Page: 189

শ্রীশ্রীহরি লীলামৃতপৃষ্ঠা নং : ১৮৯
জন্মের সার্থক আমি কৃপার ভাজন।
গোঁসাই দিলেন লাথি ধন্য এ জীবন।।
অন্যলোকে লাথি ভেবে হ’য়েছে আকুল।
লাথি নহে মম পৃষ্ঠে আশীর্বাদ ফুল।।
তাহা শুনি গোস্বামীজী হাঁটিয়া চলিল।
মৃত্যুঞ্জয় তাহা শুনি নীরব হইল।।
হীরামন লীলা খেলা মহিমা অপার।
এ লীলা রচিল কবি রায় সরকার।।
হীরামন গোস্বামী কর্তৃক মৃন্ময়ী দুর্গাদেবীর স্তন্যপান
পয়ার
বেথুড়ী গ্রাম নিবাসী গোবিন্দ বিশ্বাস।
তাহার কনিষ্ঠ ভ্রাতা চৈতন্য বিশ্বাস।।
কৃষ্ণভক্ত শিরোমণি সাধু অতিশয়।
বৈষ্ণব সুবুদ্ধি, অতি নির্মল হৃদয়।।
করিতেন দুর্গোৎসব শরৎকালেতে।
আসিতেন হীরামন সে লীলা দেখিতে।।
বসিয়া দেখিত পূজা প্রণালী সকল।
তাহা দেখি নয়নে বহিত অশ্রুজল।।
ব্রাহ্মণেরা মণ্ডপের বাহির হইলে।
হীরামন উঠিতেন দুর্গা দুর্গা বলে।।
মা দুর্গা! মা দুর্গা! বলে ছাড়িতেন হাই।
হাসিয়া বলিত আমি মার কোলে যাই।।
এত বলি গোস্বামী মায়ের গলা ধরি।
বলে পুত্র কোলে কর ওগো মা শঙ্করী।।
এত বলি কোলে উঠিবারে আয়োজন।
হেনকালে এল তথা পূজক ব্রাহ্মণ।।
বলে ও পাগল ও কি করহ ওখানে।
যাইতে হয় না মার কোলেতে এখনে।।
এত শুনি প্রতিমার গলা ছেড়ে দিয়া।
চাহিয়া প্রতিমা পানে র’ল দাঁড়াইয়া।।
মৃদু মৃদু হাসে আর মৃদু ভাষে কয়।
মায়ের কোলেতে বলে যাওয়া নাহি যায়।।
মার সেবা অন্তে কিছু প্রসাদ লইব।
মায়েরক কোলেতে বসি স্তন্য দুগ্ধ পিব।।
তাহা না হইলে মোর আমি অভাজন।
মা কেন করে না দয়া না পিয়ায় স্তন।।
আমি যেন অভাজন মার দয়া কই।
কোন গুণে নাম ধরিয়াছে দয়াময়ী।।
এতেক বলিয়া পুনঃ যাইয়া সত্বরে।
বাম হস্ত দিয়া প্রতিমার গলা ধরে।।
ডান হস্ত প্রতিমার বক্ষঃপর দিয়া।
বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়া স্তন দেখেন টিপিয়া।।
আমাদের এই মাতা সেই মাতা হ’লে।
দেখিয়া চিনিত মোরে করিতেন কোলে।।
প্রভু রাম পূজিলেন দুঃখের সময়।
মাল্যবাণ পর্বতে মা হ’লেন উদয়।।
অকালে দেবীর পূজা ব্রহ্মা পুরোহিত।
পূজা নিল দেবী বড় হ’য়ে হরষিত।।
সংকল্পিত অষ্টোত্তর শত নীল পদ্ম।
শতদল পদ্মে পূজিলেন পাদপদ্ম।।
সেই দিন পদ্ম আনে তোর কোন বাবা।
সেই দিন গত এবে কেমনে চিনিবা।।
চৌকি দিতে লঙ্কাতে মা হ’য়ে উগ্রচণ্ডা।
রাবণের বাড়ী ছিলে হাতে ল’য়ে খাণ্ডা।।
বরাবর জানি তুই পাষাণীর মেয়ে।
লঙ্কা ছেড়ে দিয়াছিলি মুষ্ট্যাঘাত খেয়ে।।
দৌবারিণী কাজ নাই চিনিবি কেমনে।
এখনেতে দুধ খেতে দিবিনে দিবিনে।।
পাতালে মহীর বাড়ী ছিলি ভদ্রাকালী।
সে যে ছিল ত্রেতাযুগ এ যে কাল কলি।।
সংকল্প করিয়া প্রভু পূজিল তোমায়।
ছলনা করিলে তবু দুঃখের সময়।।
পাষাণীর গর্ভে জন্ম ধর্ম বরাবরি।
দুঃখের সময় কৈলি এক পদ্ম চুরি।।
সে যুগে দেখেছি তোর কাজ কর্ম যত।
প্রভুকে করিলি দয়া কাঁদাইয়া কত।।
পাষাণীর মেয়ে বলে যত নিন্দা করি।
মোরে ধিক শতধিক অপরাধ ভারি।।
যত সব পাষাণ তোমার পিতৃ জ্ঞাতি।
তাহারা ভাসিল জলে দুঃখে হ’য়ে সাথী।।
যদি কহ ব্রহ্মবাক্য নলের উপরে।
তথাপি সহায় হ’য়ে তারা ভাষে নীরে।।
তোমার যে জ্যেষ্ঠ ভাই মৈনাক নামেতে।
সমুদ্রে ডুবিয়াছিল ইন্দ্রের ভয়েতে।।