Page: 057

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ৫৭
ধর্ম কন্যা ধর্মে দিল ধর্মে নিল ধন।
ধর্মের নিকটে নাহি অধর্ম কখন।।
ধর্ম করিয়াছে কর্ম অধর্ম এ নয়।
কন্যাকে বলিলে চোর অধর্ম সঞ্চয়।।
আগে কন্যা বলি যারে করিলা বিশ্বাস।
এবে চোরা বলিলে বিশ্বাস ধর্ম নাশ।।
লক্ষ্মীদেবী থাকে সদা ধর্মের আশ্রয়।
ধর্মের সহিত লক্ষ্মী অর্থ সে যোগায়।।
এই ধন ছিল সেই লক্ষ্মীর গোচরে।
সেই লক্ষ্মী এই ধন দেখাইল তারে।।
সর্বান্তর্যামিনী লক্ষ্মী সব জানতে পারে।
যেনে সেই লক্ষ্মী কেন যান স্থানান্তরে।।
যবে টাকা ল’য়ে যায় লক্ষ্মী দৃষ্টি করে।
দেখে কেন সে লক্ষ্মী ধরিল না তারে।।
ধর্ম মাতা পিতা যার লক্ষ্মী নারায়ণ।
সে কেন পাবে না বল এ সামান্য ধন।।
কন্যা নিল টাকা তাত’ পরে লয় নাই।
তব মনে যাহা প্রিয়ে মম মনে তাই।।
ধন উপার্জন করে বসিয়া খাইতে।
দেখি মোরা ধন বিনে পাই কিনা খেতে।।
খেতে কি দেবে না কৃষ্ণ সৃষ্টি করে জীব।
এই ধন বিনা মোরা হব কি গরীব।।
কোথা হতে আসে ধন কোথা চলে যায়।
কেবা দেয় কেবা লয় কে চিনে তাহায়।।
এই ধন ফিরিতেছে সব ঘরে ঘরে।
কোথাকার ধন ইহা কেবা রক্ষা করে।।
ধনেশ কুবের ছিল কনক লঙ্কায়।
ধনচ্যুত করি তাকে রাবণ তাড়ায়।।
রাবণের গৃহে লক্ষ্মী করিত রন্ধন।
ইন্দ্র মালাকার অশ্ব রক্ষক শমন।।
বিষ্ণু অবতার রাম রাজার কুমার।
ভার্যাসহ বনবাসী চৌদ্দ বৎসর।।
কার লঙ্কা কার হ’ল কেবা নিল ধন।
কোথা সে ত্রিলোকজয়ী লঙ্কেশ রাবণ।।
রাজপুত্রবধূ রাজকন্যা সেই সীতা।
বৈকুণ্ঠ-ঈশ্বরী দেবী শ্রীরাম বণিতা।।
কোথা র’ল রাজ্য ধন কোথা র’ল পতি।
আজন্ম বনবাসিনী কতই দুর্গতি।।
যদি বলি ঈশ্বরের লীলা এ সকল।
সত্য কিন্তু কর্ম অনুসারে ফলে ফল।।
একই মানুষ সব একই শহরে।
একই ব্যবসা করে একই বাজারে।।
কেহ দুঃখী কেহ সুখী কেহ পরাধীন।
কেহ লক্ষপতি হয়, কার হয় ঋণ।।
অর্থে কিংবা স্বার্থ শুধু অনর্থের গোল।
কৃষ্ণপদ স্বার্থ ভেবে বল হরি বল।।
একদিন লক্ষ্মীমাতা বাক্যের প্রসঙ্গে।
মধুমাখা বাক্যে ঠাকুরকে বলে রঙ্গে।।
লক্ষ্মীমাতা বলে প্রভু নাহি কর কার্য।
পুত্র কন্যা জন্মিয়াছে নাহি কর গ্রাহ্য।।
ঠাকুরালী কর সদা ল’য়ে ভক্তগণ।
কেমনে চলিবে এদের ভরণ পোষণ।।
ইহাদের কি হইবে নাহি ভাব মনে।
আমি একা কি করিব তব দয়া বিনে।।
ঠাকুর বলেন আমি কি কার্য করিব।
যাহা করে জগবন্ধু গৃহে ব’সে রব।।
জমি ভূমি কৃষিকার্য কিছুই না মানি।
জনমে জনমে মাত্র গরুরাখা জানি।।
জমি জমা চাষ কার্য কিছু না করিব।
এইমত ঠাকুরালী করিয়া ফিরিব।।
দেখি ঈশ্বরের দয়া হয় কিনা হয়।
দেখি প্রভু মোরে খেতে, দেয় কিনা দেয়।।
ইহা বলি মহাপ্রভু ফিরিয়া ঘুরিয়া।
দুই তিন দিন ওঢ়াকাঁদিতে রহিয়া।।
নিজবাটী না আইসে রহে অন্য ঘর।
চারিদিন পরে গেল রাউৎখামার।।
রাউৎখামার রামচাঁদ বাড়ী যান।
রামচাঁদ প্রভুকে করেন হরিজ্ঞান।।
রাউৎখামার প্রভুর বিহার বিরাজ।
রচিল তারকচন্দ্র কবি রসরাজ।।
রাউৎখামার গ্রামে প্রভুত্ব প্রকাশ ও ভক্ত সঙ্গে নিজালয়ে গমন।
পয়ার।
আত্মা সমর্পিয়া ভক্তি করে রামচাঁদ।
ভক্তিতে হ’লেন বাধ্য প্রভু হরিচাঁদ।।
শ্রীবংশীবদন আর শ্রীরাম সুন্দর।
বাঁশীরাম কাশীরাম শ্রীরাম কিশোর।।
বালাদের বাড়ী দিন দুদিন থাকিল।
বালারা সগণ সহ মাতিয়া উঠিল।।