Page: 016

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৬
প্রভু বলে তব নামে অবতার হ’ব ।
প্রণব ত্রিগুণ নাম শূদ্রেরে বিলা’ব ।।
এক হরি নাম মধ্যে গুণ দিয়া সব ।
নীচজনে করাইব পরম বৈষ্ণব ।।
বুদ্ধ বলে যদি প্রভু হও অবতার ।
এ দেশে থাকেনা যেন জাতির বিচার ।।
আর এক প্রশ্ন তার মধ্যেতে উদয় ।
সংক্ষেপে বলিব যাতে পুথি না বাড়ায় ।।
কুবের নামেতে জোলা জাতি সে যবন ।
পরম বৈষ্ণব রাম মন্ত্রে উপাসন ।
তাহার নন্দন হ’ল নামেতে নকিম ।
নিরবধি কৃষ্ণপ্রেম যাহার অসীম ।।
কুবের আরোপে থেকে কৃষ্ণরূপ দেখে ।
নকীম বুনায় তাঁত হরি বলে মুখে ।।
কুবের আরোপে গাঁথে কুসুমের হার ।
গলে দিবে সাজাইবে শ্যাম নটবর ।।
ভক্তিফুলে মনোসূতে হার গাঁথি নিল ।
সেই মালা ত্রিভঙ্গের গলে তুলে দিল ।।
চূড়ায় ঠেকিয়া হার নাহি পড়ে গলে ।
দিতে হার পুনর্ব্বার চূড়ায় ঠেকিলে ।।
নকীম আরোপে তাঁত বুনা’য়েছে হাতে ।
মুখে হরি বলে কৃষ্ণ দেখে আরোপেতে ।।
বাপের আরোপ দেখি নকীমের সুখ ।
বলে হাত আরো কিছু উপরে উঠুক ।।
দেখহ জোলার এই প্রেমভক্তি গুণ ।
কি করে তাহার কাছে স্বত্ত্বঃ রজঃ গুণ ।।
দারু ব্রহ্ম অবতার হ’ল যে সময় ।
কুবেরের কীর্ত্তি রাখিলেন এ ধরায় ।।
কুবেরের তোড়ানী খাইবে যেইজন ।
তার হ’বে দারু ব্রহ্ম রূপ দরশন ।।
আর এক প্রস্তাব যে আসিল তাহাতে ।
একদা নারদ মুনি গেল বৈকুন্ঠেতে ।।
বিষ্ণুর প্রসাদ মুনি খাইল তথায় ।
কৈলাসেতে আসি মুনি হইল উদয় ।।
শিবেরে বলেন মুনি হরষিত মন ।
অদ্য হৈনু শ্রীনাথের প্রসাদ ভাজন ।।
শিব বলে আমারে ত দিলেনা কিঞ্চিৎ ।
প্রভুর প্রসাদে মোরে করিলে বঞ্চিৎ ।।
নারদের নখাগ্রে প্রসাদ কণা ছিল ।
প্রেমভরে হরের বদনে তুলে দিল ।।
প্রেমে মত্ত হইলেন নারদ শঙ্কর ।
বঞ্চিতা হইয়া গৌরী করে আঙ্গীকার ।।
আমি যদি সাধ্বী নারী হই তব ঘরে ।
এ প্রসাদ বিলাইব বাজারে বাজারে ।।
তপস্যা করিল হরি বর দিতে এল ।
প্রসাদ বাজারে বিকি বর চেয়ে নিল ।।
শ্লোক।
কমলা রন্ধনাযুক্তা ভোজনে চ জনার্দ্দনঃ ।
কুক্কুরেণ মুখাদ্ভ্রষ্টা দেবানাং দুর্ল্লভামপি ।।
পয়ার।
বুদ্ধদেব বাসনা হইয়া গেল পূর্ণ ।
ঘরে ঘরে নীচ শূদ্র সবে হ’ল ধন্য ।।
এই মত দেখ নানা কারণ বশতঃ ।
গোকক বিহারী হ’ল যশোমন্ত সূত ।।
অন্নপূর্ণা ঠাকুরাণী ছিলেন শয়নে ।
কৃষ্ণ দাস পুত্র কোলে আনন্দিত মনে ।।
রাম-কৃষ্ণ মুখে বলে কোলে কৃষ্ণদাস ।
প্রভুর অগ্রজ যিনি ভুবনে প্রকাশ ।।
দ্বাপরেতে সংকর্ষণ যিনি বলরাম ।
আপনি অনন্ত শক্তি সুন্দর সুঠাম ।।
সেই অংশে বিশ্বরূপ গৌরাঙ্গ লীলায় ।
শচী গর্ভে জনমিল এসে নদিয়ায় ।।
গৃহত্যাগী অনুরাগী সন্নাসী হইল ।
পুত্র শোকে শচীমাতা কাঁদিয়া ফিরিল ।।
যদ্যপিও বিষ্ণু অংশে স্বয়ং অবতার ।
কেহ না শোধিতে পারে মাতৃ ঋণ ধার ।।
যখন গৌরাঙ্গ গেল মাকে তেয়াগিয়া ।
কড়ার দিলেন জন্ম লইব আসিয়া ।।
কিছু না বলিয়া বিশ্বরূপ উদাসীন ।
তার জন্য শচীমাতা কাঁদে রাত্রি দিন ।।
সে কারণ মাতৃসেবা অপরাধ ছিল ।
সেই ঋণ শোধিবারে জনম লভিল ।।
সয়ং এর অবতার হয় যেই কালে ।
আর আর অবতার তাতে এসে মিলে ।।
যিনি ছিল বিশ্বরূপ গৌরাঙ্গ লীলায় ।
তিনি কৃষ্ণদাস যশোমন্ত পুত্র হয় ।।
একমাত্র পুত্র নববর্ষ কৃষ্ণদাস ।
এক পুত্রে সুখী মাতা নাহি অন্য আশ ।।