Page: 092

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ৯২
কেহ বলে পেয়েছিরে মনের মানুষ।
কেহ বা হুঁশেতে বলে কেহ বা বিহুঁশ।।
গড়াগড়ি পড়াপড়ি জড়াজড়ি হয়।
কেহ কার গায় পড়ে কেহ বা ধরায়।।
ঢলাঢলি ফেলাফেলি কোলাকোলি হয়।
ধরাধরি করি কেহ কাহারে ফেলায়।।
কে বলে পড়িয়াছি আর উঠা নাই।
পড়িয়াছি ভব কূপে তুলে নেরে ভাই।।
কেহ বলে কি শুনালি কহিলি কিরূপ।
হরি প্রেম বাজারে কি আছে ভবকূপ।।
কেহ বলে কি কহিলি হারাইলি দিশে।
এসেছে দয়াল হরি ভব কূপ কিসে।।
বীররসে কেহ করে বীরত্ব প্রকাশ।
কেহ বলে শমনের লেগেছে তরাস।।
কেহ বলে ওরে ভাই আমি যে শমন।
মম ত্রাস নাই তার সার্থক জীবন।।
কেহ বা প্রলাপ করে হইয়া পুলক।
কেহ বলে কিসে তোর জনম সার্থক।।
এতবলি কেহ ধরে শমনের চুল।
আজরে শমন তোরে করিব নির্মূল।।
সে জন কহিছে ভাই মেরনা আমারে।
কি দোষ করেছি আমি তোদের গোচরে।।
যে জন করয় পাপ তারে দেই সাজা।
পবিত্র চরিত্র যার তারে করি পূজা।।
কোন জন বলে জম কি কহিলি কথা।
পতিতপাবন এল পাপ আছে কোথা।।
তুই না করিতি যম পাপীর তাড়ন।
তেঁই তোরে বেঁধেছিল লঙ্কার রাবণ।।
রাবণ মারিয়া তোরে যে করে উদ্ধার।
সেই প্রভু হরিচাঁদ দয়াল অবতার।।
যে হরি করেছে তোর এত উপকার।
তার উপকার কিবা করিলি এবার।।
ওঢ়াকাঁদি হরিচাঁদ হয়েছে প্রকাশ।
পাপ তাপ দূরে গেল তিমির বিনাশ।।
হরিনামে জয়ডঙ্কা বেজেছে সংসারে।
এ দেশে পাতকী নাই নিবি তুই কারে।।
কহিছে শমন যেবা করে হরিনাম।
তাহার শ্রীপদে মম অনন্ত প্রণাম।।
গিয়াছে আমার গর্ব মেরনারে ভাই।
কি দোষ করেছি আমি হরিভক্ত ঠাই।।
এসেছে দয়াল হরি বলা’য়েছে হরি।
তোমাদের স্পর্শ হেতু হরিনাম করি।।
উপকারী হই আমি অপকারী কিসে।
হরিভক্ত হয় মানুষ আমার তরাসে।।
হরিভক্ত হয়ে কেন ধর মম চুল।
আমি হই হরিপদ ভজনের মূল।।
মম ডরে সবে করে সাধন ভজন।
হরিভক্ত রক্ষাকারী আমি একজন।।
যে জন প্রভুর ভক্ত যুগেতে যুগেতে।
অহৈতুকী হরিভক্ত বিনা আকাংখ্যাতে।।
ব্রহ্মত্ব ইন্দ্রত্ব পদ তুচ্ছ তার আগে।
আছি কিনা আছি আমি মনেও না জাগে।।
তার সাক্ষী শুন ভাই পাণ্ডব গীতায়।
কুন্তী যে প্রার্থনা করে শ্রীকৃষ্ণের পায়।।
শ্লোক।
স্বকর্ম্মফলনির্দ্দিষ্টাং যাং যাং যোনীং ব্রজাম্যহম্।
তস্যাং তস্যাং হৃষিকেশ ত্বয়ার্ভক্তির্দৃঢ়াস্তু মে।।
পয়ার।
কলিরাজ্যে পাপ কার্যে সবে হ’ত বশ।
আমার ভয়েতে কেহ না করে সাহস।।
আমি যদি রাজ কার্যে না থাকিরে ভাই।
হরিভক্ত চূর্ণ হ’ত পাপীদের ঠাই।।
এনেছি তুলসী দল মিশ্রিত চন্দন।
ছেড়ে দেরে পূজি হরিচাঁদের চরণ।।
হরিভক্ত সঙ্গে অদ্য হইব মিলন।
করিব মধুর হরি নাম সংকীর্তন।।
সবে বলে যম এসে কীর্তনে মাতিল।
শমনের প্রতি ভাই হরি হরি বলি।।
অপিচ বৃদ্ধার বাচনিক ও মৃত্যুকন্যার আবির্ভাব।
পয়ার।
এ হেন কীর্তন হয় মৃত্যুঞ্জয় বাড়ী।
দৈবে কোথা হতে এসে নাচে এক বুড়ি।।
সে কহিছে যমভগ্নি আমি মৃত্যু কন্যে।
এসেছি দয়াল বাবা দেখিবার জন্যে।।
কর্ণেতে কলম দিয়া যমের মহুরী।
সংকীর্তনে নৃত্য করে বলে হরি হরি।।