Page: 059

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ৫৯
লক্ষ্মীমাতা বলে মম বাসনা কি আর।
চিরদাসী অভিলাষী শ্রীপদ তোমার।।
ঐশ্বর্য প্রকাশ হল ভকত সমাজ।
রচিল তারকচন্দ্র কবি রসরাজ।।
ষষ্ঠ-তরঙ্গ।
বন্দনা।
জয় জয় হরিচাঁদ জয় কৃষ্ণদাস।
জয় শ্রীবৈষ্ণব দাস জয় গৌরী-দাস।।
জয় শ্রীস্বরূপদাস পঞ্চ সহোদর।
পতিতপাবন হেতু হৈলা অবতার।।
জয় জয় গুরুচাঁদ জয় হীরামন।
জয় শ্রীগোলকচন্দ্র জয় শ্রীলোচন।।
জয় জয় দশরথ জয় মৃত্যুঞ্জয়।
জয় জয় মহানন্দ প্রেমানন্দ ময়।।
জয় নাটু জয় ব্রজ জয় বিশ্বনাথ।
নিজ দাস করি মোরে কর আত্মসাৎ।।
ভক্তগণের মহাসংকীর্ত্তনোচ্ছাস।
পয়ার।
এইভাবে হরিচাঁদ করে ঠাকুরালী।
প্রভু-সঙ্গে ভক্ত সদা থাকে মেলা মেলি।।
ঐশ্বর্য্য প্রকাশি প্রভু আসিলেন বাসে।
লক্ষ্মীমাতা পদসেবা করিল হরিষে।।
রন্ধন করিয়া ভক্তগণে ডাক দিল।
ভক্তগণে হরি বলে ভোজনে বসিল।।
ঠাকুরাণী ডাক দিয়া রামচাঁদে বলে।
তিন চারি মাস বাপ কোথায় বেড়া’লে।।
তোমরা বেড়াও সদা ব’লে হরি বোল।
কোথায় পাইলে বল এ দ্রব্য সকল।।
রামচাঁদ বলে তুমি শুন লক্ষ্মীমাতা।
তোমার কৃপায় পাই আর পা’ব কোথা।।
প্রভু বলে রামচাঁদ বল তোর মাকে।
সর্ব্ব ফল ফলে এক কৃষ্ণকল্প বৃক্ষে।।
শূন্যে রহে কল্প বৃক্ষ ঈশ্বর ইচ্ছায়।
কল্পবৃক্ষ কৃষ্ণভক্তে কল্পনা করয়।।
কৃষ্ণপ্রেম রসিকের রসময় দেহে।
সে দেহের ছায়া সেই কল্পবৃক্ষে চাহে।।
মাতা বলে অর্থে আর নাহি প্রয়োজন।
জন্মে জন্মে চাই তব যুগল চরণ।।
শুনি সব ভক্তগণে বলে হরিবোল।
অর্থত্যাগী প্রেমোন্মত্ত ভাবের পাগল।।
প্রেম অনুরাগে সব ভকত জুটিল।
‘মতুয়া’ বলিয়া দেশে ঘোষণা হইল।।
মঙ্গল নাটুয়া বিশে পূর্ব্ব পারিষদ।
ওঢ়াকাঁদিবাসী পারিষদ রামচাঁদ।।
ভজরাম চৌধুরীর ছোট ভাই যেই।
ঠাকুরের ঐকান্তিক পারিষদ সেই।।
কুবের বৈরাগী রামকুমার ভকত।
প্রভুর ভকত সেই হয়েছে ব্যকত।।
গোবিন্দ মতুয়া আর স্বরূপ চৌধুরী।
প্রেমাবেশে ভাবে মেতে বলে হরি হরি।।
চুড়ামণি বুধই বৈরাগী দুই ভাই।
হরিচাঁদ পেয়ে আনন্দের সীমা নাই।।
জগবন্ধু বলে ডাক ছাড়িত যখন।
সুমেরুর চুড়া যেন হইত পতন।।
মঙ্গল যখন হরিকীর্ত্তন করিত।
সম্মুখেতে মহাপ্রভু বসিয়া থাকিত।।
মঙ্গলের নাসা অগ্রে কফ বাহিরিত।
প্রেমে অশ্রুপূর্ণ হয়ে বক্ষ ভেসে যেত।।
ক্ষণে দিত গড়াগড়ি ক্ষণে উঠে বসে।
ক্ষণে নেচে ভেসে যেত প্রেমসিন্ধু রসে।।
ক্ষণে বীর অবতার ক্ষণেক বিমর্ষ।
উত্তরাক্ষ রুদিত বিকট ভঙ্গি হাস্য।।
গাইতে গাইতে শ্লেষ্মা উঠিত মুখেতে।
ঘন মুখ ফিরাইত ডান বাম ভিতে।।
উর্দ্ধ অধঃ মুখ ঝাকি করতালি দেয়।
বালকেতে অগ্নিদন্ড যেমন ঘুরায়।।