর সমান।
আমি রহিলাম তার বিশেষ প্রমাণ।।
আমি যদি তব দাদা তুমি যদি ভাই।
তবে চল আমার বাড়ীর মধ্যে যাই।।
পাগলের হস্ত ধরি রুদ্র চলে যায়।
আগে রুদ্র পশ্চাতে পাগল দয়াময়।।
তাহা দেখি হরিবোলা মতুয়া সকলে।
রুদ্র মণ্ডলের প্রতি হরি হরি বলে।।
বাড়ীর উপরে নিয়া বলে যোড় করে।
সেবা কিছু কর ভাই বসে এই ঘরে।।
গোস্বামী যাইয়া দেখে রন্ধন শালায়।
পরিপূর্ণ এক হাঁড়ি অন্ন তথা রয়।।
গোস্বামী বলেন দাদা ল’য়ে চল ঘাটে।
মতুয়ার গণে আমি ইহা দিব বেটে।।
চলিলেন যথা আছে সঙ্গী ভক্তগণ।
হাঁড়ির মুখেতে দিল সরা আবরণ।।
সেই অন্ন হাঁড়ি ধরি জলে ডুবাইল।
জলমধ্যে বুড়বুড় করিতে লাগিল।।
যত মতুয়ারগণ বাড়ীতে লইয়া।
রুদ্র নাচে হরি বলি প্রেমেতে মাতিয়া।।
বাড়ীর মধ্যেতে রুদ্র লইয়া তখনে।
ভোজন করায় যত হরিভক্তগণে।।
তাহা দেখি আসিলেন রুদ্রের রমণী।
সব পাতে এনে দিল দধি আর চিনি।।
গলে বস্ত্র দিয়া তবে কহে দুইজন।
দয়া করি গৃহ মধ্যে চলহ এখন।।
ল’য়ে গেল পাগলেরে উত্তরের ঘরে।
নারীসহ হরিবোল বলে উচ্চৈঃস্বরে।।
রুদ্র কেঁদে কহে শুন ভাইরে পাগল।
ঘর বাড়ী পুত্র নারী তোমার সকল।।
মতুয়ারা হরিবলে নাচিয়া নাচিয়া।
নারীসহ নাচে রুদ্র প্রেমেতে মাতিয়া।।
মতুয়ারা সবে যায় এ ঘরে ও ঘরে।
হরি হরি হরি বলে ঘর বাড়ী ঘিরে।।
গোস্বামী বলেন দাদা যাই বাশুড়িয়ে।
বিশ্বাসের বাড়ী যাব নদী পার হ’য়ে।।
রুদ্র বলে অদ্য আমি পার করে দিব।
আজ পার না করিলে কিসে পার হ’ব।।
রুদ্র বলে দেও ভাই এ সত্য কড়ার।
আসিতে যাইতে দেখা দিবে একবার।।
দশ বিশ জন এস কিংবা এস একা।
আসিতে যাইতে মোরে দিয়া যাবে দেখা।।
বৈঠা ল’য়ে রুদ্র এসে নিজ হাতে বেয়ে।
পার করে দিল সবে নৌকায় উঠা’য়ে।।
রুদ্রের উদ্ধার পার করিল গোঁসাই।
রচিল তারকচন্দ্র হরি বল ভাই।।
পাগলের ওলাউঠার তাড়ান।
পয়ার।
একবার নারিকেলবাড়ী সে গ্রামেতে।
উপনীত ওলাউঠা ব্যাধি সে স্থানেতে।।
মরিল অনেক লোক ভাব বিপরীত।
তাহাতে অনেক লোক হৈল চমকিত।।
ভয়ভীত হ’য়ে কেহ না পারে চলিতে।
রাত্রি দ্বার বন্ধ, নাহি চলে দিবসেতে।।
মহানন্দ নাগর চলিল ওঢ়াকাঁদি।
কহে সব ঠাকুরের শ্রীচরণ বন্দি।।
নাগর সরিষা নিল বসনেতে বাঁধি।
ওলাউঠা আসিয়াছে কহে কাঁদি কাঁদি।।
ঠাকুর কহেন তাতে তোদের কি ভয়।
যা হবার হউক তোদের নাহি দায়।।
তবু কহে নাগর উপায় কিবা করি।
প্রভু কহে ভয় নাই বল হরি হরি।।
গোস্বামী গোলোক তাহা শুনে দাঁড়াইয়া।
গোপনে নাগরে নিল ইঙ্গিত করিয়া।।
কহিছে তোমরা সবে কর দরবার।
আমি যাইতাম দেশে বাসনা আমার।।
মহাপ্রভু নিকটে নাগর কহিতেছে।
গোলোকে পাঠান যদি তবে ভয় ঘুচে।।
ঠাকুর বলেন কেন গোলোক যাইবে।
হরি বল হ’বে ভাল ভয় নাহি রবে।।
তবু আর বার গিয়া কহিছে নাগর।
জীবনের আশা নাই হয়েছি কাতর।।
ঠাকুর বলেন এত ভয় কি লাগিয়া।
আন দেখি দিব আমি সরিষা পড়িয়া।।