Page: 134

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৩৪

খনার বচন আছে সাপ স্বপ্ন পোনা।
দেখিয়া যে না ফুকারে মুনি সেই জনা।।
অসম্ভব দেখিলে না কহে বিজ্ঞজনে।
মনের মনন কথা থাক মনে মনে।।
কি শুনিবা অধিক জানা’ব কিবা আর।
আজ কোন মহাভাগ হইল উদ্ধার।।
শুনিয়াছ ভারত পুরাণ রামায়ণ।
শাপ ভ্রষ্ট ভবে জন্মে কত মহাজন।।
কোন মহাপুরুষের শাপে কোন জন।
স্থানভ্রষ্ট হ’য়ে থাকে পর্বত কানন।।
যক্ষমুনি শাপে গন্ধকালী ভবে এসে।
কুম্ভিরিণী মুক্তি পেল হনুমান স্পর্শে।।
অদ্য কোন মহাভাগ হইল উদ্ধার।
বহিরাংগ লোক মাঝে না কর প্রচার।।
মহাপ্রভু কহিলেন গোলোকের স্থানে।
এ সময় যাহারা ছিলেন সন্নিধানে।।
গোস্বামীর পদ ধরি তাহারা জিজ্ঞাসে।
এড়াইতে না পারিয়া গোস্বামী প্রকাশে।।
ত্রেতাযুগে সূর্যবংশে রাজা অযোধ্যায়।
ব্রাহ্মণের পাদোদক ভক্তি করে খায়।।
একদিন ভগবান তারে ছলিবারে।
ব্রাহ্মণ বেশেতে যান ত্রিশঙ্কুর দ্বারে।।
কুষ্ঠাব্যাধিগ্রস্থ বিপ্র হ’লেন কানাই।
ভাগবতে দ্বাদশ প্রস্তাবে আছে তাই।।
ব্রাহ্মণের পাদোদক হাতে ধরি নিল।
তার মধ্যে ক্লেদ কীট দেখিতে পাইল।।
ঘৃণা করি না খাইল থুইল মাথায়।
সেই অপরাধে সর্প যোনী প্রাপ্ত হয়।।
সেই জন্য কৃষ্ণপদ পাইল মাথায়।
প্রভু কৃষ্ণ ব্রজে কালীনাগ কালীদয়।।
না চিনিয়া ভগবানে করিল দংশন।
মস্তকে চরণ দিল প্রভু জনার্দন।।
অদ্যাবধি মস্তকেতে প্রভু পদচিহ্ন।
যদ্যপি সে সর্প তবু ত্রিভুবন মান্য।।
কালীনাগ কৃষ্ণপদ করিয়া ধারণ।
বলে প্রভু তোমার যে রাতুল চরণ।।
ভাবিয়া না পায় পদ ব্রহ্মা পঞ্চানন।
পদ লাগি শিবা করে শ্মশানে ভ্রমণ।।
সেই পদে বিষদন্তে দংশিলাম আমি।
এ পাপেতে হ’তে হয় বিষ্ঠা কণ্ডু কৃমি।।
দিয়াছ অভয় পদ বাঞ্ছা নাহি আর।
কত সুখ পাইতাম হ’লে নরাকার।।
ওহে প্রভু নরবপু যদি পাইতাম।
মনো সাধ মিটাইয়া পদ সেবিতাম।।
কবে হ’বে হেন ভাগ্য তুমি সানুকুল।
শুনিয়াছি নরবপু ভজনের মূল।।
এই অপরাধ প্রভু আমার ঘুচাও।
দয়া করি ওহে হরি নরবপু দেও।।
তারে বর দিলে সেই নররূপ হরি।
এর পর শ্রেষ্ঠলীলা যে সময় করি।।
জাতিসর্প খল দংশী অদ্য তাতে পাপ।
পরজন্মে আবার হইতে হবে সাপ।।
গুপ্তভাবে থেক গিয়া বিলে পদ্মবনে।
পিতা যশোমন্ত গৃহে জন্মিবো যখনে।।
রুদ্র অংশে জনমিবে আমার সেবক।
পরম ভকত সেই নামেতে গোলোক।।
যেদিন হইবে দেখা তাহার সঙ্গেতে।
বিষ্ণুলোকে যা’বে সুখে চ’ড়ে পুষ্পরথে।।
বিষ্ণু পরিষদ হ’বে বলিলাম তাই।
পাইবা সালোক্য মুক্তি একলোক ঠাই।।
সেই কালীয়ার প্রাপ্তি হ’ল বিষ্ণুলোক।
কারু কাছে না কহিও বাপরে গোলোক।।
এই কথা যে সময় শুনিল গোলোক।
নিভৃতে বলিল প্রভু শুনিল তারক।।
দশরথ তাহা জানি লিখি পাঠাইল।
সে লেখা দেখিয়া তাহা তারক রচিল।।


ভক্তা নায়েরীর মহোৎসব।

পয়ার।

নায়েরী নামেতে নারী কলাতলা বাস।
পরমা বৈষ্ণবী দেবী হরিপদে আশ।।
বালিকা বিধবা দেবী শুদ্ধা তদ্‌বধি।
সাধুসেবা কৃষ্ণসেবা করে নিরবধি।।
ঠাকুরের ভক্তগণ যায় তার বাসে।
ঠাকুরের নাম শুনে প্রেমানন্দে ভাসে।।
সবে বলে ওঢ়াকাঁদি স্বয়ং ভগবান।
তাহা শুনি নায়েরীর কেঁদে উঠে প্রাণ।।
ঠাকুরে দেখিব বলে চিত্ত উচাটন।
উদ্দেশ্যে করিল দেবী আত্মসমর্পণ।।