Page: 232

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ২৩২
যে হেন অন্তর জানে থাকেন অন্তরে।
অন্তরের ধন কেন রাখিবে অন্তরে।।
তাহারে অন্তরে রেখে যাইরে অন্তরে।
কেমন অন্তর মোর কি ভাবি অন্তরে।।
অন্তরে অন্তর জানি কহে তারকেরে।
দেখহে কেমন ভাব হ’য়েছে অন্তরে।।
একে বলে কর্মফাঁস বুঝহ অন্তরে।
কর্মফাঁসে পড়ি জীব ফিরে ঘুরে মরে।।
জ্ঞান অস্ত্রে কর্মফাঁস হয় কাটিবার।
জনম মরণ তার নাহি থাকে আর।।
এই সব প্রেম হ’ল পদ্মবন মাঝ।
কহিছে তারকচন্দ্র কবি রসরাজ।।
দ্বিতীয় তরঙ্গ।
বন্দনা।
জয় জয় হরিচাঁদ জয় কৃষ্ণদাস।
জয় শ্রী বৈষ্ণব দাস জয় গৌরী দাস।।
জয় শ্রী স্বরূপ দাস পঞ্চ সহোদর।
পতিত পাবন হেতু হৈলা অবতার।।
জয় জয় গুরুচাঁদ জয় হীরামন।
জয় শ্রী গোলোকচন্দ্র জয় শ্রী লোচন।।
জয় জয় দশরথ জয় মৃত্যুঞ্জয়।
জয় জয় মহানন্দ প্রেমানন্দময়।।
জয় নাটু জয় ব্রজ জয় বিশ্বনাথ।
নিজ দাস করি মোরে কর আত্মসাৎ।।
স্বামী মহানন্দ পাগলের লীলা।
পয়ার।
বড় পাগল বলিয়া খ্যাতি শ্রীগোলোক।
যে কালে ভূলোক ছাড়ি গেলেন গোলোক।।
গোলোকের অঙ্গ হ’তে উঠে এক জ্যোতি।
জ্যোতির সহিত এক উঠিল শকতি।।
ধাইয়া উঠিল জ্যোতি গগন মণ্ডলে।
নামিতে লাগিল জ্যোতি দেখিল সকলে।।
জয়পুর তারকের বাড়ী দেহত্যাগ।
এ সময় তারকের কোলে মহাভাগ।।
সবে দেখে সেই জ্যোতি নিম্নগামী হয়।
দেখিতে দেখিতে জ্যোতি হ’য়ে গেল লয়।।
তারক দেখিল জ্যোতি পূর্বমুখ হ’ল।
নারিকেলবাড়ী গিয়া পতিত হইল।।
মহানন্দ শ্রীঅঙ্গেতে মিশিল সে জ্যোতি।
ছোট পাগল বলিয়া হ’ল তাঁর খ্যাতি।।
যেই দিন মহানন্দ করিল শ্রবণ।
করিল গোলোকচাঁদ লীলা সম্বরণ।।
শ্রবণেতে মহানন্দ নিরানন্দ চিত।
ঠিক না করিতে পারে কি কার্য উচিৎ।।
হইল উন্মনা যেন পাগলের ন্যায়।
হইয়া বিস্মৃতি ভাব ইতি উতি ধায়।।
ঘূর্ণবায়ু মত সদা করেন ভ্রমণ।
যেখানে যেখানে পাগলের আগমন।।
ভ্রমি সব ঘরে ঘরে করেন তালাস।
খুঁজিয়া না পেয়ে ক্রমে বাড়ে হা হুতাশ।।
অবশেষে করিলেন ফুকুরা গমন।
মধুমতী নদী কূলে ঠেকিল তখন।।
পাগলের বিরহেতে দহিতেছে কায়।
নদীজল দেখে হ’ল প্রফুল্ল হৃদয়।।
জ্বালা জুড়াইতে জলে ঝাঁপ দিয়া পড়ে।
দিল ঝাঁপ পেয়ে তাপ জল গেল সরে।।
নদী মধ্যে যতদূর হয় অগ্রসর।
জল শুষ্ক হ’য়ে যায় তপ্ত কলেবর।।
দেহ হ’তে দুই পার্শ্বে আড়ে পরিসর।
দুই হাত দেড় হাত জল দূরতর।।
আছাড়িয়া করে সদা হস্ত আস্ফালন।
জলস্তম্ভ মত উর্দ্ধে ধুম উদ্গীরণ।।
হেনকালে মূর্তিমন্ত হইয়া গোঁসাই।
গোলোক পাগল এসে দাঁড়ায় সে ঠাই।।
বলে বাপ ছাড় তাপ আমি যাই নাই।
জ্যোতি হয়ে তোর দেহে নিয়াছিরে ঠাই।।