Page: 126

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১২৬

অক্রুর বালার ভার্যা শুনে চমকিতা।
আমি কি করিব পাক ভয় হই ভীতা।।
ভয় ভীতা শ্রদ্ধান্বিতা ভক্তির সহিতে।
পাক করি ঠাকুরে বলিল যোড়হাতে।।
সেবায় বসিল প্রভু ভক্তগণ ল’য়ে।
প্রেমানন্দে বুদ্ধিমন্ত বেড়ায় নাচিয়ে।।
স্ত্রীর সঙ্গে অক্রুর করে পরিবেশন।
ভক্ত সঙ্গে মহাপ্রভু করেন ভোজন।।
ভোজনান্তে মহাপ্রভু করে আচমন।
সভাকরি বসিলেন ল’য়ে ভক্তগণ।।
গিরি কীর্তনিয়া আর মথুর দু’জনে।
গোবিন্দ মতুয়া আদি বালারা সগণে।।
শ্রীরামসুন্দর আর গুরুচাঁদ ঢালী।
ঠাকুর নিকটে সুখে বসিল সকলি।।
পাকের প্রশংসা আর মৎস্য বেগুন।
ভোজনান্তে সবে প্রকাশিছে তার গুণ।।
সুন্দর বেগুন আর মৎস্যের আস্বাদন।
হয় নাই হবে নাক এমন সুস্বাদন।।
ঠাকুর জিজ্ঞাসা করে বুদ্ধিমন্ত ঠাই।
এ বেগুন কোথায় পাইলে বল তাই।।
বুদ্ধিমন্ত আদ্যোপান্ত কহে বিবরণ।
শুনে রোমাঞ্চিত সব ভক্তের গণ।।
কেহ কেহ কাঁদে প্রেমে গদ গদ হ’য়ে।
কেহ কাঁদে ঠাকুরের চরণে পড়িয়ে।।
কেহ কেহ কাঁদে প্রেমে গড়াগড়ি দিয়ে।
প্রেমের বন্যায় সবে চলিল ভাসিয়ে।।
কেহ কেহ বুদ্ধিমন্তে ধরে দেয় কোল।
প্রেমাস্ফুট শব্দে কেহ বলে হরিবোল।।
অই প্রেমে উঠে গেল কীর্তনের ধ্বনি।
প্রেমের তরঙ্গে ভাসে ভক্ত শিরোমণি।।
নাহি লোক নিন্দা ভয় অলৌকিক কাজ।
রচিল তারকচন্দ্র কবি রসরাজ।।


মাচকাঁদি গ্রামে প্রভুর গমন।

পয়ার।

মাচকাঁদি গ্রামে শ্রীশঙ্কর বালা নাম।
পঞ্চ পুত্র তাঁহার সকলে গুণধাম।।
লক্ষ্মীদেবী গর্ভজাত তারা পঞ্চ ভাই।
যেমনি পাণ্ডব পঞ্চ ঠিক যেন তাই।।
জ্যেষ্ঠ শ্রীউদয় চাঁদ ভার্যা গুণমণি।
মধ্যম শ্রীজয়চাঁদ আনন্দা রমণী।।
নোয়া হরানন্দ বালা নারী রসবতী।
সেজে রামকুমার কামনা নামে সতী।।
কনিষ্ঠ শ্রীব্রজনাথ বালা শিষ্ঠাচারী।
তাহার গৃহিণী দেবী বসন্ত কুমারী।।
তিলছড়া বংশী গা’ন তাহার দুহিতা।
সাধ্বী সতী পতিব্রতা রূপ গুণান্বিতা।।
পঞ্চভাই প্রেমে মত্ত ঠাকুরের ভাবে।
ঠাকুরের নিকটেতে আসে যায় সবে।।
হরিনামে মাতোয়ারা নাহি অবসর।
হাতে কাম মুখে নাম করে নিরন্তর।।
সন্ধ্যা হ’লে গৃহকার্য করি সমাপন।
সবে মিলে বসে করে নাম সংকীর্তন।।
ঠাকুরের আজ্ঞাবহ থাকে সর্বক্ষণ।
পঞ্চভাই এভাবে করে কাল যাপন।।
একদিন হরিচাঁদ আনিব বলিয়া।
জয়চাঁদ কহে ঠাকুরের কাছে গিয়া।।
ব্রজনাথ ওঢ়াকাঁদি আসিল যখন।
ঠাকুর আছেন মম আছে নিমন্ত্রণ।।
কল্য নিমন্ত্রণ করে গেছে জয়চাঁদ।
অদ্য মোরে নিতে আসিয়াছে ব্রজনাথ।।
ব্রজনাথ সঙ্গে আমি মাচকাঁদি যা’ব।
কে যাইবি আয় তথা হবে মহোৎসব।।
বলিতে বলিতে হরি বলিতে বলিতে।
চারি শত লোক সঙ্গে হৈল অকস্মাতে।।
ভক্ত হ’ল চারিশত হরি বলে মুখে।
নাচিয়া গাইয়া যায় পরম কৌতুকে।।
হরিনাম ধ্বনি ধেয়ে উঠিল গগনে।
সবে মিলে হরি বল বলেছে বদনে।।
প্রহরেক করে সবে নর্তন কীর্তন।
ঠাকুর বলিল স্নান কর সর্বজন।।
স্নান করি ভক্তসব আসিয়া বসিল।
জল খা’ব বলে সবে কহিতে লাগিল।।
এক কাঠা ধান্য জাত চিঁড়ে আছে ঘরে।
লোক দেখি চিন্তান্বিত পড়িল ফাপরে।।
একা প্রভু আসিবেন বালাদের মন।
ভকত আসিবে সঙ্গে ঊর্ধ্ব বিশ জন।।
তাহাতে হইল ভক্ত এই চারিশত।
জল সেবা করিবারে সবার সম্মত।।