Page: 148

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৪৮
সপ্তম তরঙ্গ।
বন্দনা।
জয় জয় হরিচাঁদ জয় কৃষ্ণদাস।
জয় শ্রীবৈষ্ণব দাস জয় গৌরী-দাস।।
জয় শ্রীস্বরূপদাস পঞ্চ সহোদর।
পতিতপাবন হেতু হৈলা অবতার।।
জয় জয় গুরুচাঁদ জয় হীরামন।
জয় শ্রীগোলকচন্দ্র জয় শ্রীলোচন।।
জয় জয় দশরথ জয় মৃত্যুঞ্জয়।
জয় জয় মহানন্দ প্রেমানন্দ ময়।।
জয় নাটু জয় ব্রজ জয় বিশ্বনাথ।
নিজ দাস করি মোরে কর আত্মসাৎ।।
পাগলের বানরপ্রধানমূর্ত্তি ধারণ ও গঙ্গাদর্শন।
পয়ার।
পুনর্বার একদিন গঙ্গাচর্ণা যেতে।
চলিলেন পাগলাই করিতে করিতে।।
অক্রুর বিশ্বাস রামকুমার বিশ্বাস।
দুই জনে মিলে এল পাগলের পাশ।।
পাগল দেখিয়া বড় হৈল মন প্রীত।
উভয় উভয় পক্ষ প্রেমে পুলকিত।।
তিন জন একসঙ্গে যাইবে বলিয়া।
একত্রে হইল পার পাতগাতী গিয়া।।
পাগল নামিতে তীরে দেয় এক লম্ফ।
নদী জল উথলিল যেন ভূমিকম্প।।
কিনারে আসিতে বাকী দশ বার নল।
গভীর ভাগণ কূল স্রোত পাক জল।।
জল হ’তে চারি হাত উর্দ্ধেতে পাহাড়ি।
পাড়ির উপরে পড়ে বায়ু ভরে উড়ি।।
দেখিয়া সকল লোক মানিল বিস্ময়।
নাবিক কহিছে ইনি মনুষ্য’ত নয়।।
গোস্বামী দৌড়িয়া গেল গঙ্গাচর্ণা গ্রামে।
কার্তিকের গৃহেতে মাতিল হরিনামে।।
অক্রুর রামকুমার আইল পশ্চাতে।
শম্ভুনাথ ঘরে বসিলেন একত্রেতে।।
বলে ওহে শম্ভুনাথ পাগল কোথায়।
বার্তা শুনি শম্ভুনাথ অন্বেষণে যায়।।
এদিকে পাগল ভাবিছেন মনে মনে।
ভাল হ’ত কার্ত্তিক আনিলে সে দু’জনে।।
মন জানি ততক্ষণ কার্ত্তিক চলিল।
তাড়াতাড়ি করি দোঁহে ডাকিয়া আনিল।।
তাঁহারা আসিয়া রাইচরণের ঘরে।
প্রেমানন্দে মেতে দোঁহে হরিনাম করে।।
পাগল করিছে নাম তাহা শুনিতেছে।
পাগলের সঙ্গে কার্তিকের ভার্যা আছে।।
মৃদুস্বরে হরি বলে পাগলের সঙ্গে।
কার্ত্তিক ভাসিয়া যায় প্রেমের তরঙ্গে।।
না এল বিশ্বাসদ্বয় পাগল ছুটিল।
গিয়া রাইচরণের ঘরেতে উঠিল।।
দুই বিশ্বাসেরে আনি মদনের ঘরে।
পাগল বাহিরে গিয়া হরিনাম করে।।
(এক শব্দ নাই) দুই পুত্র চাঁদ ধতুরাম।
ধতুরামের পুত্রের ঠাকুরদাস নাম।।
তার পুত্র রামনিধি ভকত সুজন।
অতি শুদ্ধ মতি তার তিনটি নন্দন।।
জ্যেষ্ঠ পুত্র মোহন মধ্যম শ্রীমদন।
সব ছোট বনমালী বৈষ্ণব লক্ষণ।।
মদনের ঘরে বসি আর আর লোক।
গৃহের বাহিরে ঘোরে গোস্বামী গোলোক।।
মদনের ঘরে রাইচরণের ঘরে।
বায়ু বেগে দুই বাড়ী যায় আসে ঘুরে।।
ঘর ঘেরি বাড়ী ঘেরি দেয় ঘন পাক।
চক্রাকারে ঘুরে যেন কুম্ভকার চাক।।
তাহাতে লোকের ভিড় হইল অধিক।
মাঝে মাঝে সঙ্গে সঙ্গে ঘুরেছে কার্ত্তিক।।
কার্তিকের বাড়ী বাল্য বৃদ্ধ যুবা যত।
সব নাম সংকীর্তনে হ’য়েছে উন্মত্ত।।
রাইচরণের বাড়ী যতলোক ছিল।
দিশেহারা মাতোয়ারা কীর্তনে মাতিল।।
রজনী মহিমা বনমালী প্রামাণিক।
বৃন্দাবন নিবারণ প্রেমেতে প্রেমিক।।
রাইচরণের ঘরে মদনের ঘরে।
বহুলোক মেশামেশি ভাসে প্রেমনীরে।।