Page: 091

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ৯১
হীরামনে মেরে হইয়াছে মহাপাপী।
রোগে ভোগে ক্রমে ক্রমে জনমিল হাপী।।
প্লীহা হ’য়ে ক্রমে হ’ল প্লীহা আমরেখী।
গণ্ডস্থল খসে প’ল জিহ্বা লকলকি।।
রস পৈত্তিকের রোগে হাতে ঘা হইয়ে।
আঙ্গুলি খসিয়া প’ড়ে গেল সে মরিয়ে।।
একেবারে ফকিরের হইল নির্বংশ।
বাতি দিতে না রহিল পরিবার ধ্বংস।।
কেহ কেহ বলে ভাই দেখরে সকল।
হীরামনে হিংসা করে ধ’রেছে কি ফল।।
কহিছে তারকচন্দ্র কবি রসরাজ।
সাধু হিংসা যে করে তাহার মুণ্ডে বাজ।।
দ্বিতীয় তরঙ্গ।
বন্দনা।
জয় জয় হরিচাঁদ জয় কৃষ্ণদাস।
জয় শ্রীবৈষ্ণব দাস জয় গৌরী-দাস।।
জয় শ্রীস্বরূপদাস পঞ্চ সহোদর।
পতিতপাবন হেতু হৈলা অবতার।।
জয় জয় গুরুচাঁদ জয় হীরামন।
জয় শ্রীগোলকচন্দ্র জয় শ্রীলোচন।।
জয় জয় দশরথ জয় মৃত্যুঞ্জয়।
জয় জয় মহানন্দ প্রেমানন্দ ময়।।
জয় নাটু জয় ব্রজ জয় বিশ্বনাথ।
নিজ দাস করি মোরে কর আত্মসাৎ।।
মহাসংকীর্ত্তনে শমনাবির্ভাব।
পয়ার।
ঠাকুরের আগমন রাউৎখামারে।
হরি সংকীর্তন হয় প্রতি ঘরে ঘরে।।
প্রভু সঙ্গে ফিরে ভক্ত সকল সময়।
হাসে কাঁদে নাচে গায় প্রফুল্ল হৃদয়।।
ওঢ়াকাঁদি হ’তে যান রাউৎখামার।
মাস পক্ষ সপ্তাহ থাকিয়া যান ঘর।।
প্রভু অল্প সময় থাকেন নিজ ঘর।
বেশী থাকে মল্লকাঁদি রাউৎখামার।।
মল্লকাঁদি মৃত্যুঞ্জয় ভক্ত শিরোমণি।
কাশীশ্বরী নাম ধরে তাহার গৃহিণী।।
তাহার সেবায় বাধ্য প্রভু অহর্নিশি।
প্রভু সেবা কার্য করে যেন সেবাদাসী।।
দুই তিন দিন কিংবা সপ্তাহ পর্যন্ত।
মৃত্যুঞ্জয় ভবনে থাকেন শান্তি-কান্ত।।
মল্লকাঁদি রাউৎখামার দুই গ্রামে।
থাকিতেন যতদিন সদামত্ত প্রেমে।।
যে দিন থাকিতেন প্রভু যাহার আলয়।
তাহার হইত চিত্ত প্রেমানন্দময়।।
আন কথা আন শব্দ না ছিল কেবল।
ঘরে ঘরে পরস্পরে সুধা হরিবোল।।
কৃষিকার্য কৃষকেরা করে দলে দলে।
সতত সবাই মুখে হরি হরি বলে।।
গৃহকার্য সমাধা করিত দিবসেতে।
প্রভুর নিকট যেত সন্ধ্যার অগ্রেতে।।
যে গৃহেতে ঠাকুরের ভোজন হইত।
হইত লোকের ঘটা দুই তিন শত।।
কৃষ্ণকথা হরিনাম সংকীর্তন রঙ্গে।
সারারাত্রি কাটাইত ঠাকুরের সঙ্গে।।
এক ঠাই হ’য়ে লোক দুই তিন শত।
নাম সংকীর্তন রঙ্গে রাত্রি কাটাইত।।
এই মত নাম গান হইত যে স্থান।
কেমনে যামিনী গত না থাকিত জ্ঞান।।
কখন হইত ভানু উদিত গগণে।
ভাবে মত্ত তাহা না জানিত কোন জনে।।
খেয়েছে কি না খেয়েছে তাহা মনে নাই।
চৈতন্য হইয়া বলে দেও দেও খাই।।
সময় সময় হেন হইত উতলা।
কেহ বলে ভাইরে ঘুচিল ভব জ্বালা।।