Page: 119

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১১৯

আমি ত’ পাষণ্ডী নাহি ভকতি আমার।
তুমি’ত করুণানিধি আমি দুরাচার।।
পতিত পাবন নাম ধর দয়াময়।
এমন পতিত আর পাইবা কথায়।।
কোন যুগে পেয়েছ কি এমন পতিত।
মহাউদ্ধরণ নাম ধর কর হিত।।
অজামিলে উদ্ধারিলে সে হয় ব্রাহ্মণ।
পূর্বে তার ছিল কত সাধন ভজন।।
মাতৃসেবা পিতৃসেবা করিত সদায়।
বৈষ্ণব আচার ছিল সরল হৃদয়।।
মায়া নারী দিয়া তারে মোহে পুরন্দর।
সেই মায়া নারী সঙ্গে করে পাপাচার।।
নারায়ণ নাম ল’য়ে হইল উদ্ধার।
তাহাতে দয়াল নাম না হ’ল প্রচার।।
কলিকালে দয়াল অবতারে দুটি ভাই।
উদ্ধার করিলে প্রভু জগাই মাধাই।।
ব্রহ্ম বংশে অবতংশ জন্মালে দোহারে।
নাম ব্রহ্ম প্রচারিতে দস্যুবৃত্তি করে।।
না করে বৈষ্ণব নিন্দা পরস্ত্রী হরণ।
এ সকল পাপ না করিলে কদাচন।।
জোর জার করে খেত মারিয়া কাড়িয়া।
তাহা দোঁহে উদ্ধারিলে নাম ব্রহ্ম দিয়া।।
তোমাদের দয়াগুণ করিলে প্রচার।
তোমার হইতে হ’ল তাহারা উদ্ধার।।
উদ্ধারিলে হীরানটী প্রচারিলে ভক্তি।
দারুব্রহ্ম অবতারে, তারে কৈলে মুক্তি।।
ভক্তিহীন জ্ঞানহীন আমি পাপাচারী।
পশু হ’তে পশু গণ্য মিছা দেহ ধরি।।
ঠাকুর বলেন বাছা নহেত কপট।
আমার মত ঠাকুরে বহে তোর মোট।।
জগতের মোট বহি ঘুচাই সংকট।
দেরে মোট উঠাইয়া বহি তোর মোট।।
গোলোক বলিছে মোট দিব দয়াময়।
হেন শক্তি দেহ যদি তবে দেওয়া যায়।।
মোট যদি নিতে চাইলে বলিলে শ্রীমুখে।
তবে মোট নিতে হ’বে এই দায় ঠেকে।।
তুমিত’ করুণাময় এবে গেল বোঝা।
নিজশক্তি প্রকাশিয়া তুলে লও বোঝা।।
ঠাকুর বলেন ভাল ঠেকাইলি দায়।
নিলাম এ বোঝা তোর গা তুলিয়া বয়।।
গোলোকের দেহে প্রভু শক্তি সঞ্চারিল।
গেল রোগ সে গোলোক উঠিয়া বসিল।।
স্বেদ কম্প পুলকাশ্রু বহিতে লাগিল।
ঠাকুরের পদ ধরি স্তব আরম্ভিল।।
ভূভার হরণ জন্য তব অবতার।
এবার হরহে! হরি গোলোকের ভার।।
পাষণ্ড দলন কৈলে গৌর অবতারে।
পাপ শিরোচ্ছেদ কৈলে দয়া অস্ত্র ধেরে।।
চক্রধারী দয়া সুদর্শন চক্র ধরি।
ভূভার হরণ কর গোলোক উদ্ধারী।।
প্রতিজ্ঞা করেছ তুমি ভূভার হরিবা।
সাধু পরিত্রাণ আর দুষ্কৃতি নাশিবা।।

শ্লোক।

পরিত্রানায় সাধুনাং বিনাশয় চ দুষ্কৃতম্।
ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে।।

পয়ার।

এ তোমার স্বীয় কার্য না করিলে নয়।
যার যে স্বভাব তাহা খণ্ডন না যায়।।
মনে ভাবি হেন কর্ম না করিব আর।
স্বভাবে করায় কর্ম দোষ কি আমার।।
তব দয়া লীলাগুণ নামগুণ কত।
কে বর্ণিতে পারে তাহা অক্ষম অনন্ত।।
যা কিছু বর্ণনা করি বলিবারে চাই।
বর্ণনায় দোষ তার তুলনাই নাই।।
যদ্যপি ভর্ৎসনা করি তবু তুমি সাঁই।
জিহ্বা মন বাক্য তুমি গোলোক গোঁসাই।।
বিধি বিষ্ণু শিব তোমা চিনিতে না পারে।
বর্ণে হারে বর্ণেশ্বরী বাগীশ্বরী হারে।।
অনন্ত তোমার লীলা বুঝে শক্তি কার।
বিধি হর হারে আর মানব কি ছার।।
ভাগবতে শ্রীমুখেতে করেছ স্বীকার।
আমার যে লীলা তা আমার বোঝা ভার।।
ভাল হ’ল ব্যাধি হ’ল মঙ্গল লাগিয়া।
পাইনু পরম পদ সেই হেতু দিয়া।।
এই মত স্তুতি বাক্য বলিতে বলিতে।
বেলা অপরাহ্ণ হ’ল বিশুদ্ধ ভাবেতে।।
প্রভু বলে যা গোলোক যা এখন ঘরে।
ভক্তিগুণে বন্দী রহিলাম তোর তরে।।
গোলোক বলিছে আর নাহি দিব ছাড়ি’।
ভক্তি নাই দয়া করে চল মম বাড়ী।।