Page: 014

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৪
লবন তামাক পান কিছু না আনিলে ।
কি উপায় হ’বে সাধু বৈষ্ণব আসিলে ।।
সাধু কহে কি বলিব শুন গো বৈষ্ণবী ।
যে দায় ঠেকেছি আমি বসে তাই ভাবি ।।
ঘৃত গেল ভাণ্ড গেল তাতে দুঃখ নাই ।
না হইল হাট করা যদিও না খাই ।।
যা হোক বৈষ্ণব সেবা বৈষ্ণব কৃপায় ।
কর্ম্মবসে যদি দু’দিন উপবাস হয় ।।
যে দায় ঠেকেছি তাহা জানা’ব কাহায় ।
অপরাধে অব্যাহতি পাইব কোথায় ।।
ব্রাহ্মণেতে আমার যে হ’ল অবিশ্বাস ।
এ দায় কোথায় যাই হ’ল সর্ব্বনাশ ।।
আদি অন্ত সে বৃত্তান্ত দেবীকে জানা’ল ।
যে ভাবে ব্রাহ্মণ ঘৃত ভাণ্ড ল’য়ে গেল ।।
ঠাকুরাণী বলে নাথ না ভেব বিস্ময় ।
যবে যে ঘটনা ঘটে ঈশ্বর ইচ্ছায় ।।
ইশ্বর তোমায় যদি বুঝিবারে মন ।
ব্রাহ্মণে দ্বারায় হেন করে নারায়ণ ।।
কেন তাতে দুঃখ ভাব, ভাব বিপরীত ।
ঘটন কারণ ঈশ্বরের নিয়োজিত ।।
এ কথা শুনিয়া সাধু শান্তি পেল মনে ।
তারক স্বভাব যাচে যশোমন্ত স্থানে ।।
শ্রীমদ্রামকান্ত বৈরাগীর উপাখ্যান।
রামকান্ত নামে সাধু মুখডোবা গাঁয় ।
বৈরাগী উপাধি তার সাধু অতিশয় ।।
রামকান্ত যশোমন্ত আলয় আসিত ।
স্ত্রী পুরুষে একত্তরে সাধুকে সেবিত ।।
সদা ছিল সে সাধুর উত্তার নয়ন ।
শিবনেত্র প্রায় যেন আরোপ লক্ষণ ।।
কখন কখন সাধু বেড়াইতে যেত ।
কোন কোন ঠাঁই গিয়া উপস্থিত হ’ত ।।
সর্ব্বদা থাকিত সাধু মহাভাব হ’য়ে ।
কোন কোন ভাগ্যবানে দয়া প্রকাশিয়ে ।।
যদি কোন পুত্রবতী সতী নারী পেত ।
মা বলিয়া দুগ্ধ পান তাহার করিত ।।
সে নারীর গর্ভে যদি হইত সন্তান ।
ধন ধান্যে সুখী তারা সবে ভাগ্যবান ।।
ন পুত্র ন গর্ভাবতী কোন নারী পেয়ে ।
যদি তার স্তন পান করিতেন গিয়ে ।।
আহার করিত দুগ্ধ পানের সময় ।
স্তন পান অন্তে দুগ্ধ শুকাইয়া যায় ।।
যাহা বলি দিত বর তাহাই ফলিত ।
বাক্যসিদ্ধ পুরুষের যা মনে লইত ।।
একদিন প্রাতে যশোমন্তের গৃহিনী ।
পূর্ব্বভাব অন্তরেতে জাগিল অমনি ।।
প্রাতঃকৃত কৃষ্ণনাম লইতে লইতে ।
ব্রজভাব আসি তার জাগিল মনেতে ।।
বাহ্যস্মৃতি হারা হ’য়ে বলে বার বার ।
কোথা রামকৃষ্ণ প্রাণ পুতলি আমার ।।
এইভাব তাহার হইত হৃদি মাঝ ।
রচিল তারকচন্দ্র কবি রসরাজ ।।
অন্নপূর্ণামাতার যশোদা আবেশ।
পয়ার।
ধরিয়া গোপাল বেশ পিয়াইত স্তন ।
এই সেই মায়াপুরী এই বৃন্দাবন ।।
যশোদা আবেশ হয়ে অন্নপূর্ণা কয় ।
মা বলে ডাকরে বাছা এ দুঃখিনী মায় ।।
কোথা বাপ বিশ্বরূপ আয়রে কোলেতে ।
দেখিনা ও চাঁদমুখ বহু দিন হ’তে ।।
শান্ত্বনা করিছে শ্রীযশোমন্ত ঠাকুর ।
কি কহিলি কি গাইলি শুনিতে মধুর ।।
সুস্থিরা হইয়া পরে কহে ঠাকুরাণী ।
কি কহিনু কি গাইনু কিছুই না জানি ।।
দেখিলাম হেন সেই নন্দের নন্দন ।
মা মা বলিয়া মোরে পান করে স্তন ।।
সাধু বলে কৃষ্ণ গুন গাইতে গাইতে ।
ব্রজ ভাব হ’য়ে থাকে ভক্তের দেহেতে ।।
তোমার কি ভাব হয় বুঝিতে না পারি ।
কাহা কিছু না বলিয়া থাক চুপ করি ।।
এ সময় ঠাকুরাণীর একটি কুমার ।
কৃষ্ণদাস নাম বিশ্বরূপ অবতার ।।
সেই পুত্র করিতেন লালন পালন ।
কৃষ্ণ ধ্যান কৃষ্ণ জ্ঞান করে অনুক্ষণ ।।
যে দিন যশোদা ভাব আবেশ হইল ।
সেইদিন রামকান্ত বৈরাগী আসিল ।।
শুভ দিন বেলা এক প্রহর সময় ।
দেবী চিড়া বানিবারে ঢেঁকিশালে যায় ।।