Page: 159

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৫৯

কলেরা বলেছে বেটা শীঘ্র যারে উঠে।
চিরকাল অধিকার মোর এই ভিটে।।
প্রভু বলে এ ভিটা ছাড়িব কি কারণ।
মরি কিংবা মারি তোরে এই মোর পণ।।
আমি যদি মরি তবে অধিকার তোর।
তোরে যদি মারি তবে অধিকার মোর।।
ভিটা ঘিরি ওলাউঠা ঘুরিয়া বেড়ায়।
পূর্ব মুখ প্রভু বৈসে আনন্দ হৃদয়।।
সম্মুখে আসিল যদি ঘুরে তিন পাক।
পাগল কহিছে তোর ঘুচাইব জাঁক।।
থাক থাক ওরে দুষ্ট আর যাবি কোথা।
একটানে আমি তোর ছিঁড়ে নিব মাথা।।
পাগলের সম্মুখেতে ঝাউবন ছিল।
লম্ফ দিয়া পড়ি তিন গাছ উপাড়িল।।
সেই গাছ ধরি বেগে ধাইয়া চলিল।
ডঙ্কা দেখি শঙ্কা করি ওলাউঠা গেল।।
পাগল বলেন পালাইয়া যাস কোথা।
আমাকে কি বলে যাস বল সেই কথা।।
ওলাউঠা বলে আমি তোমার সাক্ষাতে।
যতদিন আমি আছি এই সংসারেতে।।
ততদিন আসিব না এই অধিকারে।
সত্যতা কড়ার আমি দিলাম তোমারে।।
এ অধ্যায় শুনিলে ঘুচিবে ব্যাধি ভয়।
ধন পুত্র যশ প্রাপ্ত আয়ু বৃদ্ধি হয়।।
হরিচাঁদ পদযুগ্ম যোগে যোগে ভাবি।
রচিল তারকচন্দ্র সরকার কবি।।


মহাপ্রভুর সঙ্গে পাগলের করণ যুদ্ধ।

ত্রিপদী।

গোস্বামী গোলোক, মাতাইল লোক
হরিচাঁদ নাম দিয়া।
মত্ত হরিনামে, সদা কাল ভ্রমে
ভকত ভবনে গিয়া।।
গিয়া সুর গ্রাম, করে হরিনাম
আড়ঙ্গ বৈরাগী ঘরে।
পাগলে দেখিয়া, মেয়েরা আসিয়া
আনন্দে রন্ধন করে।।
পাক হৈল সারা, আসিয়া মেয়েরা
গলে বস্ত্র দিয়া কয়।
হ’য়েছে রন্ধন, করুণ ভোজন
অন্ন জুড়াইয়া যায়।।
এমন সময়, শুনিবারে পায়
যুধিষ্ঠির রঙ্গ বাসে।
সিঙ্গা সাতপাড়, ঠাকুর তোমার
উদয় হ’লেন এসে।।
শুনিয়া পাগল, বলে হরিবোল
উৎকণ্ঠিত হ’য়ে উঠে।
আড়ঙ্গেরে কয়, যাইব তথায়
শীঘ্র লহ নৌকা বটে।।
নৌকা নাহি ঘাটে, পাগল নিকটে
আড়ঙ্গ বৈরাগী কয়।
কহিছে পাগল, ছাড় গণ্ডগোল
বিলম্ব নাহিক সয়।।
নাহি কিছু মানি, নৌকা দেহ আনি
ঠাকুর দেখিতে যাই।
না দেখে ঠাকুরে, মরিরে মরিরে
ত্বরায় তরণী চাই।।
যদি নাহি দেহ, তবে নিঃসন্দেহ
আমি দিব জলে ঝাঁপ।
তাতে যদি মরি, আমি পাব হরি
তোর হ’বে মহাপাপ।।
কি দিব তরণী, তরী একখানি
জলেতে ডুবান আছে।
ভাঙ্গা বড় নাও, তাতে যদি যাও
তবে দিতে পারি সেচে।।
দু’জনে হইলে, একেলা বাহিলে
একজন ফেলে জল।
তবে যাওয়া যায়, সেই ভাঙ্গা নায়
কর যদি এ কৌশল।।
মেয়েরা তখন, করিতে ভোজন
পাগলকে কেঁদে কয়।
পাগল কহিছে, ক্ষুধা কার আছে
তোর অন্ন কেবা খায়।।
মেয়েরা কাঁদিয়া, অন্ন দিল নিয়া
খেল মাত্র দুই গ্রাস।
রায়চাঁদে কয়, শীঘ্র আয় নায়
যদি দরশনে যা’স।।